Advertisement
E-Paper

তিন মাসের ‘যুদ্ধবিরতি’ চিন ও আমেরিকার! শুল্ক বনাম পাল্টা শুল্ক বসানোর লাগাতার লড়াই স্থগিত জেনেভা বৈঠকে

ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর চিনের বিরুদ্ধে ‘শুল্কযুদ্ধ’ শুরু করে দিয়েছিলেন। প্রত্যাঘাত করেছিল চিনও। দফায় দফায় একে অন্যের উপর শুল্ক চাপায় দুই দেশ। সর্বশেষ হিসাবে, আমেরিকায় চিনা পণ্যে ১৪৫ শতাংশ এবং চিনে মার্কিন পণ্যে ১২৫ শতাংশ শুল্ক চাপানো হয়েছিল।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১২ মে ২০২৫ ১৩:৪৬
চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিংপিং এবং আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিংপিং এবং আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

দফায় দফায় আলোচনার পরে আমেরিকা এবং চিনের মধ্যে শুল্কযুদ্ধের শীতলতা কাটতে শুরু করল। আপাতত ৯০ দিনের জন্য দু’পক্ষই একে অন্যের পণ্যের উপর শুল্কের হার ১১৫ শতাংশ কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গত সপ্তাহে সুইৎজ়ারল্যান্ডের জেনেভায় বৈঠকে বসেছিলেন চিন এবং আমেরিকার প্রতিনিধিরা। জেনেভা বৈঠকের পরেই দু’দেশের শুল্কযুদ্ধে সাময়িক বিরতির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ‘দ্য গার্ডিয়ান’-এর প্রতিবেদন অনুসারে, সোমবার মার্কিন রাজস্বসচিব স্কট বেসান্ত জানিয়েছেন, ৯০ দিনের জন্য ১১৫ শতাংশ শুল্ক স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দু’দেশই।

শুল্কে আমেরিকা এবং চিনের তিন মাসের ‘যুদ্ধবিরতি’র সিদ্ধান্তের ফলে এখন চিনা বাজারে মার্কিন পণ্যের উপর ১০ শতাংশ এবং আমেরিকার বাজারে চিনা পণ্যের উপর ৩০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর থাকবে। বস্তুত, ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেরিকায় ক্ষমতায় আসার পরেই দু’দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্কের উপর প্রভাব পড়তে শুরু করে। চিনের সঙ্গে সরাসরি শুল্কযুদ্ধে নেমে পড়েন ট্রাম্প।

শুরুটা হয়েছিল ব্যথা নিরাময়ের ওষুধ ফেন্টানাইলকে কেন্দ্র করে। ট্রাম্পের অভিযোগ ছিল, আমেরিকার বাজারে নিষিদ্ধ ওই ওষুধটি চিন থেকে তাঁদের দেশে প্রবেশ করছে। ওই সময়ে কানাডা, মেক্সিকো এবং চিনের উপর শুল্ক চাপানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি। পরে ভারত-সহ আরও বিভিন্ন দেশের উপর শুল্ক চাপান ট্রাম্প। শুল্ক বৃদ্ধি হয় চিনা পণ্যের উপরেও। শুল্কযুদ্ধে প্রত্যাঘাত করে বেজিংও। তারাও মার্কিন পণ্যে পাল্টা শুল্ক চাপানোর সিদ্ধান্ত নেয়। এই ভাবে দফায় দফায় একে অন্যের উপর শুল্ক বৃদ্ধি করতে থাকে।

পরে অন্য দেশগুলির উপর শুল্ক চাপানোর সিদ্ধান্ত ৯০ দিনের জন্য স্থগিত রাখলেও চিনকে সেই ছাড় দেয়নি ট্রাম্প প্রশাসন। ফেন্টানাইল-বিতর্কে চলতি বছরের শুরুর দিকেই চিনা পণ্যের উপর ২০ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছিল আমেরিকা। পরে অন্য দেশগুলির উপর শুল্ক চাপানোর সময় চিনা পণ্যের উপরে আরও ৩৪ শতাংশ শুল্ক চাপান ট্রাম্প। চিন পাল্টা শুল্ক চাপালে ট্রাম্প আরও ৫০ শতাংশ শুল্ক বৃদ্ধির কথা ঘোষণা করেন। চিনও প্রত্যাঘাত করতে থাকে মার্কিন পণ্যের উপর। এই ভাবে দফায় দফায় একে অন্যের পণ্যে শুল্ক চাপাতে থাকায় শেষ পর্যন্ত আমেরিকার বাজারে চিনা পণ্যের উপর ১৪৫ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হয়। পাল্টা চিনা বাজারে মার্কিন পণ্যের উপর ১২৫ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হয়।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে প্রভাব পড়তে শুরু করেছিল আমেরিকার শেয়ার বাজারের উপরেও। মার্কিন বাণিজ্য এবং শুল্কনীতি ঘিরে আমেরিকার আমজনতাও প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছিলেন। এই পরিস্থিতিতে গত মাসের শেষের দিকেই চিনা পণ্যের উপর শুল্ক কমানোর আভাস দিয়েছিলেন ট্রাম্প। তিনি জানিয়েছিলেন, চিনা পণ্যের উপর শুল্কের পরিমাণ ‘অনেকটাই কমাতে’ পারে আমেরিকা। তবে সেটি কখনওই শূন্য হবে না, তা-ও জানিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এই আবহে গত শনিবার সুইৎজ়ারল্যান্ডের জেনেভায় দুই দেশের উচ্চপদস্থ কর্তারা নিজেদের মধ্যে বৈঠকে বসেন। রবিবারও আলোচনা হয়। ওই বৈঠকের পরেই শুল্কযুদ্ধে সাময়িক ইতি টানার সিদ্ধান্ত নিল আমেরিকা এবং চিন।

US Tariff War USA China Donald Trump
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy