আমেরিকার ইউটায় এক বিশ্ববিদ্যালয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে খুন হয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত রক্ষণশীল নেতা চার্লি কির্ক। তাঁর মৃত্যুর পরে হত্যাকারীদের উদ্দেশে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ট্রাম্প। কির্কের উপর হামলাকে গোটা আমেরিকার উপর আক্রমণ বলে বর্ণনা করেছেন তিনি। চার মিনিট তিন সেকেন্ডের এক ভিডিয়ো বার্তায় ট্রাম্প জানিয়ে দিয়েছেন, এই নৃশংসতায় জড়িত প্রত্যেককে খুঁজে বের করবে তাঁর প্রশাসন।
নিহত কির্ককে ‘মহান দেশপ্রেমিক’ বলে সম্বোধন করে ট্রাম্প বলেন, “তিনি (কির্ক) আমেরিকাকে খুব ভালবাসতেন। তিনি স্বাধীনতা, গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার এবং আমেরিকার সাধারণ মানুষের জন্য লড়াই করে গিয়েছেন। এই জঘন্য হত্যাকাণ্ডের জন্য আমি শোকস্তব্ধ এবং ক্ষুব্ধ।” চার্লির হত্যাকাণ্ডকে আমেরিকার জন্য একটি ‘অন্ধকার মুহূর্ত’ বলে বর্ণনা করেন ট্রাম্প। মার্কিন প্রেসিডেন্টের কথায়, চার্লির লক্ষ্য ছিল সে দেশের তরুণ প্রজন্মকে রাজনীতির আঙিনায় নিয়ে আসা। সেই লক্ষ্যেই গোটা আমেরিকায় ঘুরতেন তিনি। এই কাজে অন্য সকলের তুলনায় চার্লি অনেক বেশি সফল ছিলেন বলেও দাবি ট্রাম্পের।
এই হত্যাকাণ্ডের জন্য আমেরিকার কট্টর বামপন্থীদেরও নিশানা করেন ট্রাম্প। আমেরিকার প্রেসিডেন্টের কথায়, “বছরের পর বছর ধরে উগ্র বামপন্থীরা চার্লির মতো দুর্দান্ত আমেরিকানদের নাৎসি এবং বিশ্বের সবচেয়ে নিকৃষ্ট হত্যাকারী এবং অপরাধীদের সাথে তুলনা করে আসছে। আজ আমরা দেশে যে সন্ত্রাস দেখছি, এই ধরনের বক্তব্যই তার জন্য সরাসরি দায়ী। এগুলি এখনই বন্ধ হওয়া উচিত।” ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দেন, কির্কের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত প্রত্যেককে খুঁজে বের করবে তাঁর প্রশাসন। শুধু এই ঘটনাতেই নয়, অন্য রাজনৈতিক হিংসায় অর্থ জোগানো এবং মদত দেওয়া সংস্থাগুলির বিরুদ্ধেও পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন:
ঘনিষ্ঠ-নেতার মৃত্যুতে তাঁর পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছে ট্রাম্প বলেন, “যে দানব তাঁর উপর হামলা করেছে, সে আমাদের গোটা দেশের উপরেই আক্রমণ করেছে। বুলেট দিয়ে তাঁকে (কির্ককে) চুপ করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে, কিন্তু সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। কারণ, তাঁর কণ্ঠস্বর যাতে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে জীবিত থাকে, তা আমরা সকলে মিলে নিশ্চিত করব।”
বুধবার আমেরিকার ইউটা ভ্যালি ইউনিভার্সিটিতে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন বছর একত্রিশের চার্লি কির্ক। সম্প্রতি আমেরিকার কলোরাডো থেকে ভার্জিনিয়া পর্যন্ত বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে সফর করার পরিকল্পনা করেছিলেন চার্লি। নাম দিয়েছিলেন, ‘দ্য আমেরিকান কামব্যাক ট্যুর’। ওই সফরেই ইউটার ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিলেন চার্লি। সেখানে সমবেত পড়ুয়াদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছিলেন তিনি। হঠাৎই ভিড়ের মধ্যে থেকে তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়েন চার্লি। পরে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। ওই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত আততায়ী ধরা পড়েননি। তাঁর খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।