ভারতের উপর শুল্ক চাপানো কাজে দিয়েছে। আলাস্কায় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের আগে এমনটাই দাবি করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর দাবি, “সব কিছুরই একটা প্রভাব থাকে।”
রাশিয়া এবং ইউক্রেনের যুদ্ধ থামাতে তৎপর হয়েছেন ট্রাম্প। শুক্রবার সেই লক্ষ্যেই পুতিনের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসছেন তিনি। ভারতীয় সময় অনুসারে, শুক্রবার বেশি রাতের দিকে ওই বৈঠক শুরু হওয়ার কথা। তার আগে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ‘ফক্স নিউজ় রেডিয়ো’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ বিষয়ে মন্তব্য করেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট। ট্রাম্পের দাবি, অতিরিক্ত শুল্ক চাপানোর ফলে রাশিয়া থেকে তেল কেনা থেকে তিনি ভারতকে দূরে রাখতে পেরেছেন। যদিও রাশিয়ার থেকে ভারত তেল কেনা বন্ধ রেখেছে বলে কোনও তথ্য নয়াদিল্লি থেকে প্রকাশ্যে জানানো হয়নি। বরং, ভারত সরকারের সূত্রের দাবি, রাশিয়া থেকে তেল কেনা অব্যাহত রাখবে নয়াদিল্লি।
রাশিয়া থেকে জ্বালানি আমদানি করা দেশগুলির মধ্যে ভারত যে দ্বিতীয় বৃহত্তম রাষ্ট্র, তা সাম্প্রতিক সময়ে বার বার উল্লেখ করেছেন ট্রাম্প। এমনকি মস্কোর সঙ্গে নয়াদিল্লির বাণিজ্যিক সম্পর্কের জন্যই যে তিনি ভারতের উপর চড়া শুল্ক চাপাচ্ছেন, তা-ও গোপন করেননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তাঁর দাবি, চিন এবং ভারত— এই দুই দেশই রাশিয়ার থেকে সবচেয়ে বেশি তেল কেনে। আলাস্কা-বৈঠকের আগে ফের এক বার তা নিয়ে মন্তব্য করেন তিনি। মার্কিন প্রেসিডেন্টের মতে, এই শুল্ক চাপানোর ফলেই সম্ভবত পুতিন বৈঠকের জন্য রাজি হয়েছেন। সাক্ষাৎকারে ট্রাম্পের দাবি, “যখন কেউ নিজের দ্বিতীয় বৃহত্তম ক্রেতাকে হারাচ্ছে, তখন সবচেয়ে বড় ক্রেতাকেও হারানোর সম্ভাবনা থাকে। আমার মতে, সম্ভবত এই বিষয়টিই কাজ করেছে।”
আরও পড়ুন:
আলাস্কায় ট্রাম্প-পুতিন বৈঠক ভারতের জন্যও যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। আমেরিকার সঙ্গে ভারতের কূটনৈতিক টানাপড়েন মূলে রয়েছে রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ। ট্রাম্পের দাবি, ভারতকে বিক্রি করা তেলের লভ্যাংশ ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ব্যবহার করছেন পুতিন। এটা রুখতে ভারতের উপর শুল্ক চাপিয়েছেন তিনি। ট্রাম্প-পুতিন বৈঠকে রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধবিরতি বিষয়ে ইতিবাচক কোনও অগ্রগতি হলে তা ভারতের জন্যও লাভদায়ক হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। আলাস্কা-বৈঠককে স্বাগত জানিয়ে ইতিমধ্যে বিবৃতিও দিয়েছে নয়াদিল্লি।
গত সপ্তাহেই ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ১৫ অগস্ট বৈঠকের জন্য আমেরিকা এবং রাশিয়া যে সমঝোতায় পৌঁছেছে, তাকে ভারত স্বাগত জানাচ্ছে। এই বৈঠকের মাধ্যমে ইউক্রেন সমস্যার সমাধানের এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার সম্ভাব্য পথ খুলে যেতে পারে বলেও মনে করছে ভারত। তবে ভারত যে নিজের স্বার্থের সঙ্গে কোনও আপস করবে না, তা স্পষ্টতই বুঝিয়ে দিয়েছে নয়াদিল্লি। কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়ালও সম্প্রতি জানিয়ে দিয়েছেন, ভারত এখন অনেক শক্তিশালী রাষ্ট্র এবং কোনও ভাবেই মাথা নত করবে না।