পোস্টারগুলি দিয়েছে ইসলামিক এমিরেটস অফ আফগানিস্তান সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রক। গ্রাফিক — শৌভিক দেবনাথ।
সাদা হোর্ডিংয়ে গোটা গোটা হরফে লেখা কয়েকটি শব্দ—‘আপনাদের স্বাধীন জীবন মুবারক!’
কাবুল শহর। মূল রাস্তার পাশেই নতুন ওই হোর্ডিং। সেই পথ ধরে এগোলে পর পর এমন আরও অনেক হোর্ডিং, পোস্টার চোখে পড়তে থাকে। তার কোনওটায় লেখা, ‘দাসত্বের শেষ, স্বাধীনতার শুরু।’ কোনওটায় আবার বলা হয়েছে, ‘দেশের শক্তি আমরা। দেশ গড়বও আমরাই।’ গত ২৪ ঘণ্টায় কাবুল ছেয়ে গিয়েছে এই সব হোর্ডিং-ব্যানার-পোস্টারে। পোস্টারগুলি দিয়েছে ইসলামিক এমিরেটস অফ আফগানিস্তান সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রক। বার্তা স্পষ্ট, নতুন সরকার আসছে। আফগানদের স্বাধীনতার খেয়াল রাখবে। তাদের স্বাগত জানান।
ইসলামিক এমিরেটস অফ আফগানিস্তান তালিবান শাসিত আফগানিস্তানেরই নতুন নাম। প্রথম দফার তালিবান সরকারেরও এই নাম ছিল। সেই সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রক মানে তালিব সরকারেরই মন্ত্রক। যদিও আনুষ্ঠানিক ভাবে এখনও আফগানিস্তানে নতুন সরকার ঘোষণা করা হয়নি। সরকারি ভাবে ঘোষণা হয়নি মন্ত্রিসভারও। তবে মন্ত্রকের নামে পোস্টার কী ভাবে? তালিবানেরই একটি সূত্রে খবর, সরকার ঘোষণা না হলেও শুক্রবার সমস্ত তালিব নেতাই কাবুলে এসে পৌঁছেছেন। এমনকি বেশ কয়েকটি সংবাদ সংস্থা এমনও জানিয়ে দিয়েছে যে, মোল্লা বরাদরই আফগানিস্তানের নতুন সরকারের নেতৃত্ব দিতে চলেছেন। নতুন তালিবান সরকারের শীর্ষপদে থাকা বেশ কয়েকজনের নেতার নামও প্রকাশ করেছে সংবাদ সংস্থাগুলি। জানা গিয়েছে, তালিবান প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা ওমরের পুত্র মোল্লা মেহমুদ ইয়াকুবও সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকতে চলেছেন।
নতুন সরকার ঘোষণা করা না হলেও সরকারের নামে পড়েছে পোস্টার। তাতে মন্ত্রকের উল্লেখ রয়েছে। সেই মন্ত্রক আবার আফগানিস্তানের সংস্কৃতি মন্ত্রক। তালিবান শাসনে তালিবানি সংস্কৃতি নিয়েই যেখানে সবচেয়ে বেশি চর্চা, সেখানে সংস্কৃতি মন্ত্রক বার্তা দিচ্ছে স্বাধীন যাপনের! বলছে দাসত্ব শেষ হয়েছে। এমনকি একটি দেওয়াল লিখনে সম্মান এবং মর্যাদার কথাও বলা হয়েছে বলে দেখা গেল। সড়ক লাগোয়া সেই দেওয়াল লিখনের মূল বক্তব্য, ‘মর্যাদা এবং সম্মানরক্ষা আমাদের লক্ষ্য। নতুন সরকার দেশে স্থিতি ফিরিয়ে আনবে।’
ফলে প্রশ্ন উঠেছে, তবে কি সত্যিই অন্যরকম হতে চলেছে আফগানিস্তানের দ্বিতীয় দফার তালিবান শাসন? রাজধানী কাবুলে আফগানিস্তানের তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রকের হোর্ডিংগুলি অন্তত সেই ইঙ্গিতই দিচ্ছে ভেবে আশাবাদী আফগানদের একাংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy