Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

দেড়শো যাত্রীর ছ’শো টুকরো আল্পসে

রক্তের চাপ চাপ দাগ। তালগোল পাকানো হাত-পা-ধর-মুণ্ড। ছিন্নভিন্ন শরীর। আল্পসের পার্বত্য ঢালে ভাঙা বিমানের টুকরোর মাঝে এ ভাবেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে জার্মানউইঙ্গস ৪ইউ৯৫২৫-এর দেড়শো যাত্রীর প্রায় ৬০০ দেহাংশ। জায়গাটার কাছেই তাঁবু খাটিয়েছেন জার্মান ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞের একটি দল। দিন-রাত এক করে সেখানে কাজ করে যাচ্ছেন কয়েকশো উদ্ধারকর্মী।

সংবাদ সংস্থা
মার্সেই শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০১৫ ০৩:২৫
Share: Save:

রক্তের চাপ চাপ দাগ। তালগোল পাকানো হাত-পা-ধর-মুণ্ড। ছিন্নভিন্ন শরীর। আল্পসের পার্বত্য ঢালে ভাঙা বিমানের টুকরোর মাঝে এ ভাবেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে জার্মানউইঙ্গস ৪ইউ৯৫২৫-এর দেড়শো যাত্রীর প্রায় ৬০০ দেহাংশ।

জায়গাটার কাছেই তাঁবু খাটিয়েছেন জার্মান ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞের একটি দল। দিন-রাত এক করে সেখানে কাজ করে যাচ্ছেন কয়েকশো উদ্ধারকর্মী। কাজের ফাঁকে সেই মৃত্যু উপত্যকাতেই খাওয়া, সেখানেই ঘুম।

বিশেষজ্ঞ দলটির প্রধান মাইকেল সোকোস আতঙ্কিত গলায় বললেন, “একটাও দেহ গোটা দেখতে পেলাম না। শুধুই ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে দেহের বিচ্ছিন্ন অংশ।” তার পর নিজেই বর্ণনা দিলেন তাঁদের কর্মকাণ্ডের। ডিএনএ পরীক্ষা করে দেহের এক-একটা অংশ মিলিয়ে এক জায়গায় জড়ো করছেন বিশেষজ্ঞরা। তার পর সেই দেহাংশগুলো কার, তা জানার পালা। ফের ডিএনএ পরীক্ষা। সে জন্য মৃত যাত্রীদের পরিবারের কাছে নমুনা (যেমন টুথব্রাশ, গয়না কিংবা চুল) চাওয়া হচ্ছে। কোনও কোনও ক্ষেত্রে তাঁদের থেকে জানতে চাওয়া হচ্ছে, বিমানে ওঠার সময় মৃত যাত্রীর পরনে কী ছিল। গায়ে কোনও ট্যাটু ছিল কি না। কিংবা জন্ম থেকে যদি কোনও দাগ থেকে থাকে শরীরে।

নমুনা-পরীক্ষা চলছে বার্সেলোনার এক গবেষণাগারে। আবার একটি মোবাইল গবেষণাগারও তৈরি করা হয়েছে ধ্বংসস্তূপের কাছে। ফরেন্সিক পরীক্ষা করা হচ্ছে সেখানেও। মাইকেলের কথায়, “প্রত্যেকটা জিনিস খুঁটিয়ে পরীক্ষা করা হচ্ছে। আনা হয়েছে বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত একটি দলকে। তাঁরা অত্যাধুনিক পদ্ধতিতে হাতের ছাপ পরীক্ষা করে দেহাংশ সনাক্ত করছেন। কারণ, এ ছাড়া কোনও উপায় নেই। দেহাংশগুলো যে চেনার অবস্থায় নেই!” তিনি আরও জানালেন, যদি কোনও যাত্রীর শরীরে পেসমেকার বা কৃত্রিম হাড় বসানো থাকে, তা জানতে সিটি স্ক্যানও করে দেখা হচ্ছে। কারণ সে ভাবেও দেহটি কার, তার সন্ধান পাওয়া সম্ভব। এই সব পর্ব শেষে কফিনবন্দি করা।

ধ্বংসস্তূপ থেকে অ্যান্ড্রিয়াস লুবিৎজের দেহটাও কি পাওয়া গিয়েছে? প্রশ্ন ছুটে এসেছিল মাইকেলের কাছে। ঘাড় নেড়ে মাইকেল বলেন, “মিলেছে। ডিএনএ পরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে ওটাই ওর দেহ।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE