Advertisement
E-Paper

হাসিনার মৃত্যুদণ্ড চায় সরকার! অভিযোগ মোট পাঁচটি, রায়ের বিরুদ্ধে কেন আবেদনও করতে পারবেন না প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী?

হাসিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ মোট পাঁচটি। অভিযুক্তের তালিকায় হাসিনা ছাড়াও রয়েছেন দু’জন। তাঁদের মধ্যে এক জন রাজসাক্ষী হয়েছেন এবং নিজের দোষ স্বীকার করে নিয়েছেন। হাসিনার বিরুদ্ধে জবানবন্দিও দিয়েছেন।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০২৫ ০৮:৫৯
বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। —ফাইল চিত্র।

বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সোমবার রায় ঘোষণা করবে সে দেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। রায়ের সরাসরি সম্প্রচার হওয়ার কথাও রয়েছে। মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের তরফে হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের আবেদন জানানো হয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জানিয়েছেন, ট্রাইব্যুনাল যা রায় দেবে, তা-ই মেনে নিতে হবে। হাসিনা তার বিরুদ্ধে কোনও আবেদন জানাতে পারবেন না। এই সংক্রান্ত নিয়মও ব্যাখ্যা করেছেন তিনি।

হাসিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ মোট পাঁচটি। অভিযুক্তের তালিকায় হাসিনা ছাড়াও রয়েছেন দু’জন। এক, বাংলাদেশের প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এবং দুই, বাংলাদেশ পুলিশের প্রাক্তন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লা আল-মামুন। এঁদের মধ্যে হাসিনা এবং আসাদুজ্জামান প্রথম থেকেই পলাতক। সূত্রের খবর, হাসিনার মতো আসাদুজ্জামানও ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। তবে তৃতীয় অভিযুক্ত আল-মামুনকে গ্রেফতার করেছিল সে দেশের পুলিশ। তিনি রাজসাক্ষী হয়েছেন এবং ট্রাইব্যুনালে জবানবন্দি দিয়েছেন। হাসিনা মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন বলে রাষ্ট্রপক্ষ যে অভিযোগ তুলেছে, তাতে সায় দিয়েছেন আল-মামুন।

কী কী অভিযোগ

  • হাসিনার বিরুদ্ধে প্রধান অভিযোগ, তিনি ২০২৪ সালের জুলাই মাসে বাংলাদেশে সরকারবিরোধী গণআন্দোলনের সময় ছাত্রযুবদের উপর পুলিশকে গুলি চালানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। হেলিকপ্টার, ড্রোন এবং প্রাণঘাতী অস্ত্রপ্রয়োগ করে আন্দোলনকারীদের নির্মূল করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। দেড় হাজার মানুষকে হত্যার অভিযোগ তুলেছে রাষ্ট্রপক্ষ।
  • এ ছাড়া, উস্কানিমূলক ভাষণ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে হাসিনার বিরুদ্ধে। দাবি, বিভিন্ন সময়ে তাঁর বিভিন্ন মন্তব্যের কারণে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে গিয়েছে। ক্ষোভ বেড়েছে জনমানসে। সেই কারণেই ছাত্রযুবরা সরকারের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছিলেন।
  • রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যার ঘটনা আন্দোলনধ্বস্ত বাংলাদেশকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। আন্তর্জাতিক স্তরেও তার সমালোচনা হয়েছে। সেই হত্যার ঘটনাতেও অভিযুক্ত হাসিনা। অভিযোগ, তিনিই গুলির নির্দেশ দিয়েছিলেন।
  • ঢাকার চানখাঁরপুল এলাকায় আন্দোলনরত ছ’জনকে গুলি করে হত্যা করেছিল বাংলাদেশের পুলিশ। অভিযোগ, হাসিনাই সেখানে গুলি চালানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। তিনি নির্দেশ না দিলে পুলিশ গুলি চালাত না।
  • গণআন্দোলন চলাকালীন আশুলিয়ায় ছ’জনকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছিল। অভিযোগ, সেই নির্দেশও দিয়েছিলেন হাসিনা।

কেন আবেদন করা যাবে না

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী গাজি মোনাওয়ার জানিয়েছেন, হাসিনা পলাতক থাকায় তিনি ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে কোনও আবেদন জানাতে পারবেন না। সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী, ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা যায়। কিন্তু হাসিনা দেশে নেই। বাংলাদেশ পুলিশ এখনও তাঁকে হেফাজতে পায়নি। আইন বলছে, রায় ঘোষণার ৩০ দিনের মধ্যে তার বিরুদ্ধে আপিল করা যায়। কিন্তু আপিল করতে হলে অভিযুক্তকে আত্মসমর্পণ করতে হবে অথবা পুলিশকে তাঁকে গ্রেফতার করতে হবে। এ ক্ষেত্রে হাসিনা তাই আপিলের সুযোগ পাবেন না।

হাসিনা দেশের বাইরে থেকেই বেশ কয়েকটি সাক্ষাৎকারে দাবি করেছেন, জুলাই আন্দোলনে তিনি কাউকে সরাসরি হত্যার নির্দেশ দেননি। কিন্তু তাঁর এই বক্তব্য ট্রাইব্যুনালে গ্রহণযোগ্য নয়। আইনজীবী জানিয়েছেন, হাসিনা যদি সশরীরে আদালতে উপস্থিত হয়ে নিজের বক্তব্য জানাতেন, তা গ্রহণযোগ্য হত। কিন্তু পলাতক অবস্থায় গণমাধ্যমে তাঁর বক্তব্য আদালত গ্রাহ্য করতে পারে না। তা ছাড়া, হাসিনার কণ্ঠস্বরের রেকর্ড উন্মুক্ত আদালতে বাজিয়ে শোনানো হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

Sheikh Hasina International Tribunal Bangladesh Muhammad Yunus
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy