Advertisement
E-Paper

ক্যাপিটলে হামলা, গোপন সুড়ঙ্গ দিয়ে পালিয়ে বাঁচলেন সেনেটররা

হাউস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির ফ্লোর ডিরেক্টর কেইথ স্টার্ন বলেন, ‘‘প্রত্যেকে নিজের নিজের আসনে বসে পড়ুন। শান্ত থাকুন।’’

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০২১ ১১:০৩
বাইরে চলছে তাণ্ডব। ভিতরে আটকে সেনেটররা। ছবি: রয়টার্স

বাইরে চলছে তাণ্ডব। ভিতরে আটকে সেনেটররা। ছবি: রয়টার্স

বাইরে তখন তাণ্ডব চালাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থকরা। ভিতরে ক্যাপিটলের সব প্রবেশদ্বার বন্ধ। দরজার দিকে তাক করে বন্দুক উঁচিয়ে নিরাপত্তারক্ষীরা। যে কোনও সময় দরজা ভেঙে ঢুকে পড়তে পারে উগ্র সমর্থকরা। শেষমেশ গোপন সুড়ঙ্গ দিয়ে নিরাপদ ঘরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হল সেনেটরদের। বুধবার (আমেরিকান সময় অনুযায়ী) এমনই নজিরবিহীন রুদ্ধশ্বাস নাটকীয় পরিস্থিতি দেখল আমেরিকার আইনসভা।

ভিতরে চলছে ভরা সভা। ভারতের সংসদ ভবনের মতোই চুল চেরা বিতর্কে মগ্ন আইনসভার নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা। রয়েছেন সাংবাদিকরাও। ঘটনাচক্রে এই আলোচনার শেষেই ইলেক্টরাল কলেজের ভোটের হিসেবে সরকারি ভাবে জো বাইডেন নির্বাচিত হবেন। ট্রাম্পের রিপাবলিকান সেনেটররা এখনও কার্যত পরাজয় মেনে নিতে নারাজ। আলোচনা, বিতর্ক, প্রশ্নোত্তর-এর মধ্যেই চলছে কটাক্ষ, টিকা-টিপ্পনি। তার মধ্যেই বাইরে হই হট্টগোল। কয়েক হাজার জনতার চিৎকার। তাঁদের গতিমুখ ক্যাপিটল ভবন। ক্যাপিটলের নিরাপত্তারক্ষীরাও তাঁদের আটকাতে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছেন। এই গণ্ডগোলের খবর তখন পৌঁছে গিয়েছে ভিতরেও।

সেনেটররাও বাইরের দিকে উঁকিঝুঁকি মারছেন বাইরে ঠিক কী হয়েছে, বোঝার জন্য। আমেরিকার ইতিহাসে এমন ঘটনা কোনও দিন ঘটেনি। ফলে তাঁরাও ঠিক বুঝে উঠতে পারছিলেন না, কী হয়েছে। তখনও ততটা ‘সিরিয়াসলি’ নেননি সেনেটররা। কিন্তু বিষয়টা যে ট্রাম্প সমর্থকদের ‘হামলা’ সেটা স্পষ্ট হয় যখন একের পর এক দরজা সজোরে বন্ধ করে দিচ্ছেন নিরাপত্তারক্ষীরা। পর পর ভেঙে পড়ছে দরজা-জানালার কাচ। ট্রাম্পের রিপাবলিকান সেনেটরদের দিকে কটাক্ষ ছুড়ে দিচ্ছেন কেউ কেউ— ‘‘ডাকুন আপনার নেতাকে! ওঁর জন্যই তো এ সব হচ্ছে।’’

আরও পড়ুন: ক্যাপিটল বিল্ডিংয়ে ট্রাম্প সমর্থকদের হামলা, সংঘর্ষে মৃত ৪, উত্তাল আমেরিকা

কিন্তু বিষয়টা যে ভয়ানক, সেটা সেনেটররা টের পেলেন আরও কিছুটা পরে। ক্যাপিটলের মূল দরজা শুধু বন্ধ করাই নয়, ভিতর থেকে আসবাবপত্র রেখে সাপোর্ট দিয়ে দিয়েছেন নিরাপত্তারক্ষীরা। হাউস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির ফ্লোর ডিরেক্টর কেইথ স্টার্ন বলেন, ‘‘প্রত্যেকে নিজের নিজের আসনে বসে পড়ুন। শান্ত থাকুন।’’ এর মধ্যেই বাইরে কাঁদানে গ্যাসের মতো কিছু একটা ছোড়া হয় হামলাকারীদের আটকানোর জন্য। এ বার ঘোষণা, ‘সিটের নীচে রাখা গ্যাস মাস্ক পরে নিন সবাই’। যে কোনও সময় যে কোনও দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকতে পারে বাইরের আতঙ্ক। গোড়ার দিকে যেটা ছিল কৌতূহলের বিষয়, সেটাই হয়ে দাঁড়াল বিভীষিকা।

আরও পড়ুন: ‘পৃথিবীর গণতন্ত্রের উপর হামলা’, ক্যাপিটল বিল্ডিংয়ে তাণ্ডবের নিন্দায় সরব গোটা বিশ্ব

শেষ পর্যন্ত আর ঝুঁকি নেননি ক্যাপিটলের নিরাপত্তা অফিসাররা। সেনেটরদের বললেন, সুড়ঙ্গ দিয়ে নিরাপদ কক্ষে পৌঁছে যেতে। সেই ভাবেই ফাঁকা করা হল ক্যাপিটল। হাউস সার্জেন্টকে কোনও এক নিরাপত্তা অফিসারকে নির্দেশ দিতে শোনা যায়, ‘‘ক্যাপটলকে আমরা যেন নিরাপদ রাখতে পারি, সেটা নিশ্চিত করুন।’’

সব মিলিয়ে, রুদ্ধশ্বাস এক নাটকের সাক্ষী থাকল ক্যাপিটল এবং সেনেটররা।

US Capitol Senetor Capitol Attack
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy