মুখ পুড়ল চিনের। এনএসজি-র প্লেনারি অধিবেশনে ভারতকে নিয়ে কোনও আলোচনাই হবে না। জানিয়েছিল বেজিং। কিন্তু ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সরে আসতে হল সেই অবস্থান থেকে। কিন্তু ভারতের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে আলোচনা আটকানো গেল না। মঙ্গলবার বেজিং-ই জানাল, এনএসজির সদস্য দেশগুলি ভারতের সদস্যপদের আবেদন সম্পর্কে নিজেদের মধ্যে আলোচনা শুরু করেছে।
সোমবারই সম্পূর্ণ উল্টো কথা বলা হয়েছিল বেজিং-এর তরফে। চিনা বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র হু চুনয়িং বলেছিলেন, ‘‘এনএসজি-র কোনও প্লেনারি অধিবেশনে কখনও নতুন সদস্যের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে কথা হয় না। সোলে আয়োজিত প্লেনারি অধিবেশনের আলোচ্যসূচিতেও ভারতের অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি নেই।’’ চিনা বিদেশ মন্ত্রকের এই বিবৃতি ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের জন্য বড় ধাক্কা ছিল। চিন যাতে বিরোধিতার পথ থেকে সরে আসে, তার জন্য ভারত বেশ কিছু দিন ধরেই সচেষ্ট। ভিয়েনায় এনএসজি বৈঠকের আগে বেজিং থেকে ঘুরে এসেছেন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। সোল অধিবেশনের দিকে লক্ষ্য রেখে ভারতের বিদেশ সচিব এস জয়শঙ্করও ১৬-১৭ জুন খুব গোপনে বেজিং সফর সেরে এসেছেন। ১৯ জুন ভারতের বিদেশ মন্ত্রী সুষমা স্বরাজ সাংবাদিক বৈঠক করে জানান, চিন ভারতের বিরোধিতা করছে না। চিন এসএসজির সদস্য হওয়ার প্রশ্নে কয়েকটি পদ্ধতিগত বিষয়ের কথা বলছে। কূটনৈতিক মহলের কাছে স্পষ্ট ছিল, চিন-ভারত সম্পর্কে শীতলতা কাটানোর লক্ষ্যেই সুষমার ওই সাংবাদিক বৈঠক। কিন্তু চিন পরের দিন অর্থাৎ ২০ জুনই বুঝিয়ে দেয়, শীতলতা কাটানোর কোনও ইচ্ছা বেজিং-এর নেই। সুষমার সমস্ত চেষ্টাকে প্রায় নস্যাৎ করে চিনের তরফে বুঝিয়ে দেওয়া হয়, এনএসজি-তে ভারতের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে এখন কোনও আলোচনাতেই যেতে চায় না বেজিং।
আরও পড়ুন: চাপে পড়ে কৌশল বদল চিনের, পাল্টা চাপ দিতে পাকিস্তানের হয়ে সওয়াল
সুষমা স্বরাজকে যে অস্বস্তির মুখে পড়তে হয়েছিল, মঙ্গলবার কিন্তু ততটাই অস্বস্তি ফেরত পেয়েছে চিনা বিদেশ মন্ত্রক। ভারতকে নিয়ে সোলে কোনও আলোচনাই হবে না বলে সোমবার জানিয়েছিল যে বেজিং, সেই বেজিংকেই মঙ্গলবার বলতে হল, ‘‘ভারত এবং অন্যান্য যে সব দেশ এনপিটি স্বাক্ষর করেনি, তাদের অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে এনএসজি সদস্যরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করছেন।’’ অনেক চেষ্টা করেও যে ভারতের অন্তর্ভুক্তির বিষয় নিয়ে আলোচনা চিন আটকাতে পারল না, তা বেজিং-এর পক্ষে কম অস্বস্তির নয়। তবে অস্বস্তি কাটানোর জন্য চিনা বিদেশ মন্ত্রক নিজেদের বিবৃতিতে বোঝাতে চেয়েছে, আলোচনা শুধু ভারতকে নিয়ে হচ্ছে না। অন্যান্য আবেদনকারীদের নিয়ে অর্থাৎ পাকিস্তানকে নিয়েও হচ্ছে। সূত্রের খবর, এনএসজিতে পাকিস্তানের আবেদন গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা কথা চিনই বলেছে। অর্থাৎ পাকিস্তানকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে এখন মুখরক্ষার চেষ্টা করছে বেজিং। মত ওয়াকিবহাল মহলের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy