E-Paper

পুজোয় ভ্যাঙ্কুভারকে রাঙিয়ে তুলবে এক টুকরো বাঙালিয়ানা

এ বছর ভ্যাঙ্কুভারের বিভিন্ন বাঙালি সংগঠনের উদ্যোগে দুর্গাপুজো অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। এটি শুধু ধর্মীয় আচার নয়, বরং প্রবাসী বাঙালিদের মিলনমেলা ও সাংস্কৃতিক উৎসবের রূপে প্রকাশিত হবে ।

ঋকলীনা রায়চৌধুরী

শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৭:১৫
শুধু ধর্মীয় আচার নয়, প্রবাসী বাঙালিদের মিলনমেলা এবং সাংস্কৃতিক উৎসবের রূপ পায় ভ্যাঙ্কুভারের দুর্গাপুজো।

শুধু ধর্মীয় আচার নয়, প্রবাসী বাঙালিদের মিলনমেলা এবং সাংস্কৃতিক উৎসবের রূপ পায় ভ্যাঙ্কুভারের দুর্গাপুজো। —নিজস্ব চিত্র।

ভ্যাঙ্কুভার। কলকাতা থেকে হাজার হাজার মাইল দূরে থেকেও কানাডার এই শহরে বসবাসকারী বাঙালিদের হৃদয়ে দুর্গাপুজোর আবেগ অটুট থাকে।

এ বছর ভ্যাঙ্কুভারের বিভিন্ন বাঙালি সংগঠনের উদ্যোগে দুর্গাপুজো অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। এটি শুধু ধর্মীয় আচার নয়, বরং প্রবাসী বাঙালিদের মিলনমেলা ও সাংস্কৃতিক উৎসবের রূপে প্রকাশিত হবে ।

দূরদেশের নীল আকাশে শরতের ঠান্ডা হাওয়া বইতে শুরু করেছে। তবে শহরের এক কোণে ঢাকের বাদ্যি বাজতে শুরু করলেই যেন মুহূর্তে ভেসে আসে বাংলার গন্ধ। প্রবাসের মাটিতে সেই ঢাকের আওয়াজই মনে করিয়ে দেবে—‘মা এসেছেন’।

মণ্ডপের ভেতরে সাজানো দুর্গামূর্তির সামনে দাঁড়িয়ে কারও চোখ জলে ভরে উঠবে, কারও ঠোঁটে ফুটে উঠবে হাসি। ছোটরা নাচবে, গাইবে, আবৃত্তি শোনাবে, বড়রাও নাচবেন সেজেগুজে ধুনুচি হাতে। সবার মিলিত উচ্ছ্বাসে তৈরি হবে এক অদ্ভুত আবেগ— এক টুকরো কলকাতা যেন এসে দাঁড়াবে ভ্যাঙ্কুভারের বুকে।

কেউ বলেন, “প্রতি বছর এই কয়েকটা দিন আমাদের জীবনে আলোর উৎসব হয়ে আসে। দেশের কথা মনে পড়ে, আবার নতুন করে নিজেদের খুঁজে পাই।” অন্য কেউ যোগ করেন, “এটা শুধু পুজো নয়, আমাদের শিকড়ের সঙ্গে সংযোগ।”

দুপুরে যখন ভোগের খিচুড়ির গন্ধ চারদিকে ছড়াবে, তখন মায়ের রান্নাঘর এসে মিশে যাবে প্রবাসী জীবনযাপনে। আর সন্ধ্যার আরতিতে শঙ্খধ্বনির সঙ্গে মিলেমিশে যাবে ভ্যাঙ্কুভারের আকাশ, আলো আর মানুষের কণ্ঠস্বর।

পুজোর আবেগ শুধু আনন্দে সীমাবদ্ধ থাকে না, তা জড়িয়ে থাকে স্মৃতির সঙ্গেও। অনেকেরই এই সময়ে মনে পড়ে যায় কলকাতার ভিড়ভাট্টা বা বন্ধুদের সঙ্গে রাতভর আড্ডার সেই সময়। ভ্যাঙ্কুভারের এই দুর্গাপুজো সেই শূন্যতাকে পূর্ণ করে তোলে মিলন আর আনন্দে।

এই উৎসবের সৌন্দর্য কেবল বাঙালিদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে না। স্থানীয় কানাডিয়ানরাও এসে অংশ নেন, ভাগ করে নেন আনন্দ। তাঁদের কাছে এটি এক নতুন অভিজ্ঞতা— ভিন্ন সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সঙ্গে পরিচয়। ফলে এই পুজো হয়ে ওঠে শুধু বাঙালিদের নয়, বহু সংস্কৃতির মানুষের মিলনস্থল।

তবে শেষ দিনে মাকে বিদায় জানানোর সময়ে সবার চোখে জল আসে। মনে একটাই আশা—আগামী বছর আবার মা আসবেন, আবার ঢাক বাজবে, আবার মিলনোৎসবে অংশ নেব আমরা সকলে।

প্রবাসের অচেনা শহরকে এই কয়েকটা দিন তাই মাতৃভূমির মতো করে সাজাবে দুর্গাপুজো—ভ্যাঙ্কুভারকে রাঙিয়ে তুলবে এক টুকরো বাঙালিয়ানা।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Durga Puja 2025 Canada Vancouver

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy