Advertisement
০৫ মে ২০২৪
Theft

বাংলাদেশে মজাদার চুরি, বিদ্যুতের মিটার হাতিয়ে চিরকুটে ফোন নম্বর, আসল ‘খেলা’ তার পরে

চুরি যাওয়া মিটারের জায়গায় একটি করে চিরকুট ঝোলানো থাকছে। তাতে লেখা থাকছে, ‘মিটার পাবে’। তার নীচে দেওয়া থাকছে মোবাইল নম্বর। সেই নম্বরে টাকা দিয়ে ফেরত পাওয়া যাচ্ছে চুরি যাওয়া মিটার।

file image of electric meter

বাড়ি, কারখানায় লাগানো বিদ্যুতের মিটার চুরি। প্রতীকী ছবি।

সংবাদ সংস্থা
ঢাকা শেষ আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৬:৩৪
Share: Save:

আজব চোরের উপদ্রব শুরু হয়েছে বাংলাদেশে। ঘন ঘন বিদ্যুতের মিটার চুরি যাচ্ছে। চুরি যাওয়া মিটারের জায়গায় লাগানো চিরকুটে লেখা, ‘মিটার পাবে’। তার পর দেওয়া একটি মোবাইল ফোনের নম্বর। বগুড়া জেলার বহু মানুষ সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখতে পাচ্ছেন বাড়ি বা কারখানার মিটার হাপিশ। চিরকুটে দেওয়া নম্বরে ফোন করলে দাবি করা হচ্ছে টাকা। মোবাইলেই সেই টাকা মেটালে ফেরত আসছে বিদ্যুতের মিটার। ‘প্রথম আলো’র প্রতিবেদনে এমনই দাবি করা হয়েছে।

সমস্যা হল, বিদ্যুতের অফিস থেকে দেওয়া মিটার বাজারে বিক্রি করার উপায় নেই। কিন্তু সেই মিটার চুরি করে যে পরিমাণ অর্থ দাবি করা হচ্ছে, নতুন মিটার পেতে তার চেয়ে ঢের বেশি অর্থ দিতে হয়। তাই পুলিশে অভিযোগ বা লোক জানাজানি না করে কিছু টাকা খরচ করে চোরের কাছ থেকে মিটার ফেরত নিচ্ছেন মানুষ। জানা যাচ্ছে, মিটার ফেরত পেতে গ্রাহকদের দিতে হচ্ছে গড়ে তিন থেকে সাত হাজার টাকা করে।

মঙ্গলবার রাতে ধুনট সদর ইউনিয়নের চালাপাড়া গ্রামের গোলাম মোস্তফা, আবদুল লতিফের চালকল এবং মাটিকোড়া গ্রামের আব্দুল হামিদের কারখানা থেকে বৈদ্যুতিক মিটার চুরি যায়। চুরি যাওয়া মিটারের স্থানে ‘মিটার পাবে’ বলে ফোন নম্বর ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছিল। চুরি যাওয়া মিটারের মালিকেরা ওই দিন সন্ধ্যায় এক এক জন ছয় থেকে সাত হাজার টাকা পাঠিয়ে মিটারগুলি ফেরত পেয়েছেন। কিন্তু এই ঘটনায় ঘুম উড়ে গিয়েছে পুলিশ প্রশাসনের। চালকলের মালিক গোলাম মোস্তফা প্রথম আলোকে বলেন, ‘‘বিদ্যুৎ অফিস থেকে থ্রি ফেজের একটি শিল্প মিটার পেতে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা খরচ। কয়েক দিন আগে আমার চালকল থেকে একটি শিল্প মিটার চুরি যায়। পুলিশের সহযোগিতা না পেয়ে চোরের দেওয়া নম্বরে তিন হাজার টাকা দিয়ে মিটারটি উদ্ধার করেছি।’’

বাংলাদেশের দৈনিক সংবাদপত্র প্রথম আলোয় প্রকাশিত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বিদ্যুৎ সমিতির উপ মহাব্যবস্থাপক মাহবুব জিয়া বলেন, ‘‘চুরির পর মোবাইল নম্বরে টাকা আদায় করে মিটার ফেরতের ঘটনা শুধু ধুনটেই নয়, পুরো জেলার বিভিন্ন উপজেলায় একটি চক্র এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে চলছে। গত এক মাসে ১৫ থেকে ২০টি চুরির ঘটনা ঘটেছে। প্রতিটি মিটারের মূল্য ১৩ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকা। তবে গ্রাহকেরা টাকা দিয়ে মিটারগুলি ফেরত আনলেও তা আর প্রতিস্থাপন করা যাচ্ছে না। পরীক্ষা করার জন্য ঢাকায় পাঠাতে হচ্ছে। গ্রাহকদের ক্ষতির কথা বিবেচনা করে তাঁদের বিনামূল্যে নতুন মিটার দেওয়া হচ্ছে।’’

ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম বলেন, ‘‘বুধবার সকালে দুই ব্যবসায়ী মিটার চুরির অভিযোগ জানিয়েছিলেন। থানা এ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আগেই তাঁরা টাকা দিয়ে মিটার ফেরত নিয়ে এসেছেন। থানা থেকেও অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। চুরির পর চিরকুটটিতে দেওয়া মোবাইল নম্বরের সূত্র ধরে চোর ধরার কাজ চলছে।’’ পুলিশের অনুমান, এটি কোনও ব্যক্তির নয়, সংগঠিত চক্রের কাজ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Theft police UPI
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE