Advertisement
০৫ মে ২০২৪

সাত বছর জেল খালেদা-পুত্রের

দুর্নীতি মামলায় প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান ও তার এক ব্যবসায়ী বন্ধুকে ৭ বছরের কারাবাস ও ২০ কোটি টাকা করে জরিমানার আদেশ দিয়েছে বাংলাদেশের হাইকোর্ট। রায়ে বলা হয়েছে, খালেদা-পুত্র ‘রাজনৈতিক ঢাল’ ব্যবহার করে সচেতন ভাবে আর্থিক অপরাধে জড়িয়েছেন।

তারেক রহমান

তারেক রহমান

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঢাকা শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০১৬ ০৩:০০
Share: Save:

দুর্নীতি মামলায় প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান ও তার এক ব্যবসায়ী বন্ধুকে ৭ বছরের কারাবাস ও ২০ কোটি টাকা করে জরিমানার আদেশ দিয়েছে বাংলাদেশের হাইকোর্ট। রায়ে বলা হয়েছে, খালেদা-পুত্র ‘রাজনৈতিক ঢাল’ ব্যবহার করে সচেতন ভাবে আর্থিক অপরাধে জড়িয়েছেন। কনসালটেন্সি ফি-র নামে সহযোগীর মাধ্যমে ‘ডার্টি মানি’ কামিয়েছেন।

দুর্নীতি দমন কমিশনের অভিযোগ, মা প্রধানমন্ত্রী থাকার সুযোগে বড় বড় সরকারি কাজ পাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিভিন্ন সংস্থার কাছ থেকে কখনও ‘কনসালটেন্সি ফি’, কখনও ঘুষ হিসেবে কোটি কোটি টাকা কামিয়েছেন তারেক। সেই টাকা রাখা হতো তারেকের বন্ধু গিয়াসউদ্দিন মামুনের অ্যাকাউন্টে। পরে দেশের বাইরে মামুনের বিদেশি ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টে সেই টাকা সরিয়ে ফেলা হতো। ২০০৯-এর ২৬ অক্টোবর নিম্ন আদালতে এমনই একটি অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন মামলা করেছিল। তাতে বলা হয়, বাংলাদেশের টঙ্গীতে ৮০ মেগাওয়াটের একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র গড়ার কাজ পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে একটি ঠিকাদারি সংস্থার কাছ থেকে তারেক ২০ কোটি ৪১ লক্ষ টাকা ঘুষ নেন। ২০০৩ থেকে ২০০৭ পর্যন্ত সময়ে এই টাকা ধাপে ধাপে সিঙ্গাপুরে একটি বিদেশি ব্যাঙ্কে মামুনের অ্যাকাউন্টে সরিয়ে ফেলা হয়। সেই টাকার মধ্যে তিন কোটি ৭৮ লক্ষ টাকা তারেক নিজেই ব্যবহার করেছেন।

নিম্ন আদালত সেই মামলার রায়ে মামুনকে ৭ বছরের জেল ও ৪০ কোটি টাকা জরিমানা করলেও তারেককে বেকসুর বলে ঘোষণা করে। সরকার পক্ষ ও মামুন এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে মামলা করেন। বিচারপতিরা তারেককে আদালতে তলব করলেও তিনি লন্ডন থেকে আসেননি। ফলে তাঁর পক্ষে কোনও আইনজীবীও দাঁড়াতে পারেনি। বৃহস্পতিবার সেই মামলার রায়েই খালেদাপুত্র ও তাঁর সহযোগী— দু’জনকেই দোষী সাব্যস্ত করে সাজা ঘোষণা করল হাইকোর্ট। উল্লেখযোগ্য হল— ২০০২ সালে বিদেশে টাকা পাচার রোধে খালেদা জিয়া যে আইনটি তৈরি করেছিলেন, সেই আইনেই তারেক রহমান ও তাঁর সহযোগীকে এ দিন দোষী সাব্যস্ত করা হল।

দুই বিচারপতি এ দিন তাঁদের রায়ে বলেছেন, ‘‘রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে করা এ ধরনের দুর্নীতি সুশাসন, উন্নয়ন ও গণতন্ত্রের পক্ষে হুমকি।... তারেকের মতো রাজনৈতিক ঢাল ব্যবহার করে সচেতন ভাবে দুর্নীতি করার ঝোঁক দেশে বাড়ছে।’’

আগের আমলে প্রবল ক্ষমতাধর তারেক রহমান আট বছর ধরে ব্রিটেনে স্বেচ্ছা নির্বাসনে রয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে পাক গুপ্তচর আইএসআই ও বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার বহু অভিযোগ রয়েছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন আদালতে বোমা হামলায় তৎকালীন বিরোধী নেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা, রাষ্ট্রদ্রোহ ও দুর্নীতির কয়েক ডজন মামলায় অভিযুক্ত তারেক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Tarique Rahman Prison
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE