Advertisement
E-Paper

সন্ত্রাস ও ইসলাম এক নয়, সোশ্যাল মিডিয়ায় গর্জে উঠল গোটা বিশ্ব

সন্ত্রাসের সঙ্গে ধর্মের সম্পর্ক নিয়ে জোর তর্ক তুলে দিল প্যারিস। পৃথিবী জুড়ে যত জঙ্গি হামলা, তার সবক’টির দায় নাকি ইসলামেরই— সোশ্যাল মিডিয়ায় দাবি একাংশের। জঙ্গি হামলায় প্যারিসের মাটি রক্তাক্ত হওয়ার পর থেকেই নানা ইসলাম বিরোধী মন্তব্যে সরগরম ফেসবুক-টুইটার।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০১৫ ০০:২৮
আইএস হামলার প্রতিবাদ। প্যারিসের পথে। ছবি: এএফপি।

আইএস হামলার প্রতিবাদ। প্যারিসের পথে। ছবি: এএফপি।

সন্ত্রাসের সঙ্গে ধর্মের সম্পর্ক নিয়ে জোর তর্ক তুলে দিল প্যারিস। পৃথিবী জুড়ে যত জঙ্গি হামলা, তার সবক’টির দায় নাকি ইসলামেরই— সোশ্যাল মিডিয়ায় দাবি একাংশের। জঙ্গি হামলায় প্যারিসের মাটি রক্তাক্ত হওয়ার পর থেকেই নানা ইসলাম বিরোধী মন্তব্যে সরগরম ফেসবুক-টুইটার। পাল্টা প্রতিবাদ আছড়ে পড়তেও অবশ্য সময় লাগেনি। জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে বহু মানুষ বলছেন, সন্ত্রাসের কোনও ধর্ম হয় না। যুক্তি-পাল্টা যুক্তিতে সোশ্যাল মিডিয়ায় উত্তেজনার পারদ তুঙ্গে।

প্যারিস হামলা সবচেয়ে বেশি বিপদে ফেলেছে যাঁদের, তাঁরা শরণার্থী। প্রাণ বাঁচাতে, পরিবার বাঁচাতে সিরিয়ার বধ্যভূমি ছেড়ে যাঁরা শ’য়ে শ’য়ে, হাজারে হাজারে পাড়ি দিতে শুরু করেছিলেন ইউরোপের দিকে, বিভিন্ন ইউরোপীয় দেশ এ বার তাঁদের আর আশ্রয় দিতে নারাজ। শরণার্থীদের ভিড়ে মিশে সিরিয়া থেকে কোনও আইএস জঙ্গি ঢুকে পড়েছিল ফ্রান্সে— প্রাথমিক এমনটাই ধারণা ফরাসি সরকারের। ইউরোপীয় ইউনিয়নের যে সব দেশ সিরীয় শরণার্থীদের আশ্রয় দিতে শুরুতে রাজি হয়নি, তারা এখন সোচ্চার। শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়া মোটেই উচিত হয়নি, বলছেন অনেক রাষ্ট্রপ্রধান। জার্মানির মতো যে সব দেশ শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার পক্ষে ছিল, প্যারিসের ঘটনার পর তারাও দ্বিধায়।

সন্ত্রাস আর ইসলামের ‘অঙ্গাঙ্গী যোগ’ নিয়ে যে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে প্যারিস, তা ঠান্ডা না হলে শরণার্থীদের দুর্ভোগ বাড়বে বলে ওয়াকিবহাল মহলের মত। মুসলিম বিশ্ব কিন্তু প্যারিসে জঙ্গি হামলার কঠোর সমালোচনা করেছে। ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি, ইরাকের প্রধানমন্ত্রী হাইদার আল আবাদি কড়া ভাষায় প্যারিস হামলার নিন্দা করেছেন। সৌদি আরব এবং কুয়েতের মতো ইসলামি দেশের বিদেশ মন্ত্রীরাও কঠোর ভাষায় আইএস-কে আক্রমণ করেছেন। বিশ্বের বৃহত্তম মুসলিম জনসংখ্যার দেশ ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো-ও প্যারিস হামলার তীব্র সমালোচনায় সরব। শুধু ইসলামি রাষ্ট্র নয়, বিশ্বের বিভিন্ন ইসলামি সংগঠনও নিরীহ সাধারণ মানুষের উপর আইএসের জঘন্য আক্রমণের প্রবল নিন্দা করেছে। প্রত্যেকেরই বক্তব্য, ইসলাম শান্তির ধর্ম। এমন জঘন্য হিংসাকে ইসলাম কখনওই সমর্থন করে না। জেহাদের নামে যারা এই বর্বরতায় মত্ত, তারা কখনওই প্রকৃত মুসলিম হতে পারে না বলেও বিভিন্ন ইসলামি সংগঠন মন্তব্য করেছে।

একের পর এক ইসলামি রাষ্ট্র প্যারিস হামলার নিন্দা করা সত্ত্বেও কেন ইসলামকে সন্ত্রাসের সঙ্গে জুড়ে দেখা হবে? প্রশ্ন বিশ্বের একটা বিরাট অংশের। আইএস-এর মতো ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের সদস্যসংখ্যা পৃথিবীর মোট মুসলিম জনসংখ্যার প্রেক্ষিতে নগণ্যই। তাই এক বিরাট অংশের মানুষ বলছেন, মুষ্টিমেয় কিছু বর্বর ইসলামের নামে সন্ত্রাস করছে বলে, সব মুসলিমকে সন্ত্রাসবাদী তকমা দেওয়া মানবতার অপমান। তাঁদের প্রশ্ন, এই প্রবণতা না থামলে মৌলবাদকেই কি আরও বেশি প্রশ্রয় দেওয়া হবে না? সব মুসলিমের গায়ে সন্ত্রাসবাদী ছাপ্পা লাগিয়ে দেওয়া কি মানবজাতির একটি বিরাট অংশকে কোণঠাসা করার নামান্তর নয়?

এ বিতর্ক সহজে থামার নয়। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ায় আছড়ে পড়া বিতর্কে ইসলামকে সন্ত্রাসের সমার্থক বলতে নারাজ যাঁরা, তাঁদের সংখ্যাই এখনও বেশি। এমন দুর্যোগের মুহূর্তে আশার আলো বোধ হয় সেটুকুই।

Terror Islam Synonymous Protest Debate Social Media
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy