Advertisement
E-Paper

‘বাঙ্কার বাস্টার’ কি ইরানের পাতাল প্রাচীর ভাঙতে পারবে? নিশ্চিত না হয়ে ইজ়রায়েলের আবেদনে সাড়া দেবেন না ট্রাম্প

ইরানের ফোরডোয় পাহাড় খনন করে পরমাণুকেন্দ্র তৈরি করা হয়েছে। সেটি মাটি থেকে কত গভীরে, তা স্পষ্ট নয়। তবে ইজ়রায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের অনুমান, খুব বেশি হলে ৯০ মিটার গভীরে হতে পারে সেটি।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০২৫ ১৭:০০
‘বাঙ্কার বাস্টার’ বোমার বিস্ফোরণ।

‘বাঙ্কার বাস্টার’ বোমার বিস্ফোরণ। ছবি: রয়টার্স।

ইরানে ‘বাঙ্কার বাস্টার’ বোমা দিয়ে হামলা চালানোর জন্য আমেরিকার কাছে জোরাজুরি শুরু করেছে ইজ়রায়েল! তবে এই নিয়ে এখনও কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেননি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে এই বোমার ক্ষমতা কত দূর, তা নিশ্চিত হতে চাইছেন তিনি।

ইরানের ফোরডোয় পরমাণুকেন্দ্রে হামলা চালিয়েছিল ইজ়রায়েলি বাহিনী। তবে রাষ্ট্রপুঞ্জের আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ) জানিয়েছে, সেটির কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। ইরানের এই পরমাণুকেন্দ্রটি মাটির অনেক গভীরে অবস্থিত। পাহাড় খনন করে তৈরি করা হয়েছে ফোরডোর পরমাণুকেন্দ্রটি। সংবাদমাধ্যম ‘দ্য গার্ডিয়ান’ জানিয়েছে, আমেরিকার ‘বাঙ্কার বাস্টার’ বোমা ফোরডোয় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্রকে পুরোপুরি ধ্বংস করতে পারবে কি না, তা নিশ্চিত হতে চান ট্রাম্প। যদি সেটি পুরোপুরি ধ্বংস করা সম্ভব হয়, তা হলেই ইরানে হামলা করার কোনও অর্থ দাঁড়ায়। সূত্রের খবর, আমেরিকার প্রতিরক্ষা আধিকারিকদের এমনটাই জানিয়েছেন ট্রাম্প।

ইরানের ওই পরমাণুকেন্দ্রটি মাটি থেকে কতটা গভীরে তা পুরোপুরি স্পষ্ট নয়। তবে ইজ়রায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের অনুমান, মাটি থেকে খুব বেশি হলে ৩০০ ফুট (৯০ মিটার) গভীরে থাকতে পারে ওই পরমাণুকেন্দ্রটি। সূত্রের খবর, ট্রাম্পকে আমেরিকার সামরিক আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, ‘বাঙ্কার বাস্টার’ বোমা জিবিইউ-৫৭ দিয়ে হামলা চালালে ফোরডোয় পরমাণুকেন্দ্র ধ্বংস করা যাবে। বস্তুত, এই বোমাগুলির এক একটির ওজন ১৩.৬ টন। তবে সামরিক আধিকারিকদের কথা শুনে পুরোপুরি নিশ্চিত হতে পারেননি ট্রাম্প। তাই আপাতত সেটি নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন না তিনি। বরং, আমেরিকা যুদ্ধে জড়িত হতে পারে, এই ভয়ে ইরান নতুন করে আলোচনায় বসতে চাইবে বলে মনে করছেন তিনি।

তবে শুধুমাত্র একটি ‘বাঙ্কার বাস্টার’ দিয়ে ইরানের পরমাণুকেন্দ্র ধ্বংস করা সম্ভব নয় বলেই মনে করছেন অনেকে। ‘দ্য গার্ডিয়ান’ বিভিন্ন সূত্র মারফত জানিয়েছে, এর জন্য বেশ কয়েকটি জিবিইউ-৫৭ ‘বাঙ্কার বাস্টার’ বোমা প্রয়োজন। তার সঙ্গে কিছু সাধারণ বোমাও প্রয়োজন। উপরের দিকের মাটিকে আলগা করার জন্য সাধারণ বোমাগুলি ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে তার পরেও ফোরডোর পরমাণুকেন্দ্র কতটা ধ্বংস করা যাবে, তা নিয়ে নিশ্চিত নন অনেকে। কারও কারও মতে, সাধারণ বোমাগুলি খুব বেশি হলে ফোরডোয় ভূগর্ভস্থ সুড়ঙ্গগুলি ধ্বংস করতে পারে।

জিবিইউ-৫৭ বোমাগুলি সাধারণত ভূগর্ভস্থ বাঙ্কার ধ্বংস করতে সক্ষম। সেই কারণেই এটিকে ‘বাঙ্কার বাস্টার’ বলা হয়। তবে একমাত্র ‘বি২ বোম্বার’ বিমানই এই বোমাগুলি বহনে সক্ষম। পাশাপাশি হামলা চালানোর আগে আকাশে সম্পূর্ণ দখল থাকতে হবে আমেরিকার। জিপিসি সিগন্যাল যাতে কোনও ভাবে নষ্ট না হয়, সেটিও নিশ্চিত করতে হবে। না হলে নিশানায় অব্যর্থ আঘাত হানতে সমস্যা হতে পারে। ইজ়রায়েলের দাবি, তারা ইতিমধ্যে ইরানের আকাশের দখল নিয়ে নিয়েছে। তবে ইরানের কোনও জিপিএস জ্যামার রয়েছে কি না, তা এখনও নিশ্চিত করা বাকি।

অতীতেও ইজ়রায়েল হামলা চালিয়েছে ফোরডোর পরমাণুকেন্দ্রে। কিন্তু তাতে ইউরেনিয়াম পরিশোধনের কাজ তেমন ব্যাহত হয়নি। কারণ, মাটির এতটা গভীরে রয়েছে এই পরমাণুকেন্দ্রটি, যে কোনও প্রভাবই পড়েনি হামলার। বস্তুত, ইজ়রায়েলের কাছেও দু’ধরনের ‘বাঙ্কার বাস্টার’ বোমা রয়েছে। একটি ব্লু-১০৯ এবং অন্যটি জিবিইউ-২৮। ব্লু-১০৯ বোমাটি ৬-৮ ফুট গভীরে কংক্রিটের প্রাচীর ধ্বংস করতে পারে। গত বছরে হেজবোল্লা নেতা হাসান নাসরাল্লাকে হত্যা করতে এই বোমাটিই ব্যবহার হয়েছিল। জিবিইউ-১৮ বোমাটি ১৬-২০ ফুট গভীরে কংক্রিটের দেওয়াল ধ্বংস করতে পারে। তবে এগুলির কোনওটিই ফোরডোর পরমাণুকেন্দ্র ধ্বংস করতে পর্যাপ্ত নয়। আমেরিকার হাতে থাকা জিবিইউ-৫৭ বোমাটি প্রায় ২০০ ফুট (৬১ মিটার) গভীরে কংক্রিটের দেওয়াল ধ্বংস করতে পারে। তবে একটি জিবিইউ-৫৭ দিয়ে ফোরডোর পরমাণুকেন্দ্রকে ধ্বংস করা সম্ভব নয় বলেই মনে করছেন অনেকে।

Iran Israel Conflict Iran israel Donald Trump
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy