Advertisement
E-Paper

‘শিক্ষা দিতে’ হানা ট্রাম্পের

যুদ্ধ শুরু! রাসায়নিক অস্ত্রের পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র। সিরিয়ার হোমস প্রদেশের শায়রত বিমান ঘাঁটি লক্ষ করে আজ ভোররাতে লাগাতার ৫৯টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে আমেরিকা।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:৫০
হানাদার: টোমাহক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হচ্ছে মার্কিন যুদ্ধজাহাজ ইউএসএস রস থেকে। শুক্রবার ভোররাতে, ভূমধ্যসাগরে। রয়টার্স

হানাদার: টোমাহক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হচ্ছে মার্কিন যুদ্ধজাহাজ ইউএসএস রস থেকে। শুক্রবার ভোররাতে, ভূমধ্যসাগরে। রয়টার্স

যুদ্ধ শুরু! রাসায়নিক অস্ত্রের পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র।

সিরিয়ার হোমস প্রদেশের শায়রত বিমান ঘাঁটি লক্ষ করে আজ ভোররাতে লাগাতার ৫৯টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে আমেরিকা। বিদ্রোহী দমনের নামে চলতি সপ্তাহে এই ঘাঁটি থেকেই রাসায়নিক হামলার অভিযোগ উঠেছিল বাসার আল-আসাদ বাহিনীর বিরুদ্ধে। যার জেরে প্রাণ গিয়েছিল ২০ শিশু-সহ ৭০ জনের।

কালই এ নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। সাফ জানিয়েছিলেন, ইদলিব প্রদেশের খান শেইখুন শহরের নিরীহ নাগরিকদের উপর বিষাক্ত গ্যাস হামলার পর সব সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছে সিরিয়া। সেনা প্রত্যাঘাতের একটা ইঙ্গিতও দিয়ে রেখেছিল তাঁর ঘনিষ্ঠ মহল। কিন্তু সেই হামলা যে রাত ফুরনোর আগেই— আঁচ করতে পারেনি আসাদ বাহিনী।

আর যত ক্ষণে টের পাওয়া গেল, তত ক্ষণে ধুলোয় মিশে গিয়েছে বিমান ঘাঁটি। ভূমধ্যসাগরের মার্কিন যুদ্ধজাহাজ ইউএসএস পোর্টার এবং ইউএসএস রস থেকে এই টোমাহক ক্ষেপণাস্ত্রগুলি ছোড়া হয়েছে বলে দাবি পেন্টাগনের। তবে রাশিয়ার দাবি, এই হামলা তেমন জোরালো ছিল না। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের মুখপাত্র জানান, ৫৯টির মধ্যে মাত্র ২৩টি ক্ষেপণাস্ত্র এসে আছড়ে পড়ে ঘাঁটিতে। যদিও পেন্টাগনের পাল্টা দাবি, তাদের সব কটিই লক্ষ্যে পৌঁছেছে।

সরকারি ভাবে এই হামলায় কী ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা জানা যায়নি। তবে সিরীয় সংবাদমাধ্যমের দাবি, মারা গিয়েছে ৪ শিশু-সহ অন্তত ৯ জন। আহত কয়েক ডজন। স্থানীয় সূত্রের খবর, কাল মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র আছড়ে পড়ে ঘাঁটি লাগোয়া আল-হামরাত গ্রামেও। ফলে বেঘোরে মৃত্যু হয়েছে শিশু-সহ সাধারণ মানুযের।

কিন্তু হঠাৎ কেন এ ভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ল আমেরিকা? আজ বেলার দিকে দক্ষিণ ফ্লোরিডায় চিনা প্রেসিডেন্ট শি চিনফিংয়ের সঙ্গে বৈঠকে যোগ দিতে যাওয়ার আগে ট্রাম্প বলে যান, ‘‘আমার নির্দেশেই মার্কিন সেনা হামলা করেছে সিরিয়ায়। এ ছাড়া আর কোনও উপায় ছিল না। ওখানে যা হচ্ছে তা অপরাধ, কোনও ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। সিরিয়াকে শিক্ষা দিতেই আমাদের এই পদক্ষেপ।’’ রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে এ নিয়ে সওয়াল করেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালিও।

কিন্তু আমেরিকা হঠাৎ আগ বাড়িয়ে হামলা করল কেন? এই প্রশ্ন তুলেই আজ সরব হয়েছে রাশিয়া। আসাদ-বাহিনীর বিরুদ্ধে ওঠা রাসায়নিক হামলার কথাও মানতে নারাজ মস্কো। হোয়াইট হাউসে আসার আগে থেকেই ট্রাম্প যাঁর প্রশংসায় পঞ্চমুখ, মুখ খুলেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনও। তাঁর কথায়, ‘‘এ ভাবে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্রের উপর আগ্রাসনের নীতি নিয়ে আন্তর্জাতিক আইন ভেঙেছে ট্রাম্প প্রশাসন।’’

পেন্টাগন যদিও বলছে, রাশিয়াকে চটানো তাদের উদ্দেশ্য নয়। এই হামলা ‘যুদ্ধাপরাধী’ আসাদ বাহিনীকে শিক্ষা দিতে। কাল যেখানে হামলা হয়েছে, তার কাছাকাছি রুশ সেনা শিবিরও রয়েছে। আগে থেকেই তাদের হামলার খবর দিয়ে নিরাপদে সরে আসতে বলা হয়েছিল বলে দাবি করেছে পেন্টাগন।

পশ্চিমী দেশগুলির একটা বড় অংশ যদিও ট্রাম্পেরই পাশে দাঁড়িয়েছে দেখা গিয়েছে। যৌথ বিবৃতি দিয়ে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাসোঁয়া ওলাঁদ ও জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মের্কেল বলেন, ‘‘এর দায় পুরোপুরি আসাদের। ২০১৩ সালে দামাস্কাসের শহরতলি এলাকা গৌটায় রায়াসনিক হামলার পরেই সিরিয়ার উপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা বলেছিলাম। তা হয়নি বলেই আজ এই হাল।’’

ট্রাম্পের পাশে দাঁড়িয়েছে ইজরায়েলও। ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টাস্ক জানান, ‘বর্বর’ রাসায়নিক হামলার প্রেক্ষিতে এমন জবাবেরই দরকার ছিল। সিরিয়ার হাল ফেরাতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বরাবর আমেরিকার পাশে থাকবে বলেও আশ্বাস দেন তিনি।

Donald Trump Syria U.S. missiles
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy