Advertisement
E-Paper

বিলেতে এগোচ্ছে লেবার পার্টি, চাপের মুখে টেরেসা

ব্রেক্সিট, বিদেশনীতি এবং সমাজকল্যাণ— নানাবিধ বিষয়েই কড়া কড়া প্রশ্নবাণ ছুটে এসেছে নেতা-নেত্রীর দিকে। কিছু প্রশ্ন এসেছে জনতার কাছ থেকে। আর কিছু এসেছে চ্যানেলের উপস্থাপকের কাছ থেকে। কঠিন প্রশ্নের মুখে পড়ে টেরেসা চেষ্টা করেছেন জনতাকে শান্ত করতে।

শ্রাবণী বসু

শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০১৭ ০২:২০
প্রত্যয়ী:  লন্ডনে টিভি বিতর্ক সেরে বেরোচ্ছেন করবিন। রয়টার্স

প্রত্যয়ী: লন্ডনে টিভি বিতর্ক সেরে বেরোচ্ছেন করবিন। রয়টার্স

মুখোমুখি বসে টেলিভিশন বিতর্কে অংশ নিতে আপত্তি জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে। সোমবার রাতে তাই টিভি-তে মুখ দেখালেও প্রতিদ্বন্দ্বীরা পৃথক ভাবে মুখোমুখি হলেন জনতার। প্রশ্ন শুনলেন এবং উত্তর দিলেন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রশ্নোত্তর-পর্বে অনেকটা আত্মবিশ্বাসী দেখিয়েছে বিরোধী লেবার নেতা জেরেমি করবিনকে। ব্রিটেনের জনমত সমীক্ষাতেও টেরেসা-র কনজারভেটিভ পার্টির সঙ্গে দূরত্ব এক ধাক্কায় কমিয়ে ফেলেছে করবিনের দল। জনপ্রিয়তায় দুই দলের মধ্যে এখন তফাৎ মাত্র পাঁচ পয়েন্টের। শেষ বেলায় কে কোথায় ঠেকবেন, স্পষ্ট হবে ৮ জুন সাধারণ নির্বাচনের পরে।

ব্রেক্সিট, বিদেশনীতি এবং সমাজকল্যাণ— নানাবিধ বিষয়েই কড়া কড়া প্রশ্নবাণ ছুটে এসেছে নেতা-নেত্রীর দিকে। কিছু প্রশ্ন এসেছে জনতার কাছ থেকে। আর কিছু এসেছে চ্যানেলের উপস্থাপকের কাছ থেকে। কঠিন প্রশ্নের মুখে পড়ে টেরেসা চেষ্টা করেছেন জনতাকে শান্ত করতে। কিন্তু তাঁর তুলনায় অনেক বেশি আশ্বাস দিতে সমর্থ হয়েছেন করবিন।

কনজারভেটিভ পার্টির ইস্তাহারে বার্ধক্য ভাতা হ্রাসের বিষয়টি যে প্রবীণ মানুষদের যথেষ্ট চটিয়েছে, তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে ফিলিপ ওয়েবস্টার নামে ৮৯ বছরের এক বৃদ্ধের প্রশ্নে। তিনি সরাসরি টেরেসাকে বলে বসেন, ‘‘আমার প্রজন্ম আপনাকে ভোট দেবে কেন? আমায় যদি বাড়ি বেচে শেষ বয়সে অর্থ জোগাড় করতে হয়!’’ টেরেসা তাঁকে বোঝান, তাঁদের বাড়ি বিক্রি করার মতো প্রয়োজন পড়বে না।

খেপে যান এক পুলিশ অফিসারও। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালীন টেরেসা কেন কর্তব্যরত পুলিশের সংখ্যা কমিয়েছিলেন, সেই নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। অথচ ম্যাঞ্চেস্টার হামলার পরে সেই টেরেসাই সেনাবাহিনী নামাতে বাধ্য হলেন!

জাতীয় স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়েও প্রশ্নের মুখে পড়েছেন কনজারভেটিভ নেত্রী। হাসপাতাল খাতে সঞ্চয় বৃদ্ধির কথা বলে পেশায় এক ধাত্রী-মাকে উদ্বেগে ফেলেছেন টেরেসা। তার মানে তো স্বাস্থ্য খাতে কাটছাঁট! প্রধানমন্ত্রী আশ্বাস দেন, দেশে স্বাস্থ্য পরিষেবার সেরাটা দিতেই এই প্রস্তাব। এই প্রসঙ্গেই তিনি উল্লেখ করেন ব্রেক্সিটের কথা। তাঁর দাবি, সেই মীমাংসা যত ইতিবাচক হবে, ততই লাভ ব্রিটেনের।

পার পাননি করবিনও। ড্রোন হামলা, শুল্ক বাড়ানোর পরিকল্পনা, নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া— এই সব নিয়ে তাঁকে চাপে ফেলেছে জনতা। পুর-কর বাড়ানো বা প্রাইভেট স্কুল ফি-র উপরে ভ্যাট চাপানো নিয়ে তাঁকে আক্রমণ করেন এক শ্রোতা। তাঁকে লেবার নেতা বলেন, ‘‘এই দেশ এখন বিরাট ধনী এবং ভয়ঙ্কর দরিদ্রের মধ্যে বিশ্রী ভাবে বিভক্ত।
নিজেদের সন্তান যখন খিদে নিয়ে স্কুল যাবে, আপনাদের ভাল লাগবে?’’

উপস্থাপক জানতে চান, সিরিয়া বা ইরাকে কোনও জঙ্গিকে কাবু করতে হলে তিনি কি ড্রোন হামলা চালানোর পক্ষপাতী? করবিন বলেন, ‘‘প্রমাণ ছাড়া কিছু হয় না। কী হলে কী হতে পারে— এমন কোনও প্রশ্নের উত্তর দেওয়া যায় না।’’

সব মিলিয়ে নেতা-নেত্রীর লড়াইয়ে বেশি স্বচ্ছন্দ মনে হয়েছে করবিনকেই। কারণ টেরেসা যে সব প্রতিশ্রুতি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরে দিয়েছিলেন, তার অনেকগুলি থেকেই পুরোপুরি সরে গিয়ে নীতি বদলে তোপের মুখে পড়েছেন। করবিন সে দিক থেকে অনেকটাই ভারমুক্ত।

Theresa May Jeremy Corbyn Labour Party Brexit
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy