ভারতের মতো রাশিয়ার কাছ থেকে খনিজ তেল কেনে চিনও। তবে কি আমেরিকা তাদের উপরেও শুল্ক আরোপ করবে? ভারতের উপর যে হারে শুল্ক আরোপ করা হয়েছে, সে হারেই কি মার্কিন শুল্ক আরোপিত হবে চিনের উপরেও? এ প্রশ্ন আগেও করা হয়েছিল আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। এত দিন নিশ্চিত করে তিনি কিছু বলেননি। তবে এ বার চিনকে সরাসরি বাণিজ্য নিয়ে বার্তা দিলেন। সমাজমাধ্যমে তাঁর পোস্ট থেকে স্পষ্ট, একটি পণ্যের কেনাবেচার উপর অনেকাংশে নির্ভর করে আছে আমেরিকা-চিন বাণিজ্যিক সম্পর্ক।
সোমবার সকালে ট্রাম্প সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, ‘‘সয়াবিনের অভাব নিয়ে চিন চিন্তিত। তবে আমাদের চাষিরা খুব ভাল সয়াবিন উৎপাদন করেন। আশা করব, চিন দ্রুত সয়াবিনের অর্ডার চার গুণ বাড়িয়ে দেবে। আমেরিকার সঙ্গে ওদের বাণিজ্যঘাটতি পূরণের এটা অন্যতম উপায় হতে পারে। দ্রুত ওদের পরিষেবা প্রদান করা হবে।’’
আরও পড়ুন:
শুল্ক নিয়ে চিন এবং আমেরিকার ‘যুদ্ধবিরতি’ মঙ্গলবারই শেষ হচ্ছে। মনে করা হচ্ছিল, চিনের উপর শীঘ্রই অতি চড়া হারে শুল্ক আরোপ করতে পারেন ট্রাম্প। আগে এই সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানিয়েছিলেন, ভারতের মতো চিনের উপর শুল্ক আরোপ করা হলেও হতে পারে। রবিবার রাতে (আমেরিকার সময়) ফক্স নিউজ়কে একটি সাক্ষাৎকারে আমেরিকার ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্স জানান, এখনও ট্রাম্প চিনের শুল্ক নিয়ে স্থির সিদ্ধান্তে আসেননি। তার অন্যতম কারণ হল, চিনের সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্কের জটিলতা। রাশিয়ার কাছ থেকে তেল আমদানির জন্য ভারতের মতো চিনের উপরেও শুল্ক আরোপ করা হবে কি না, ভান্সকে তা নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল। তিনি বলেছেন, ‘‘প্রেসিডেন্ট এটা নিয়ে ভাবছেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও সিদ্ধান্ত নেননি। কারণ চিনের বিষয়টি একটু বেশি জটিল। চিনের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের উপর অন্য অনেক কিছু নির্ভর করে থাকে, যার সঙ্গে রাশিয়ার পরিস্থিতির সম্পর্ক নেই।’’
শুল্ক নিয়ে চিনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেননি ট্রাম্প, তবে আমেরিকা থেকে বেজিংকে সয়াবিন কেনার জন্য আহ্বান জানালেন এর মাঝেই। আমেরিকার সঙ্গে চিনের বাণিজ্য ঘাটতি মেটানোর অন্যতম উপায়ও বললেন সয়াবিনকে। মনে করা হচ্ছে, এই পণ্যের উপর চিনের উপর শুল্কের পরিমাণ নির্ভর করে আছে। বাণিজ্য নিয়ে দুই সর্বোচ্চ অর্থনীতির মধ্যে সমঝোতা হয় কি না, তার দিকে নজর রয়েছে বিশ্বের।
রাশিয়া থেকে তেল এবং অস্ত্র কেনার জন্য আমেরিকা ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে ভারতের উপর। দাবি, ভারতের তেলের টাকাতেই ইউক্রেনে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে পারছে মস্কো। নয়াদিল্লি অবশ্য জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক বাজারদর এবং জাতীয় স্বার্থের দিকে মাথায় রেখে তারা বাণিজ্যনীতি স্থির করে। কেন রাশিয়া থেকে আমদানিকারী অন্য কোনও দেশের উপর মার্কিন শুল্ক আরোপিত হচ্ছে না, প্রশ্ন তুলেছে ভারত।