Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

তিউনিসের জাদুঘরে হামলা, ১৭ বিদেশি-সহ হত ২১

এলোপাথাড়ি গুলি চালিয়ে ১৭ জন বিদেশি পর্যটককে হত্যা করল সেনার পোশাক পরা এক দল বন্দুকবাজ। বুধবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে তিউনিসিয়ার রাজধানী তিউনিসের বার্দো জাদুঘরে। প্রধানমন্ত্রী হাবিব এসেদ জানান, হতদের মধ্যে রয়েছেন জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি, পোলান্ড এবং স্পেনের কয়েক জন নাগরিক। লড়াই-পাল্টা লড়াইয়ে দুই আততায়ী, পর্যটক, পুলিশকর্মী-সহ ২১ জন নিহত হন। হাবিব এসেদ বলেন, “অভিযান শেষ হয়েছে। জঙ্গিরা আর জাদুঘরে নেই।”

প্রাণ বাঁচাতে বার্দো জাদুঘর থেকে পালাচ্ছেন পর্যটকেরা।  ছবি: এএফপি।

প্রাণ বাঁচাতে বার্দো জাদুঘর থেকে পালাচ্ছেন পর্যটকেরা। ছবি: এএফপি।

সংবাদ সংস্থা
তিউনিস শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০১৫ ০২:৫৭
Share: Save:

এলোপাথাড়ি গুলি চালিয়ে ১৭ জন বিদেশি পর্যটককে হত্যা করল সেনার পোশাক পরা এক দল বন্দুকবাজ। বুধবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে তিউনিসিয়ার রাজধানী তিউনিসের বার্দো জাদুঘরে।

প্রধানমন্ত্রী হাবিব এসেদ জানান, হতদের মধ্যে রয়েছেন জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি, পোলান্ড এবং স্পেনের কয়েক জন নাগরিক। লড়াই-পাল্টা লড়াইয়ে দুই আততায়ী, পর্যটক, পুলিশকর্মী-সহ ২১ জন নিহত হন। হাবিব এসেদ বলেন, “অভিযান শেষ হয়েছে। জঙ্গিরা আর জাদুঘরে নেই।” সরকারি সূত্রে খবর, তিউনিসের পার্লামেন্ট চত্বর লাগোয়া জাদুঘরে বন্দুকবাজদের গুলিতে পর্যটকদের পাশাপাশি জখম হন জাদুঘরের এক নিরাপত্তারক্ষীও। পরে হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে সম্প্রচারিত খবর অনুসারে, গুলি চালনার পরে কয়েক জন পর্যটককে জাদুঘরের মধ্যে পণবন্দি করে দুষ্কৃতীরা। সরকারি এক আধিকারিক জানান, দুপুরে পার্লামেন্টে সন্ত্রাসবিরোধী আইন নিয়ে আলোচনার সময়ে প্রথম গুলির শব্দ পাওয়া যায়।

পণবন্দিদের উদ্ধার করতে জাতীয় নিরাপত্তা বাহিনী ও পুলিশের যৌথ দল ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। খালি করা হয় এলাকা। ঘণ্টা তিনেক ধরে চলে গুলির লড়াই। পুলিশের গুলিতে দুই বন্দুকবাজের মৃত্যু হয়। গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান এক পুলিশকর্মীও। অন্য একটি সূত্র বলছে, দু’জন নয়, জাদুঘরে ছিল তিন সশস্ত্র দুষ্কৃতী। প্রধানমন্ত্রীর আশঙ্কা, পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে জাদুঘর থেকে কয়েক জন বন্দুকবাজ পালিয়েও গিয়ে থাকতে পারে। এই ঘটনায় ২১ জন নিহত হয়েছেন বলে রাত পর্যন্ত সরকারি সূত্রে খবর।

এই হামলার নিন্দা করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর টুইট, “তিউনিসিয়ায় এই হামলা নিন্দনীয়। এই দুঃসময়ে আমরা তিউনিসিয়ার মানুষের পাশে আছি। পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হবে।”

তিউনিসিয়ার সরকারি সংবাদমাধ্যম টিএপি জানাচ্ছে, বার্দো জাদুঘরটি তিউনিসের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ। সেখানে বিদেশি পর্যটকদের ভিড় থাকে। আজও তার অন্যথা হয়নি। জাদুঘর থেকে পণবন্দিদের উদ্ধার করতে গিয়ে বন্দুকবাজদের সঙ্গে পুলিশের গুলির লড়াই চলে। ঘণ্টা তিনেক পরে সরকারের তরফে অভিযান শেষ হওয়ার কথা জানানো হয়। জানানো হয়, পণবন্দিদের সকলকে উদ্ধার করা হয়েছে।

কোনও জঙ্গিগোষ্ঠী রাত পর্যন্ত এই হামলার দায় স্বীকার না করলেও, প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, এই হামলায় হাত থাকতে পারে জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস)। পুলিশের তথ্য অনুসারে, আইএস-এর হয়ে লড়াই করতে ইতিমধ্যে তিউনিসিয়ার হাজার তিনেক নাগরিক দেশ ছেড়েছেন। জঙ্গিযোগের অভিযোগে গোটা দেশ থেকে শতাধিক মানুষকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তার উপর, পড়শি দেশ লিবিয়ার মসনদ দখলে দুই বিরোধী গোষ্ঠীর সরকার গঠন ও বিরোধী জঙ্গিগোষ্ঠীর রমরমায় তিউনিসিয়াতেও বাড়ছে জঙ্গি দৌরাত্ম্য।

যদিও পর্যটকদের লক্ষ্য করে এমন হামলার ঘটনা তিউনিসিয়ায় বিরল। যে দেশের অর্থনীতি পর্যটনের উপরেই নির্ভরশীল, সেখানে পর্যটকদের উপর হামলার নিন্দা করেছেন প্রধানমন্ত্রী হাবিব এসেদ। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে প্রশাসন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE