আফ্রিকার জঙ্গলে ‘সিংহ-শিকার’!
পকেটের কড়ি খরচ করলেই রাজকীয় থাকাখাওয়া, জঙ্গল সাফারির সঙ্গে মিলবে এমন সুযোগও। শিকারের জন্য আলাদা ব্যবস্থা করে দিচ্ছে পর্যটন সংস্থাগুলোই। আর তার পরে হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে ‘ট্রফি’ও।
পর্যটনের নামে যে এ ভাবে ‘চোরাশিকার’ চলছে, সে খবর মিলেছিল গোপন সূত্রে। তদন্ত শুরু হয়— ‘অপারেশন সিম্বা’। যার পুরোভাগে ছিলেন ব্রিটিশ কনজ়ারভেটিভ পার্টির নেতা লর্ড অ্যাশক্রফ্ট। রিপোর্ট আসতেই নড়েচড়ে বসেছেন কর্তারা।
তদন্ত রিপোর্ট থেকে জানা যাচ্ছে, আফ্রিকার জঙ্গলে সিংহের সংখ্যা কমছে। কিন্তু বিশেষ ঘেরাটোপে কৃত্রিম উপায়ে প্রজনন ঘটানো হচ্ছে সিংহদের। যাতে শিকারের জন্য সিংহের অভাব না হয়। তার পর হাজার হাজার পাউন্ডের বিনিময়ে ধনী পর্যটকদের সিংহ শিকারের ব্যবস্থা করে দেওয়া হচ্ছে। রাইফেলের নলের সামনে বন্দি সিংহ আত্মরক্ষাও করতে পারছে না। তার পর গুলির আওয়াজ, সিংহের গর্জন আর শিকারির উচ্ছ্বাস।
কখনও কখনও খুব কাছ থেকে গুলি চালাতে দেওয়া হয় শিকারিদের। সে সব দৃশ্যের আবার ছবি তুলে দেওয়া হয়। শিকারের গায়ে পা দিয়ে বীরের মতো দাঁড়িয়ে সে। পরে ট্রফি হিসেবে পর্যটকের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে সিংহের চামড়া।
এ হেন পর্যটন ব্যবসায় ফুলেফেঁপে উঠছে আফ্রিকার কিছু সংস্থা। সেই সঙ্গে ওষুধের ব্যবসা তো রয়েইছে। নিহত সিংহের হাড় থেকে তৈরি হচ্ছে ওষুধ, ছোট গয়না।
‘অপারেশন সিম্বা’ শুরু হয়েছিল একটি ঘটনায়। ব্রিটেনের এক ধনী ব্যক্তির পিছু ধাওয়া করা হয়েছিল। ‘সিম্বা’ নামে একটি সিংহের জন্য ৩ হাজার পাউন্ড দিয়েছিলেন তিনি। ঠিক ছিল, একটি চারপাশ ঘেরা কমপাউন্ডে ছাড়া হবে সিম্বাকে। তাকে গুলি করে শিকার করবে ওই লোকটি। নিহত সিম্বার সঙ্গে ছবিও তুলে দেওয়া হবে তাঁর। কিন্তু শেষমেশ ওই পরিকল্পনা বানচাল হয়ে যায়। সিম্বাকে বাঁচায় একটি উদ্ধারকারী দল। জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল তাকে।
লর্ড অ্যাশক্রফ্ট এ-ও দাবি করেছেন, একটি লোক তাঁকে জানিয়েছিলেন, নিহত সিংহের চামড়া ব্রিটেনে পাচার করার রাস্তাও আছে। হরিণের চামড়ার ভিতরে লুকিয়ে সিংহের চামড়া আনা হয়। শুল্ক দফতরের অফিসাররা টেরও পান না। তদন্ত রিপোর্টে এ-ও দাবি করা হয়েছে, দু’দিনে ৫৪টি সিংহ হত্যা করার খবর রয়েছে। তাদের হাড়গুলো ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থায় পাঠানো হয়। অরণ্যের এই ‘ব্যবসা’ কী ভাবে রোখা যায়, পথ খুঁজছেন অ্যাশক্রফ্টরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy