Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

ফের খানখান ‘ট্রাম্পকেয়ার’

সাত মাসে এই নিয়ে তিন বার! তারিখের পর তারিখ। সংশোধিত প্রস্তাবে ধারাবাহিক সংশোধন। তবু সেই সেনেটেই মাঠে মারা গেল রিপাবলিকানদের গত সাত বছরের স্বপ্ন! দলেরই তিন সেনেটর বেঁকে বসায় ‘ট্রাম্পকেয়ার’ যে আপাতত অবাস্তব, টের পেলেন প্রেসি়ডেন্টও।

হতাশ: ডোনাল্ড ট্রাম্প

হতাশ: ডোনাল্ড ট্রাম্প

সংবাদ সংস্থা
ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০১৭ ০২:২৬
Share: Save:

ফের ধাক্কা। ‘ওবামাকেয়ার’ বাতিলের চেষ্টায় আবারও ব্যর্থ হলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সাত মাসে এই নিয়ে তিন বার! তারিখের পর তারিখ। সংশোধিত প্রস্তাবে ধারাবাহিক সংশোধন। তবু সেই সেনেটেই মাঠে মারা গেল রিপাবলিকানদের গত সাত বছরের স্বপ্ন! দলেরই তিন সেনেটর বেঁকে বসায় ‘ট্রাম্পকেয়ার’ যে আপাতত অবাস্তব, টের পেলেন প্রেসি়ডেন্টও। তবু যথারীতি মচকাতে নারাজ। ‘ট্রাম্পোচিত’ ভঙ্গিতেই আজ তিনি টুইটারে একহাত নেন বিরোধীদের। বলেন, ‘‘৪৮ জন ডেমোক্র্যাট আর ৩ জন রিপাবলিকান মিলেই দেশটাকে ডুবিয়ে ছাড়ল!’’ সাফ জানালেন— আগে ওবামাকেয়ার বাতিল হোক, পরে অন্য চুক্তি।

কিন্তু মার্কিন কংগ্রেসের বাজেট দফতর যে অন্য কথা বলছে! তাদের দাবি, ‘ট্রাম্পকেয়ার’ এলে প্রায় ২ কোটি মার্কিন নাগরিক স্বাস্থ্যবিমার সুযোগ হারাবেন। এতে বিমার প্রিমিয়ামও অন্তত ২০ শতাংশ বাড়বে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। আজ তাই দিনের শুরুতে সেনেট-ভোটে ব্যাপক নাটকীয়তার শেষে দেখা গেল রিপাবলিকানদের ঝুলিতে সব মিলিয়ে ওই ৪৯ ভোট! ১০০ সদস্যের সেনেটে ৫২ জন রিপাবলিকান। কিন্তু ডেমোক্র্যাটদের সঙ্গে সুর মিলিয়ে এ দিন ওবামাকেয়ার বাতিলের প্রস্তাব সরাসরি নাকচ করে দেন রিপাবলিকান জন ম্যাকেন। স্পষ্ট ভাষণে বুঝিয়ে দেন, দেশে কেন এখনও ওবামাকেয়ারের কোনও বিকল্প নেই। তাঁকে সমর্থন করেন আরও দুই রিপাবলিকান সেনেটর। যার প্রতিক্রিয়ায় সেনেট ছাড়ার মুখে রিপাবলিকান নেতা মিচ ম্যাককনেল বলেন, ‘‘অনুতাপ ছাড়া আর কিছু করার নেই আমাদের। আমাদের দুর্ভাগ্য যে, এত দিনেও আমরা স্বাস্থ্যবিমার ক্ষেত্রে ভাল কোনও বিকল্প আনতে পারলাম না।’’

প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা কিন্তু দেশের সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষকে স্বাস্থ্যবিমার সুবিধা দিতেই ২০১০-এ চালু করেছিলেন ‘পেশেন্ট প্রোটেকশন অ্যান্ড অ্যাফোর্ডেবল কেয়ার অ্যাক্ট’। যারই পোশাকি নাম ‘ওবামাকেয়ার’। যে সংস্থায় ৫০-এর বেশি কর্মী, তাঁদের সবাইকে বিমার আওতায় আনার কথা বলা হয়েছিল এই প্রকল্পে। কিন্তু এতে সরকারি তহবিলের উপর চাপ বেড়েছে বলে গোড়া থেকেই সুর চড়িয়ে আসছিলেন রিপাবলিকানরা। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে বিষয়টিকে হাতিয়ার করেন ট্রাম্পও। কিন্তু অবিলম্বে বুঝতে পারেন, এই পরিষেবা পুরোপুরি বাতিল সম্ভব নয়। হোয়াইট হাউসে আসার দ্বিতীয় দিনেই ট্রাম্প তাই ওবামাকেয়ারের প্রভাব কাটাতে চেয়ে সই করেন বিশেষ প্রশাসনিক নির্দেশে। গো়ড়াতেই যা খারিজ করে দেয় কংগ্রেস। তার পর এপ্রিলে রিপাবলিকান নিয়ন্ত্রিত প্রতিনিধি পরিষদে অল্প ব্যবধানে ‘ট্রাম্পকেয়ার’ পাশ হলেও আটকে যায় সেনেটে।

সংশোধিত প্রস্তাবে প্রয়োজনীয় সমর্থন জোটাতে না পেরে দিন দশেক আগে দ্বিতীয় বার রিপাবলিকানরা ধাক্কা খেয়েছিল সেনেটে। তার পর আজ আবার। হাউসের স্পিকার পল রায়ান একটা চেষ্টা করেছিলেন বটে। কিন্তু দমিয়ে রাখা যায়নি ‘বিদ্রোহী’ ম্যাকেনকে। ভোটের ফল কোনও ভাবে ৫০-৫০ হলে, বাড়তি সমর্থন জোগাতে সেনেটে আনা হয়েছিল ভাইস-প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সকেও। কিন্তু কাজে লাগেনি সেই ‘ট্রাম্প-কার্ডও’!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE