Advertisement
E-Paper

আমেরিকার ভিসা পেতে মেধাবীদের কোনও সমস্যা হবে না, আশ্বাস ট্রাম্পের

আমেরিকার নতুন ভিসা নীতি যাতে সিলিকন ভ্যালিতে এই প্রতিভাবানদের প্রবেশের পথে বাধা হয়ে না দাঁড়ায়, সে ব্যবস্থা প্রশাসন করবে বলে ট্রাম্প আশ্বাস দিয়েছেন।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০১৭ ১৭:৩৭
এই প্রথম এইচ১-বি ভিসা সংক্রান্ত বিষয়ে সিলিকন ভ্যালির প্রশ্নগুলির সরাসরি জবাব দিলেন ট্রাম্প। মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলির কর্তাদের সেই আলাপচারিতা কিন্তু বেশ ইতিবাচকই হল। —রয়টার্স থেকে নেওয়া ফাইল চিত্র।

এই প্রথম এইচ১-বি ভিসা সংক্রান্ত বিষয়ে সিলিকন ভ্যালির প্রশ্নগুলির সরাসরি জবাব দিলেন ট্রাম্প। মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলির কর্তাদের সেই আলাপচারিতা কিন্তু বেশ ইতিবাচকই হল। —রয়টার্স থেকে নেওয়া ফাইল চিত্র।

অবশেষে নতি স্বীকারের ইঙ্গিত ডোনাল্ড ট্রাম্পের তরফে। সিলিকন ভ্যালির চাপের মুখে ভিসা নীতি নরম করার আভাস দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এইচ১-বি ভিসা পেতে প্রতিভাবানদের কোনও সমস্যা হবে না— সিলিকন ভ্যালির কর্তাদের ট্রাম্প এমনই আশ্বাস দিয়েছেন। মার্কিন তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলি যদি মনে করে কোনও কর্মীকে বিদেশ থেকে আমেরিকায় নিয়ে যাওয়া প্রয়োজন, তা হলে এইচ-১-বি ভিসা পেতে সেই সব কর্মীর কোনও সমস্যা হবে না। প্রেসিডেন্ট এমনই আশ্বাস দিয়েছেন বলে খবর।

তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে নতুন নতুন আবিষ্কার বা উদ্ভাবনের জন্য যাঁদের প্রয়োজন, সব সময় আমেরিকা থেকেই তাঁদের খুঁজে পাওয়া যাবে, সিলিকন ভ্যালির কর্তারা তেমনটা মনে করেন না। তাই ভারত থেকে তো বটেই, পৃথিবীর অন্য নানা দেশ থেকেও বিপুল সংখ্যক কর্মী প্রতি বছর নিয়োগ করে আমেরিকার তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলি। আমেরিকার নতুন ভিসা নীতি যাতে সিলিকন ভ্যালিতে এই প্রতিভাবানদের প্রবেশের পথে বাধা হয়ে না দাঁড়ায়, সে ব্যবস্থা প্রশাসন করবে বলে ট্রাম্প আশ্বাস দিয়েছেন। প্রতিভাবানদের ‘স্পেশ্যাল পিপল’ বা ‘বিশেষ ব্যক্তিত্ব’ আখ্যা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এই ‘বিশেষ ব্যক্তিত্ব’দের কর্মী হিসেবে পেতে সিলিকন ভ্যালির কোনও সংস্থাই যাতে সমস্যায় না পড়ে, তা আমেরিকার সরকার নিশ্চিত করবে বলে প্রেসিডেন্ট প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

‘‘বেশ অনেকটা সময় ধরেই আপনারা প্রচণ্ড সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছিলেন। আমরা সমস্যাগুলোর সমাধানের জন্য খুব পরিশ্রম করছি এবং সেগুলো কেটেও যাবে।’’ সিলিকন ভ্যালির কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এমনই বলেছেন। সংস্থাগুলির উত্তরোত্তর উন্নতির জন্য যে সব কর্মীকে বিদেশ থেকে আমেরিকায় নিয়ে যাওয়া প্রয়োজন, মার্কিন ভিসা পেতে তাঁদের যাতে কোনও সমস্যা না হয়, মার্কিন ইমিগ্রেশন বিভাগ তা নিশ্চিত করবে বলে ট্রাম্প আশ্বাস দিয়েছেন। এইচ-১-বি ভিসা দেওয়ার নিয়ম যে ভাবে কঠোর করেছে ট্রাম্পের সরকার, তার জন্য সিকিলন ভ্যালির স্বার্থ যাতে কোনও ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সরকার তা মাথায় রাখছে বলে ট্রাম্প জানান। প্রশাসন এবং মার্কিন কংগ্রেস খুব যত্ন নিয়ে সমস্যার সমাধানের পথ খুঁজবে বলেও তিনি আশ্বাস দেন।

মাইক্রোসফট-সহ প্রায় সব সংস্থাই ভিসার ক্ষেত্রে কড়াকড়ির বিরোধী। বিভিন্ন দেশের প্রতিভাবানদের নিয়োগ করার সুযোগ হাতছাড়া হলে মার্কিন সংস্থাগুলিরই ক্ষতি হবে বলে সিলিকন ভ্যালির সিইও-রা মনে করছেন।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে সিলিকন ভ্যালির বৃহত্তম সংস্থাগুলির সিইও-দের এই বৈঠকে পৌরোহিত্য করেন ট্রাম্পের জামাই জে কুশনার এবং সিলিকন ভ্যালির কর্তাদের মধ্যে ট্রাম্পের একমাত্র সমর্থক হিসেবে পরিচিত পিটার থিয়েল। বৈঠকের আলোচ্য সূচিতে যে এইচ১-বি ভিসা সংক্রান্ত বিষয়টি থাকবে, তা কুশনার এবং থিয়েলই স্থির করেছিলেন বলে খবর। হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র শন স্পাইসার জানিয়েছিলেন, প্রেসিডেন্ট এই বৈঠকে শুধু সমস্যাগুলোর কথা শোনার জন্য যাচ্ছেন। বৈঠকের পর অবশ্য জানা গিয়েছে, প্রেসিডেন্ট শুধু শোনেননি, সিলিকন ভ্যালির উদ্বেগ নিরসনের আশ্বাসও দিয়ে এসেছেন।

আরও পড়ুন: আন্তর্জাতিক যোগ দিবসে বিশেষ আলোয় সাজল রাষ্ট্রপুঞ্জের সদর দফতর

সিলিকন ভ্যালির ১৮ জন সিইও ট্রাম্পের এই বৈঠকে হাজির ছিলেন। তাঁদের মধ্যে তিন জন ছিলেন ভারতীয়— মাইক্রোসফটের সত্য নাদেল্লা, মাস্টারকার্ডের অজয় বঙ্গা এবং অ্যাডোবের শান্তনু নারায়ণ। তাঁরা তো বটেই, অন্য সিইও-দের অধিকাংশও ট্রাম্পের ভিসা নীতি নিয়ে উদ্বিগ্ন। বিদেশ থেকে আমেরিকায় কাজ করতে যাওয়ার জন্য যে ভিসা দেওয়া হয়, সেই এইচ১-বি ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রে অত্যন্ত কঠোর অবস্থান নেন তিনি। মার্কিন সংস্থাগুলি বিদেশ থেকে কর্মী নিচ্ছে বলে আমেরিকার নাগরিকদের কাজ পাওয়ার সুযোগ কমে যাচ্ছে বলে ট্রাম্প মনে করেন। সে কারণেই বিদেশিদের কাজের ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রে ট্রাম্পের প্রশাসন নানা বিধিনিষেধ আরোপ করে। সিলিকন ভ্যালির কর্তারা এর বিরুদ্ধে প্রথম থেকেই সরব ছিলেন। বিল গেটস ট্রাম্পের এই নীতির ঘোর বিরোধী ছিলেন। মাইক্রোসফট কর্ণধারের মতে, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে যে মেধাবী পড়ুয়ারা আমেরিকায় উচ্চশিক্ষা নিতে যান, তাঁদের হাতে ডিগ্রি তুলে দেওয়ার সময় গ্রিন কার্ডটাও দিয়ে দেওয়া উচিত। আমেরিকার সংস্থায় কাজ করার জন্য জটিল প্রক্রিয়ায় এইচ১-বি ভিসা পাওয়ার অপেক্ষা যাতে তাঁদের না করতে হয়, তার জন্যই এই ব্যবস্থা দরকার বলে গেটস মনে করেন। ততটা উদারতা ট্রাম্প দেখাবেন কি না, নিশ্চিত নয়। কিন্তু সিলিকন ভ্যালিতে বিদেশি কর্মীদের প্রবেশ যাতে ফের সুবিধাজনক হয়ে ওঠে, তা নিশ্চিত করা হবে বলে ট্রাম্প আশ্বাস দিয়ে এসেছেন।

Donald Trump US President Silicon Valley Immigration VISA H1-B ডোনাল্ড ট্রাম্প সিলিকন ভ্যালি
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy