চিনের এক নামী রেস্তরাঁয় ঢুকে স্যুপের পাত্রে প্রস্রাব করার অভিযোগে দুই কিশোরকে মোট ২২ লক্ষ ইউয়ান বা ৩,০৯,০০০ মার্কিন ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় ২,৭২,১৬,৪৪২ টাকা) জরিমানার নির্দেশ দিল আদালত। ঘটনার সাত মাস পর অবশেষে শাস্তি পেল অভিযুক্ত দুই কিশোর।
ঘটনাটি ঘটে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে। চিনের বৃহত্তম এবং সবচেয়ে জনপ্রিয় হটপট রেস্তরাঁ হাইদিলাও-এর সাংহাই শাখায় খেতে ঢুকেছিল ১৭ বছরের দুই কিশোর। মত্ত অবস্থায় রেস্তরাঁয় ঢুকেই তারা সোজা চলে যায় রান্নাঘরের দিকে। সেখানে তখন বড় এক গামলায় ক্রেতাদের জন্য স্যুপ ফোটানো হচ্ছিল। দেখেই মাথায় কুবুদ্ধি চাপে দুই বন্ধুর। চুপিসারে গিয়ে স্যুপের গামলায় প্রস্রাব করে আসে তারা। সেই ভিডিয়ো রেকর্ড করে সমাজমাধ্যমে পোস্টও করে দুই কিশোর। মুহূর্তের মধ্যেই সেই ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। নানা মহলে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। সে দিনের পর থেকে ওই রেস্তরাঁয় যত জন খেতে গিয়েছিলেন, তাঁদের সকলকে টাকা ফেরত দেওয়ার পাশাপাশি ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন হাইদিলাও কর্তৃপক্ষ।
সাত মাস পর গত শুক্রবার ওই মামলায় রায় দিয়েছে সাংহাইয়ের একটি আদালত। বিচারকের পর্যবেক্ষণ, অভিযুক্ত দুই কিশোর তাদের এই ‘অপমানজনক’ কাজের মাধ্যমে সংস্থার সম্পত্তি এবং সুনাম নষ্ট করেছে। ওই ঘটনায় শুধু খাবার দূষিত হওয়াই নয়, জনসাধারণের মধ্যেও তীব্র অস্বস্তি সৃষ্টি হয়েছে। আদালতের আরও বক্তব্য, দুই কিশোরের বাবা-মা অভিভাবক হিসাবে দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ। তাই দুই অভিযুক্তের পরিবারকে মোটা অঙ্কের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে রেস্তরাঁকে। সংস্থার সুনাম নষ্ট করার জন্য ২০ লক্ষ ইউয়ান, বাসনপত্র নোংরা করার জন্য ১,৩০,০০০ ইউয়ান এবং আইনি খরচ বাবদ ৭০,০০০ ইউয়ান দিতে হবে দু’জনকে।
আরও পড়ুন:
উল্লেখ্য, ওই ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়তেই গত ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ৮ মার্চের মধ্যে সাংহাই হাইদিলাও-এ খেতে যাওয়া ৪,০০০ এরও বেশি গ্রাহককে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়। সম্পূর্ণ অর্থ ফেরত দেওয়ার পাশাপাশি ক্ষতিপূরণ বাবদ দেওয়া হয় বিলের ১০ গুণ টাকা। রান্নাঘরের সমস্ত সরঞ্জামও তড়িঘড়ি বদলে ফেলা হয়। শুরু হয় গোটা রেস্তরাঁ পরিষ্কার করা এবং জীবাণুমুক্তকরণের কাজ। এ সবের ফলে মার্চ মাসে সব মিলিয়ে ২ কোটি ৩০ লক্ষ ইউয়ানেরও বেশি ক্ষতি হয় ওই সংস্থার— ভারতীয় মুদ্রায় যে লোকসানের হিসেব প্রায় ২৮৫ কোটি টাকা!