হাঁটা ব্যাপারটা যে কী রকম, ভুলে গিয়েছেন সুনীতা উইলিয়ামস। বিস্মৃত হয়েছেন জাগতিক আরও বিভিন্ন কিসিমের নিত্যকর্মের পদ্ধতি।
গত বছর ৫ জুন আট দিনের জন্য আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে থাকার পরিকল্পনা নিয়ে ৫৯ বছর বয়সি ভারতীয় বংশোদ্ভূত নভশ্চর সুনীতা এবং তাঁর সফর-সঙ্গী ৬২ বছরের ব্যারি উইলমোর পৃথিবী থেকে রওনা হন। আট দিনের জায়গায় কেটে গিয়েছে আট মাসের কাছাকাছি। প্রায়-মাধ্যাকর্ষণহীন স্থানে ২৪১ দিন ‘বন্দি’। সম্প্রতি ম্যাসাচুসেটসের নিডহ্যাম হাই স্কুলের পুরনো সহপাঠীদের সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্সে কথোপকথনের সময়ে সুনীতা বলেছেন, “অনেক দিন হয়ে গেল এখানে। সেই অর্থে শুইওনি, বসিওনি। কী ভাবে হাঁটতে হয়, সেটাই যেমন এখন মনে করার চেষ্টা করছি।”
পৃথিবীর কক্ষপথে ঘুরতে থাকা আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন একটি বসবাসযোগ্য কৃত্রিম উপগ্রহ। বিজ্ঞানীরা এখানে সীমিত সময়ের জন্য থেকে গবেষণা করেন। জায়গাটি প্রায় মাধ্যাকর্ষণহীন। এখানে পায়ের নীচে মাধ্যাকর্ষণ বলতে যা থাকে, সেটা যৎসামান্যই। যাকে বলা হয়ে থাকে ‘মাইক্রোগ্র্যাভিটি’। এখানে শোয়ার ব্যবস্থাও রয়েছে। কিন্তু যে হেতু প্রায় মাধ্যাকর্ষণহীন স্থান, তাই স্লিপিং-পডে শুলেও ঠিক (পৃথিবীর মতো) বিছানায় শোয়ার আরাম হয় না। হাঁটাচলা, বসার ক্ষেত্রেও একই সমস্যা। দীর্ঘদিন এমন জায়গায় থাকলে শরীরের কোষগুলিও কার্যত ভুলে যায় জীবনের এই অতি
সাধারণ অভ্যাস।
বোয়িং স্টারলাইনারের যানে চড়ে মহাকাশ স্টেশনে গিয়েছিলেন সুনীতারা। শূন্যে কিছুটা সাঁতরে সানন্দে সুনীতার সেখানে প্রবেশ করার দৃশ্য নাসার সৌজন্যে দেখেছে সমাজমাধ্যম। কিন্তু যাত্রার শুরু থেকেই মহাকাশযানটিতে সমস্যা দেখা দিয়েছিল। কিছুতেই মেরামতি না হওয়ায় গত সেপ্টেম্বরে সুনীতাদের ছাড়াই সেটি ফিরে এসেছে।
ইলন মাস্কের সংস্থা স্পেস এক্স-এর যানে তাঁদের পৃথিবীতে ফেরানোর পরিকল্পনা রয়েছে। তবে তা-ও নানা কারণে পিছিয়েছে। সব ঠিক থাকলে স্পেস এক্স-এর যানেই মার্চের শেষ বা এপ্রিলের শুরুতে ফিরবেন সুনীতারা।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)