Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Uyghurs

উইঘুর মুসলিমদের উপর অত্যাচার চালাচ্ছে চিন, উদ্বেগ রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার পরিষদের

চল্লিশের দশকে স্বাধীন রাষ্ট্র পূর্ব তুর্কিস্তান দখল করে শিনজিয়াং প্রদেশে পরিণত করেছিল চিন। তার পর উইঘুররা প্রতিরোধের লড়াই শুরু করেন। সেই সঙ্গে শুরু হয় চিনা সেনার অত্যাচারও।

জিনপিং সরকারে উইঘুর নিপীড়নের রিপোর্ট পেশ হয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার পরিষদে।

জিনপিং সরকারে উইঘুর নিপীড়নের রিপোর্ট পেশ হয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার পরিষদে। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

সংবাদ সংস্থা
জেনিভা শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১২:০৭
Share: Save:

এত দিন পশ্চিমী দুনিয়ার দাবি আর সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনেই অভিযোগ সীমাবদ্ধ ছিল। এ বার চিনের শিনজিয়াং প্রদেশে মুসলিম নিপীড়নের অভিযোগ তোলা হল রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার পরিষদে। ঘটনাচক্রে, যে পরিষদের সদস্য চিনও। রিপোর্ট বলা হয়েছে, ‘শিনজিয়াংয়ে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগ রয়েছে চিনের বিরুদ্ধে।’

রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার পরিষদের হাই কমিশনার মিশেল ব্যাশলেট তাঁর মেয়াদ শেষের প্রাক্‌মুহূর্তে যে রিপোর্ট পেশ করেছেন তাতে স্পষ্ট ভাষায় বলা হয়েছে, উত্তর-পশ্চিমের ‘স্বশাসিত’ শিনজিয়াং প্রদেশে চিন সংখ্যালঘু উইঘুর মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষের উপর রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন চালানো হচ্ছে। রিপোর্ট পেশ করে চিলির প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট মিশেলের ঘোষণা, ‘‘আমি বলেছিলাম কার্যকালের মেয়াদ শেষের আগেই আমি এটি পেশ করব। আমি কথা রাখতে পেরেছি।’’

চল্লিশের দশকে স্বাধীন রাষ্ট্র পূর্ব তুর্কিস্তান দখল করে শিনজিয়াং প্রদেশ নামকরণ করেছিলেন চিনের প্রয়াত চেয়ারম্যান মাও জে দং। তার পর থেকেই সেখানকার বাসিন্দা উইঘুর মুসলিমদের একাংশ চিনা দখলদারির বিরুদ্ধে প্রতিরোধের লড়াই শুরু করেন। আর তখন থেকেই শুরু হয় ‘বিদ্রোহ দমনের’ অছিলায় লালফৌজের নৃশংস অত্যাচার। গত ছ’দশকে চিনা সেনার হামলায় সেখানে লক্ষাধিক মুসলিম ভূমিপুত্র নিহত হয়েছেন বলে অভিযোগ।

গত কয়েক বছর ধরেই অভিযোগ উঠেছে, উইঘুর এবং তুর্কিভাষী ১০ লক্ষেরও বেশি ইসলাম ধর্মাবলম্বীকে শিনজিয়াংয়ের বিভিন্ন ‘ডিটেনশন ক্যাম্পে’ বন্দি করে রাখা হয়েছে। বলপূর্বক তাঁদের ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান ত্যাগ করতে বাধ্য করা হচ্ছে। রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্টেও উইঘুরদের বন্দি করার অভিযোগে নিশানা করা হয়েছে ষি জিনপিং সরকারকে।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার একটি সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদন জানানো হয়েছিল, আন্তর্জাতিক চোরাবাজারে বিক্রি হওয়া কিডনি, লিভার-সহ বিভিন্ন মানব অঙ্গপ্রত্যঙ্গের বড় অংশের মালিক চিনের বন্দিশিবিরে আটক হতভাগ্য উইঘুর মুসলিমরা! জোর করে তাদের অঙ্গ কেটে বিক্রি করছে বেজিং!

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার একটি সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদন জানানো হয়েছিল, আন্তর্জাতিক চোরাবাজারে বিক্রি হওয়া কিডনি, লিভার-সহ বিভিন্ন মানব অঙ্গপ্রত্যঙ্গের বড় অংশের মালিক চিনের বন্দিশিবিরে আটক হতভাগ্য উইঘুর মুসলিমরা! জোর করে তাদের অঙ্গ কেটে বিক্রি করছে বেজিং!

সাম্প্রতিক কালে চিন সরকার শিনজিয়াং প্রদেশে প্রায় ১৬ হাজার মসজিদ ধ্বংস করেছে বলেও অভিযোগ। এর মধ্যে গত চার বছরেই অধিকাংশ মসজিদ ভাঙা হয়েছে। নষ্ট করা হয়েছে, মাজার, কবরস্থান এবং ইসলামিক তীর্থযাত্রার পথ ছিল শিনজিংয়া প্রদেশের রাজধানী উরুমকি এবং বাণিজ্য শহর কাশগড়ে প্রকাশ্যে নমাজ পাঠ, রোজা পালনের মতো ধর্মীয় কর্মসূচিতেও নানা বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Uyghurs Xinjiang Muslims China PLA
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE