E-Paper

বিতর্কিত আইন বদলে বাংলাদেশে নয়া সাইবার আইন

বাংলাদেশে ২০১৮ সালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন চালু হওয়ার পরে সব চেয়ে বেশি তা ভিন্নমতের রাজনীতিক, সাংবাদিক এবং শিক্ষকদের বিরুদ্ধে প্রয়োগ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০২৩ ০৭:৩৩
An image of Sheikh Hasina

শেখ হাসিনা। —ফাইল চিত্র।

বহু বিতর্কিত ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন’ বাতিল করে নতুন ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন-২০২৩’ আনার কথা ঘোষণা করল বাংলাদেশের শেখ হাসিনা সরকার। সোমবার মন্ত্রিসভায় এই সিদ্ধান্ত অনুমোদন পাওয়ার পরে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিক বৈঠকে জানান, নতুন আইনটি আগের আইনের সংশোধিত রূপ বলা যেতে পারে। আগের আইনের বিভিন্ন ধারা নতুন আইনে হুবহু থাকলেও শাস্তির বিধানে কারাদণ্ডের পরিবর্তে অর্থদণ্ডকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রী জানান, অর্থদণ্ড বা জরিমানা অনাদায়ে কারাদণ্ডের বিধান রাখা হচ্ছে। তবে অনেকগুলি অভিযোগের ক্ষেত্রে আগে জামিনের সুযোগ না-থাকলেও এখন শাস্তি জামিনযোগ্য করা হয়েছে।

বাংলাদেশে ২০১৮ সালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন চালু হওয়ার পরে সব চেয়ে বেশি তা ভিন্নমতের রাজনীতিক, সাংবাদিক এবং শিক্ষকদের বিরুদ্ধে প্রয়োগ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের হেনস্থাতেও এই আইনের যথেচ্ছ অপব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। দেশ-বিদেশের বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন এই আইন বাতিলের জন্য সরকারকে পরামর্শ দিয়েছিল। রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার ফোলকার টুর্ক গত এপ্রিলে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রয়োগে অবিলম্বে বন্ধ করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের কাছে আর্জি জানান। এর পর জুনে ওই আইন পর্যালোচনা করে সংশোধনের একটি বিস্তারিত নীতিমালা সরকারকে পাঠায় টুর্কের দফতর। আমেরিকা ও ইউরোপও বিষয়টি নিয়ে সরব হওয়ায় চাপে পড়েই আগের আইনটি বাতিল করে নতুন আইন প্রণয়নের কৌশল হাসিনা সরকার নিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

আইনমন্ত্রী দাবি করেন, নতুন সাইবার নিরাপত্তা আইনে আগের চেয়ে নরম সাজা, কারাদণ্ডের বদলে জরিমানা এবং জামিনের বিধান রাখা হয়েছে। আগের আইনের অন্যতম বিতর্কিত ২৮ নম্বর ধারাটি নতুন আইনেও বাদ দেওয়া হয়নি জানিয়ে হক বলেন, তবে শাস্তি কমানো হয়েছে, জামিনও থাকছে। সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সব চেয়ে বেশি অপপ্রয়োগের অভিযোগ ওঠা এই ধারায় বলা হয়েছে, ডিজিটাল মাধ্যমে প্রকাশিত ও প্রচারিত কারও মন্তব্য বা আচরণ অন্যের ধর্মীয় অনুভূতি ও মূল্যবোধকে আঘাত করলে, তা জামিন-অযোগ্য অপরাধ। এর জন্য পাঁচ বছর কারাদণ্ড এবং ১০ লক্ষ টাকা জরিমানার বিধান ছিল। মন্ত্রী জানান, এই ধারায় সাজা কমিয়ে ২ বছর এবং তা জামিনযোগ্য করা হয়েছে। এ ছাড়া ২৯ ধারায় মানহানির অপরাধে কারাদণ্ডের বদলে মোটা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। কেবল অনাদায়েই কারাবাস। নেতা-মন্ত্রীদের দুর্নীতি ফাঁস করে এই ধারায় বিদ্ধ হয়েছেন বহু সাংবাদিক।

প্রধান বিরোধী দল বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভি দাবি করেছেন, নতুন আইন আগের চেয়েও দেশি দমনমূলক হবে। তিনি বলেন, “এ সবই ফ্যাসিস্ট সরকারের কৌশল।” সংসদে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের আশাপ্রকাশ করেন, নতুন আইন সরকার ভিন্নমতকে দমনের হাতিয়ার করবে না। নতুন আইন গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করলে তাঁরা মেনে নেবেন না বলে জানিয়েছেন কাদের।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Cyber Security Sheikh Haisna Bangladesh

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy