Advertisement
E-Paper

সুইডেনে ধর্ষণের মামলা ফের শুরু, চাপে অ্যাসাঞ্জ

স্টকহলমে ২০১০-তে  সংস্থার এক সম্মেলনের শেষে দুই মহিলা ধর্ষণ এবং যৌন নিগ্রহের অভিযোগ আনেন অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে। ধর্ষণের অভিযোগ উড়িয়ে অ্যাসাঞ্জ জানিয়েছিলেন, তাঁদের সঙ্গে সম্মতিসাপেক্ষেই যৌন সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০১৯ ০৩:১১
উইকিলিকস প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ।

উইকিলিকস প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ।

ন’বছর আগেকার ধর্ষণের অভিযোগ নিয়ে ফের তদন্তের মুখে পড়তে চলেছেন উইকিলিকস প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ। সুইডেনের সেই ধর্ষণ মামলা দু’বছর আগে খারিজ হয়ে গিয়েছিল। এখানকার আইনজীবীরা তখন জানিয়েছিলেন, ইকুয়েডরের দূতাবাসে ঘাঁটি গেড়ে বসায় অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে মামলাটি আর এগোনো সম্ভব হচ্ছে না। কিন্তু সোমবার ‘পাবলিক প্রসিকিউশনস’-এর ডেপুটি ডিরেক্টর ইভা-মেরি পারসন জানিয়েছেন, ওই মামলাটি ফের শুরু হবে।

তাঁর কথায়, ‘‘অ্যাসাঞ্জ যে ধর্ষণ করেছিলেন, তা নিয়ে সন্দেহ করার মতো এখনও যথেষ্ট কারণ রয়েছে। এখন উনি ইকুয়েডরের দূতাবাসের বাইরে। তাই মামলার শর্ত পাল্টেছে। এখন সেই শর্তগুলো যে ভাবে দেখা হচ্ছে, তাতে ফের মামলা শুরু করা যেতে পারে।’’ এক নির্যাতিতার আইনজীবীর অনুরোধেই ফের মামলা শুরু করার তৎপরতা তৈরি হয়েছে বলে দাবি।

স্টকহলমে ২০১০-তে সংস্থার এক সম্মেলনের শেষে দুই মহিলা ধর্ষণ এবং যৌন নিগ্রহের অভিযোগ আনেন অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে। ধর্ষণের অভিযোগ উড়িয়ে অ্যাসাঞ্জ জানিয়েছিলেন, তাঁদের সঙ্গে সম্মতিসাপেক্ষেই যৌন সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল।

আপাতত লন্ডনের বেলমার্শ জেলে বন্দি রয়েছেন অ্যাসাঞ্জ। ৫০ সপ্তাহ কারাবাসের শাস্তি দেওয়া হয়েছে তাঁকে। জামিনের শর্ত ভঙ্গ করার অভিযোগে লন্ডনে ইকুয়েডরের দূতাবাস থেকে গত মাসে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। উইকিলিকস প্রতিষ্ঠাতা সে অভিযোগ উড়িয়ে দিলেও গ্রেফতারি এড়াতে পারেননি। ইকুয়েডরের দূতাবাসে আশ্রয় পাওয়ার পর থেকে সুইডেনে প্রত্যর্পণ হওয়ার সম্ভাবনা এড়িয়ে এসেছেন অ্যাসাঞ্জ।

কিন্তু এ বার ধর্ষণের মামলা ফের শুরু হওয়ার কথা ওঠায় তাঁর প্রত্যর্পণ নিয়ে তৈরি হয়েছে নতুন জটিলতা। কোন দেশে ফেরত পাঠানো হবে অ্যাসাঞ্জকে? আমেরিকা না সুইডেন? কারণ ২০১০ সালে উইকিলিকস যে সব গোপন মার্কিন কূটনৈতিক এবং সামরিক নথি ফাঁস করেছিল, সেই অভিযোগে আমেরিকাও অ্যাসাঞ্জকে হাতে পেতে চাইছে। মার্কিন কম্পিউটারে হস্তক্ষেপের অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। বিপুল পরিমাণ সরকারি গোপন নথি ফাঁসের দায়ে অন্তত পাঁচ বছর জেল হতে পারে অ্যাসাঞ্জের।

সুইডেন ধর্ষণের মামলা নিয়ে সক্রিয় হওয়ার পরে উইকিলিকস-এর তরফে আজ এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ‘এতে অ্যাসাঞ্জ নিজের ভাবমূর্তি স্বচ্ছ করার একটা সুযোগ পাবেন। এই মামলার পুনর্তদন্ত নিয়ে সুইডেনের উপরে ব্যাপক রাজনৈতিক চাপ তৈরি করা হয়েছে। মামলাটি ঘিরেও একই রকম রাজনৈতিক চাপ কাজ করেছে।’ অ্যাসাঞ্জের এক আইনজীবী বলেছেন, ‘‘এটা সুইডেনের পক্ষেই অস্বস্তিকর হবে। আমার আইনজীবী এই মামলা মিটিয়ে নিতে চেয়েছিলেন, কিন্তু আমেরিকা প্রত্যর্পণের আশঙ্কাও রয়েছে তাঁর।’’

সুইডেনের এই ঘোষণার পরে ইউরোপীয় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হবে অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে। ইভা-মেরি পারসনের বক্তব্য, অ্যাসাঞ্জের প্রত্যর্পণ নিয়ে লড়াইয়ে নেমেছে সুইডেন আর আমেরিকা। ব্রিটেন প্রশাসন ঠিক করুক, কোথায় পাঠানো হবে ৪৭ বছর বয়সি এই অস্ট্রেলীয় নাগরিককে। এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে ১৮ মাসের বেশি সময় লাগার কথা নয় বলে দাবি একটি সূত্রে। এক বিশেষজ্ঞের মতে, ‘‘আমেরিকার মামলাটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, সেটা কোনও আদালতই মানবে না। তবে অ্যাসাঞ্জ যুক্তি সাজাতে পারেন, মার্কিন জেলে তাঁর মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হতে পারে। রাজনৈতিক কেলেঙ্কারিতে তাঁর নাম যে ভাবে জড়িয়েছে, তার জন্য তিনি স্বচ্ছ বিচার না-ও পেতে পারেন— বলতে পারেন সেটাও।’’

Julian Assange Sweden Rape Case Wikileaks
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy