জুরিখে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে ‘সুইস বেঙ্গলি ফেস্টিভ্যাল’।
রসে রসনায় জীবন বাঙালির। সে শুধু মাছ-ভাত নয়। গোবিন্দভোগের রেণু ছড়ানো মোচার ঘণ্ট থেকে লাউ দিয়ে চিংড়ি, কাঁচকলার কোপ্তা থেকে কচি পাঁঠার ঝোল।
দেশ ছেড়ে প্রবাসে পাড়ি জমানো বঙ্গতনয়-তনয়ারা যে স্মৃতি উস্কানো উৎসবের ঝোঁকে রান্নাবাড়ি আর ভুরিভোজের দিকে ঝুঁকবেন, তাতে আর আশ্চর্যের কী? সুইৎজারল্যান্ডের জুরিখে ‘সুইস বেঙ্গলি ফেস্টিভ্যাল’-এ তাই গোড়াতেই ঠাঁই পেয়েছে মা-ঠাকুমাদের হাতের রান্না শেখার পাঠশালা আর দুই বাংলার স্বাদগন্ধে ভরা ফুড ফেস্টিভ্যাল।
আরও পড়ুন: রোজ দেড় হাজার ক্ষুধার্তের মুখে বিনামূল্যে খাবার তুলে দেন এই রেস্তোরাঁ মালিক
শুধুই কি রসনার রস? মনের মৌতাতের কী হবে?
সেই পাড়ার স্টেজে প্যাঁ-পোঁ করে যে মেয়েটা ‘আলো আমার আলো’ গেয়েছিল প্রথম বার আর ছেলেটা কাঁপা গলায়— ‘আজি এ প্রভাতে রবির কর’, তাদের ছেলেমেয়েরাই এ বার হারমোনিয়াম তবলা নিয়ে, পায়ে ঘুঙুর বেঁধে, হাতে ‘রূপসী বাংলা’ বা জয় গোস্বামীর কবিতার বই নিয়ে উঠে পড়বে মঞ্চে। আমন্ত্রিত গায়কদের নিয়ে বসবে গানের আসরও।
২০০৮ সালে হাতে গোনা কয়েক জন বাঙালি পেশাদারের মাটির টান থেকে জন্ম নিয়েছিল ‘স্পর্শন’ নামে যে অলাভজনক সংগঠন, যার একমাত্র উদ্দেশ্য ইউরোপে বসেও বাঙালি সংস্কৃতির চর্চা জাগরুক রাখা, তা-ই এখন ডালপালা মেলেছে। পুজো-পার্বণে টুকটাক অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে করতেই তারা বিছিয়ে বসেছে বহুবর্ণ এক উৎসবের আঁচল। তামাম সুইৎজারল্যান্ডের বাঙালিরা তো বটেই, স্বাগত সুইস নাগরিকেরাও। পড়শি অস্ট্রিয়া এবং জার্মানি থেকেও অতিথিরা আসছেন।
আরও পড়ুন: সবচেয়ে বেশি মদ্যপান করে বিশ্বের এই দশ দেশের মানুষ
সংস্কৃতির এই মিলন অঙ্গনে যেমন দেশের সুর আনবেন ইমন চক্রবর্তী বা শোভন গঙ্গোপাধ্যায়রা, পাশ্চাত্যের ঝঙ্কার তুলবে সুইস ব্লুগ্রাস ব্যান্ড ‘মালা অ্যান্ড ফ্রাইমুন’। বাংলার গাঁ থেকে দেশজ শিল্পীদের হাতে তৈরি নকশাদার ব্যাগ পৌঁছবে ‘মাহিজা’র হাত ধরে। ১ ও ২ সেপ্টেম্বর, দু’দিনের উৎসবে যদি কিছু অর্থাগম হয়, তা দিয়ে দেওয়া হবে বাংলাদেশের নোনা দক্ষিণে পরিচ্ছন্ন স্বাদুজল জোগানোর ‘জীবন পানি’ প্রকল্পে।
উৎসবের এই সবে পথ চলা শুরু। ভগীরথেরা বলছেন, এই অঙ্গন ধীরে ধীরে গোটা ইউরোপকে টেনে আনুক তাঁদের বঙ্গ-অঙ্গনে, এটুকুই খোয়াব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy