ফ্লয়েডের গলা হাঁটু দিয়ে চেপে ধরেছিল পুলিশ অফিসার ডেরেক শভিন।
মামলা চলেছিল বেশ কয়েক মাস ধরে। তখন বারবারই অভিযুক্ত বলেছিল, ‘আমি নির্দোষ’। অপরাধ প্রমাণিত হওয়ার আট মাস পরে এ বার সাজাপ্রাপ্ত সেই প্রাক্তন পুলিশ অফিসার নাকি দোষ কবুল করে আদালতের সামনে ক্ষমা চাইবেন বলে মনস্থ করেছে।
গত বছর ২৫ মে মিনিয়াপোলিসের রাস্তায় ৪৬ বছর বয়সি কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডের গলা হাঁটু দিয়ে চেপে ধরেছিল পুলিশ অফিসার ডেরেক শভিন। ৯ মিনিট ২৯ সেকেন্ড সে ভাবে থাকার ফলে শ্বাসরোধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান ফ্লয়েড। সেই মামলায় এ বছর এপ্রিলে দোষী সাব্যস্ত হয়েছে শভিন। জুলাইয়ে তার সাড়ে ২২ বছর কারাদণ্ড ঘোষণা করে মিনিয়াপোলিসের আদালত। তখন থেকেই ৪৫ বছর বয়সি শভিন স্টিলওয়াটার সংশোধনাগারে বন্দি।
মামলার শুরু থেকে শভিনের আইনজীবী দাবি করে আসছিলেন, তাঁর মক্কেল ‘নট গিল্টি’। শভিনের দাবি ছিল, জাল নোট ব্যবহার করার জন্য আটক করা ফ্লয়েড ক্রমাগত গ্রেফতারি এড়ানোর চেষ্টা করছিলেন। অত্যন্ত বলশালী এই কৃষ্ণাঙ্গকে কিছুতেই কাবু করতে না পেরে হাঁটু দিয়ে তাঁকে চেপে ধরতে বাধ্য হয়েছিল শভিন। ফ্লয়েড যে অন্তত ২৭ বার ‘নিঃশ্বাস নিতে পারছি না’ বলেছিলেন, তা-ও সে নাকি শুনতে পায়নি বলে আদালতে দাবি করে এই প্রাক্তন পুলিশ অফিসার। যদিও পথচারী এক কিশোরীর তোলা ভিডিয়ো থেকে স্পষ্ট হয়ে যায়, শভিনের এই সব দাবি সর্বৈব মিথ্যা।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী কাল মিনিয়াপোলিসের ফেডারাল আদালতে শভিনের আর্জি শোনা হবে। যদিও তার আইনজীবী এ বিষয়ে এখনও মুখ খোলেননি। সরকারি আইনজীবীকে বিষয়টি নিয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনিও কোনও মন্তব্য করতে চাননি। সাধারণত, দোষ কবুল করে নিলে সাজার মেয়াদ কম হয়। তবে ফ্লয়েড-হত্যার মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ মামলায় সাজা বিশেষ কমানো হবে না বলেই ধারণা ।
শভিনের সঙ্গেই দোষী সাব্যস্ত হয় আরও তিন পুলিশ অফিসার টু থাও, আলেকজ়ান্দার কিউয়েং এবং টমাস লেন। তাদের বিরুদ্ধে ফ্লয়েড-হত্যায় সাহায্য করা এবং শারীরিক অসুবিধার কথা জানালেও চিকিৎসার ব্যবস্থা না করা— এই দু’টি অভিযোগ আনা হয়েছিল। এই তিন জনও মামলার বিভিন্ন পর্যায়ে নিজেদের নির্দোষ দাবি করে এসেছে। আগামী বছর মার্চ মাসে সেই মামলার শুনানি শেষ হওয়ার কথা। শভিনের ‘মতবদলের’ পরে তারাও এ বার অবস্থান বদল করতে পারে বলে ধারণা আইনজীবীদের। মানবাধিকার কর্মী নেকিমা লেভি আর্মস্ট্রংয়ের কথায়, ‘‘আমরা শুধু চাই, এক বার জনসমক্ষে ক্ষমা চেয়ে নিক ডেরেক শভিন। মেনে নিক যে, সে ভুল করেছিল!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy