ছ’বছরের শিশুকেও এ ভাবে পৌঁছতে হয় স্কুলে। চিনের সিচুয়ান প্রদেশের আটুলিয়ের গ্রামে। ছবি ফেসবুকের সৌজন্যে।
ছোট্ট গ্রাম আটুলিয়ের। দক্ষিণ-পশ্চিম চিনের সিচুয়ান প্রদেশের ২,৬২৪ ফুট উঁচু পাহাড়ের খাড়া বাঁধের উপর অবস্থিত এই গ্রামটিতে মাত্র ৭২টি পরিবারের বাস। যে কোনও নূন্যতম পরিষেবা পেতেই গ্রামবাসীদের আসতে হয় পাহাড়ের নীচে, সমতলে। আর এই পাহাড় ডিঙোনোর পরিশ্রম পোহাতে হয় আটুলিয়ের গ্রামের শিশুদেরও।
সব মিলিয়ে প্রায় চোদ্দো-পনেরোটি শিশু। সকলের বয়সই ছয় থেকে পনেরোর মধ্যে। নূন্যতম প্রাথমিক শিক্ষাটুকু পেতে প্রতিদিনই এদের ডিঙোতে হয় প্রায় ৮০০ মিটার পাহাড়ি পাকদন্ডি। দড়ির মই বেয়ে নেমে এলে পাহাড়ের একদম নীচে তাঁদের লিয়ের প্রাথমিক স্কুল। ঝুঁকির এই সফরে সব সময় তিন জন করে অভিভাবক তাদের সঙ্গে আসেন। যাতে শিশুরা সুরক্ষিত ভাবে স্কুলে পৌঁছতে পারে। তাই এক বার স্কুলে পৌঁছে সেখানেই দু’সপ্তাহ মতো থেকে যায় পড়ুয়ারা। স্কুলের কোনও শিক্ষক আটুলিয়েরে ফিরলে তবেই তাদের বাড়ি ফেরা হয়। যে দুর্গম পথ বেয়ে ওই চিনা শিশুরা স্কুল যায়, তাদের ছবিই সম্প্রতি ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই প্রচুর মানুষ শেয়ার করেছেন পাকদন্ডির রাস্তার সেই ছবির। তলায় ক্যাপশন, ‘‘আপনার কি এখনও মনে হয়, আপনার জীবনটাই শুধু খুব খারাপ, কষ্টের?’’
পাহাড়ি আলপথ বেয়ে নীচে নামতে বড়দেরই লেগে যায় প্রায় এক ঘণ্টা, ফিরে আসতে লাগে আরও দে়ড় ঘণ্টা। বড়দের সাহায্য নিয়ে স্কুলে পৌঁছতে শিশুদের সময় লেগে যায় তারও দ্বিগুণ। চিনের বিভিন্ন সংবাদপত্রেও উঠে এসেছে আটুলিয়েরের শিশুদের এই নিত্য ঝুঁকি-সফরের ছবি। আর তা দেখেই টনক নড়েছে সরকারের।
সরকার আশ্বাস দিয়েছে, খুব তাড়াতাড়িই ওই এলাকায় শক্তপোক্ত ইস্পাতের তৈরি সিঁড়ির ব্যবস্থা করা হবে। যদিও এই দীর্ঘদিনের সমস্যা ঘোচাতে এ বার স্থায়ী সমাধানের কথাই ভাবতে চায় চিনের কমিউনিস্ট সরকার। তৈরি করতে চায় স্থায়ী রাস্তা। কারণ তাতে আটুলিয়ের গ্রামের যেমন সুবিধা হবে, তেমনই প্রসারিত হবে পর্যটনের পথও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy