Advertisement
E-Paper

কলকাতা উঠে আসছে আল্পসের পায়ের গোড়ায়

বরফ ঢাকা আল্পস পাহাড়ের ছায়া টলটল করছে স্বচ্ছ নীল হ্রদে। তার তীরে সোনালি আলোয় ঝলমল করছে আদিগন্ত সবুজ প্রান্তর। তার মাঝে দাঁড়িয়ে ছোট ছোট রঙিন কাঠের বড়ি। সুইৎজারল্যান্ড শুনলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে ছবির মতো সুন্দর এক রূপকথার দেশের কথা।

অনিরুদ্ধ ঘোষ

শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০১৫ ১৩:৫৯

বরফ ঢাকা আল্পস পাহাড়ের ছায়া টলটল করছে স্বচ্ছ নীল হ্রদে। তার তীরে সোনালি আলোয় ঝলমল করছে আদিগন্ত সবুজ প্রান্তর। তার মাঝে দাঁড়িয়ে ছোট ছোট রঙিন কাঠের বড়ি। সুইৎজারল্যান্ড শুনলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে ছবির মতো সুন্দর এক রূপকথার দেশের কথা। শান্ত সুইস গ্রামগুলোর ঘুম ভাঙে গির্জার ঘণ্টার ঢং ঢং আওয়াজে। তবে দুর্গাপুজোর এই চার দিন কিন্তু ছবিটা একেবারেই আলাদা। এই সময় সুইৎজারল্যান্ডেরও ঘুম ভাঙে ঢাকের আওয়াজে। পুজোর গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে সুইস প্রান্তরে।

২০০৪ সাল থেকে নিয়মিত সর্বজনীন দুর্গাপুজোর আয়োজন করে আসছে ‘সুইসপূজা’ নামের অলাভজনক একটি সাংস্কৃতিক সংস্থা। বাঙালি-সহ অনাবাসী ভারতীয়রা তো রয়েছেনই, পুজোর দিনগুলোয় স্থানীয় সুইসরাও উত্সাহ নিয়ে ছুটে আসেন মণ্ডপে।

ইউরোপের অন্যান্য পুজোগুলোর থেকে কিন্তু এই পুজো অনেকটাই আলাদা। সময়ের অভাবে ইউরোপের অনেক জায়গায়, এমনকী আমেরিকার কিছু কিছু শহরে পুজোর দিনে নয়, সপ্তাহান্তে সকলের সুবিধাজনক একটা দিন বেছে উদযাপন করা হয় দুর্গোত্সব। অনাবাসীদের মধ্যেই পুজো-আচ্চা জানা পুরোহিত খুঁজে নেওয়া হয়। তবে ‘সুইসপূজা’ কিন্তু এ ভাবে পুজো করে না। এখানে রীতিমতো পঞ্জিকা মেনে সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী, দশমীতেই উদযাপন হয় দুর্গাপুজো। কলকাতা থেকে নিয়ে আসা হয় চার চালার প্রতিমা। সঙ্গে আসেন পুরোহিত মশাইও। এ বছর পুজোর থিমও বাছা হয়েছে ‘কলকাতা’। মহানগরের বিভিন্ন স্থাপত্যে সেজে উঠবে জুরিখের মফস্সল। জাঁকজমক, আলোকসজ্জায় যখন উত্সবমুখর কলকাতা, সেই সময়ই পৃথিবীর অন্য এক সুন্দরতম প্রান্তে সেজে উঠছে অন্য এক কলকাতা।

পুজোর চার দিন নাচ, গান, বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেও মেতে ওঠে জুরিখ। এ বছর ষষ্ঠীর দিন ‘মহিষাসুর মর্দিনী’ দিয়ে শুরু হয়ে নবমীর দিন আধুনিক দুর্গার নাট্যোত্সব দিয়ে শেষ হবে অনুষ্ঠান। মাঝের দিনগুলোও নাচ, গান, নাটক, বিভিন্ন আনন্দোত্সবে মেতে থাকবে সুইৎজারল্যান্ডের রাজধানী শহর। তবে উত্সব কি আর শুকনো মুখে হয়? রয়েছে পেটপুজোর অঢেল আয়োজন। টানা চার দিন সকাল, বিকেল সুস্বাদু নিরামিষ ভোগে আপ্যায়নের পাশাপাশি মণ্ডপের বাইরে থাকবে ফুচকা, চাটের মতো লোভনীয় সব খবারের স্টল। জুরিখ যেন ঠিক তখন কলকাতার রাজপথ।

উৎসব উদযাপন তো রয়েছেই। সঙ্গে প্রতি বছরই সেবামূলক কাজের জন্যও তহবিল সংগ্রহ করে ‘সুইসপূজা।’ গত বছর উত্তরকাশীর বন্যা দুর্গতদের পাশে দাঁড়িয়েছিল তারা। এ বার নেপালের ভূমিকম্প দুর্গতদের সঙ্গেও রয়েছে ‘সুইসপূজা।’ উত্সব সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন করতে এগিয়ে এসেছে স্ট্যাড জুরিখ, রিটবার্গ মিউজিয়াম, ইনক্রেডিবল ইন্ডিয়া-র মতো বিভিন্ন সুইস ও ভারতীয় সংস্থা। অষ্টমীতে মণ্ডপে উপস্থিত থাকবেন সুইৎজারল্যান্ডের ভারতীয় রাষ্ট্রদূত। গত বছর চার দিনে সুইৎজারল্যান্ড, জার্মানি ও ফ্রান্স থেকে প্রায় ২০০০ মানুষের সমাগম হয়ে ছিল জুরিখের এই পুজোয়। এ বছর সেই রেকর্ড ছাপিয়ে যাওয়ার আশায় রয়েছে ‘সুইস কলকাতা।’

Swizerland, Zurich Swisspuja Durapujo Durga
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy