E-Paper

প্রতি বছর বাংলা নববর্ষ উদ্‌যাপনের সিদ্ধান্ত নিউ ইয়র্কে

বিলটির প্রস্তাবনা এবং সেটি পাশের সময়ে সেনেট কক্ষে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গ থেকে এ দেশে আসা দু’শোরও বেশি বাঙালি। বিল পাশ উপলক্ষে নিউ ইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলি বিল্ডিংয়ে একটি অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়েছিল।

অভীক সানোয়ার রহমান

শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০২৫ ০৮:২০
নিউ ইয়র্ক সেনেট।

নিউ ইয়র্ক সেনেট। ছবি: সংগৃহীত।

প্রতি বছর ১৪ এপ্রিল সরকারি ভাবে বাংলা নববর্ষ উদ্‌যাপন করা হবে নিউ ইয়র্ক প্রদেশে। এই মর্মে সম্প্রতি একটি বিল পাশ হয়েছে নিউ ইয়র্ক সেনেটে।

বিলটির প্রস্তাবনা এবং সেটি পাশের সময়ে সেনেট কক্ষে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গ থেকে এ দেশে আসা দু’শোরও বেশি বাঙালি। বিল পাশ উপলক্ষে নিউ ইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলি বিল্ডিংয়ে একটি অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়েছিল। বাংলা সঙ্গীত, নৃত্য এবং ঐতিহ্যবাহী সাজসজ্জায় গোটা প্রাঙ্গণ রঙিন হয়ে ওঠে।

অনুষ্ঠানের শুরুতে নিউ ইয়র্কের সেনেটর লুইস সেপুলভেদা সবাইকে স্বাগত জানান। তাঁর বক্তৃতায় তিনি নিউ ইয়র্কের প্রবাসী বাঙালিদের নানা অবদানের কথা তুলে ধরেন এবং বাংলা নববর্ষকে একটি আন্তর্জাতিক উৎসব বলে অভিহিত করেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন নিউ ইয়র্কের আর এক সেনেটর নাথালিয়া ফার্নান্দেজ় এবং অন্যান্য সেনেটর। তাঁরা সকলেই বাঙালি সংস্কৃতির প্রতি সম্মান জানিয়ে এই ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তে অংশ নেন এবং বিলটি পাশে সম্মতি জানান। আমেরিকায় বসবাসকারী বাঙালি বংশোদ্ভূতদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, কঠোর পরিশ্রম ও সমাজে নানা ধরনের অবদান নিউ ইয়র্ক প্রদেশকে কী ভাবে সমৃদ্ধ করেছে, সে কথাই উঠে আসে সেনেটরদের বক্তৃতায়।

বাঙালি প্রতিনিধিদের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন এনআরবি ওয়ার্ল্ডওয়াইডের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি বিশ্বজিৎ সাহা, মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের ভাইস চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম এবং একুশে পদকপ্রাপ্ত স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী রথীন্দ্রনাথ রায়। তাঁরা সবাই বিশ্বায়নের যুগে বাংলা সংস্কৃতির গুরুত্ব ও প্রসার নিয়ে কথা বলেন এবং এই বিল পাশ করার জন্য সেনেট কর্তৃপক্ষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।

সেনেটের এই সিদ্ধান্তকে ‘আমেরিকার সাংস্কৃতিক সহনশীলতার এক চমৎকার উদাহরণ’ বলে মন্তব্য করেন নজরুল ইসলাম। বিশ্বজিৎ সাহার কথায়, “১৪ এপ্রিলকে নিউ ইয়র্ক গভর্নরের পক্ষ থেকে বাংলা নববর্ষ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে— এটি বাঙালিদের জন্য একটি ঐতিহাসিক অর্জন।” আর রথীন্দ্রনাথ রায় মনে করিয়ে দেন, “পয়লা বৈশাখ কোনও ধর্মীয় উৎসব নয়, এটি আমাদের জাতিসত্তার এক শক্তিশালী প্রকাশ। নিউ ইয়র্ক কর্তৃপক্ষ
আমাদের এই সংস্কৃতিকে সম্মান জানিয়ে যে স্বীকৃতি দিয়েছে, তার জন্য আমরা আন্তরিক ভাবে কৃতজ্ঞ।” অনুষ্ঠানে উপস্থিত বাঙালিরা এক বাক্যে স্বীকার করে নেন যে, এই বিলটি আমেরিকায় বসবাসকারী বাংলা ভাষাভাষী মানুষদের প্রতি গভীর
শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শন করেছে। তাঁদের মতে, এটি শুধু নিউ ইয়র্কেরই নয়, বরং বিশ্বব্যাপী বাঙালিদের জন্য এক গর্বের মুহূর্ত।

কলকাতা থেকে আগত সাংস্কৃতিক কর্মী সোম্য এই অনুষ্ঠানের অন্যতম মূল উদ্যোক্তা ছিলেন। তাঁর কথায়, “এমন একটি ঐতিহাসিক ঘটনায় অংশ নিতে পেরে নিজেকে অত্যন্ত গর্বিত লাগছে।” অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন দর্জি শেরপা। তিনি এসেছেন লং আইল্যান্ড থেকে। তাঁর কথায়, “যদিও আমি নেপালি বংশোদ্ভূত, কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে বড় হয়েছি ও পড়াশোনা করেছি। আমি এখন নিজেকে একজন বাঙালি বলেই মনে করি।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

new york Bengali New Year Celebration

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy