Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
International

পুতিনের পছন্দের টিলারসনকে বিদেশসচিব করছেন ট্রাম্প

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ‘খুব পছন্দের মানুষ’টিকেই তাঁর ক্যাবিনেটে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদে বসিয়ে দিলেন ভাবী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প! নতুন মার্কিন বিদেশসচিব হচ্ছেন বিশ্বের নামজাদা তেল সংস্থা ‘এক্সনমবিল’-এর চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার (সিইও) রেক্স টিলারসন।

নতুন মার্কিন বিদেশসচিব টিলারসন।

নতুন মার্কিন বিদেশসচিব টিলারসন।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৬ ১৯:৫৭
Share: Save:

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ‘খুব পছন্দের মানুষ’টিকেই তাঁর ক্যাবিনেটে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদে বসিয়ে দিলেন ভাবী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প!

নতুন মার্কিন বিদেশসচিব হচ্ছেন বিশ্বের নামজাদা তেল সংস্থা ‘এক্সনমবিল’-এর চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার (সিইও) রেক্স টিলারসন। ২০১৩ সালে যাঁকে বিদেশি নাগরিকদের জন্য সর্বোচ্চ সম্মান ‘অর্ডার অফ ফ্রেন্ডশিপ’ দিয়েছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন। সেই ‘পুতিনের পছন্দ’কে যে তাঁরও খুবই পছন্দের, তা টিলারসনকে শুধু বিদেশসচিব হিসেবে বেছে নিয়েই নয়, ট্রাম্প সে কথা বুঝিয়ে দিয়েছেন তাঁর বিবৃতিতেও- ‘টিলারসনই আগামী দিনের বিশ্ব মাপের নেতা’।

রাশিয়ার সঙ্গে টিলারসনের এত বেশি ‘মাখামাখি’ দেখে নতুন মার্কিন বিদেশসচিবকে নিয়ে শুধুই ডেমোক্র্যাটরা নন, বড় চিন্তায় পড়ে গিয়েছেন খোদ ট্রাম্পের দল রিপাবলিকান পার্টির সেনেটর, কংগ্রেস সদস্যদের একটি বড় অংশ। ‘রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন ট্রাম্পকে জেতাতে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হ্যাক করেছিলেন’- ‘সিয়া’র একটি ‘কনফিডেন্সিয়াল রিপোর্ট’-এর এই দাবি নিয়ে গোটা মার্কিন রাজনীতিই এখন উত্তাল। উদ্বিগ্ন রিপাবলিকান সেনেটর, কংগ্রেস সদস্যদের একটি বড় অংশও। সেনেটের মেজরিটি লিডার রিপাবলিকান মিচ ম্যাকোনেল রাখঢাক না রেখেই বলেছেন, ‘‘রাশিয়া কখনওই আমাদের বন্ধু নয়। বন্ধু ছিল না কোনও দিন। বন্ধু হতেও পারে না।’’

আরও পড়ুন- উত্তরাধিকারী খুঁজছেন ৯২০০ কোটি ডলারের মালিক এই ধনকুবের

ঘটনা হল, ‘পুতিনের প্রাণের বন্ধু’, প্রকাশ্যে এই তকমাটা নির্বাচনের পর ঝেড়ে ফেলতে যখন ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন ভাবী মার্কিন প্রেসিডেন্ট, সেই সময়ই ‘পুতিনের প্রাইজ পাওয়া’ মানুষ টিলারসনকে তাঁর ক্যাবিনেটের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদটিতে বসিয়ে ফেললেন ট্রাম্প!

আর এই টিলারসনও ভাবী মার্কিন প্রেসিডেন্টের মতো রাজনীতির ছায়াও মাড়াননি এর আগে। তেলের ব্যবসা নিয়েই টিলারসন মেতেছিলেন আজীবন। ‘এক্সনমবিল’-এর সিইও হিসেবে চষে বেড়িয়েছেন ইউরেশিয়ার দেশগুলি। প্রায় গোটা মধ্যপ্রাচ্যই। ‘তেলের দেশ’ বলে ভূগোলে যাদের পরিচিতি, সেই সব দেশ আর তাদের রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে মার্কিন বহুজাতিক তেল সংস্থার কর্ণধার টিলারসনের ভাবসাব বহু দিনের। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, এটাই ইঙ্গিত দিচ্ছে, রাশিয়ার সঙ্গে হাত মিলিয়ে চলার পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলির সঙ্গেও সম্পর্কের রসায়নটিকে পাক দিতে চাইছেন ভাবী মার্কিন প্রেসিডেন্ট। আগাপাশতলা ব্যবসায়ী ট্রাম্প মধ্যপ্রাচ্যকে যে তাঁর ‘তেলের ব্যবসার অংশীদার’ করতে চাইছেন, টিলারসনের মতো ‘অয়েল টাইকুন’কে বিদেশসচিবের মতো একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদে বসিয়ে সেই ইঙ্গিতই দিয়ে দিলেন ভাবী মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তাই রাজনীতি সম্পর্কে আনুষ্ঠানিক ভাবে আগ্রহ-উৎসাহ এর আগে না দেখালেও আর বিদেশনীতি নিয়ে তিনি কতটা, কী জানেন, অন্তত প্রকাশ্যে তার বিশেষ কিছু জানা না গেলেও টিলারসনকে ট্রাম্পের ‘সেরা পছন্দ’ করে তুলতে সাহায্য করেছে রাশিয়া আর মধ্যপ্রাচ্য। প্রচারেও যেমন ছিলেন, কথাবার্তা যেমন বলছিলেন, তাতে ট্রাম্পের ‘ব্র্যান্ড’ই হয়ে গিয়েছিল- ‘আনপ্রেডিক্টেব্‌ল’।

মার্কিন রাজনীতির অলিন্দে এখন একটা কথাই ঘুরপাক খাচ্ছে। তা হল- শুধু রাশিয়া আর মধ্যপ্রাচ্যের কাঁধে ভর রেখেই ‘অয়েল টাইকুন’ টিলারসন গটগটিয়ে ঢুকে পড়লেন হোয়াইট হাউসে। একেবারে বিদেশসচিবের শিরোপা নিয়ে! তাঁর পকেটে ছিল অবশ্য দুই প্রাক্তন বিদেশসচিব জেমস বেকার ও কন্ডোলিজা রাইসের ‘রেকমেন্ডেশন’! যদিও তাঁরা তো বটেই, টিলারসনের আগে এমন কোনও বিদেশসচিব পায়নি আমেরিকা, যিনি আগে ছায়াও মাড়াননি রাজনীতির!

বহু বহু দিন পর টিলারসনের মতো এক জন মার্কিন বিদেশসচিবের ‘অ্যাপয়েন্টমেন্ট’ বুঝিয়ে দিল, রাশিয়া সঙ্গে থাকলে কী না হয়!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Tillerson US Secretary of State who is tillerson
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE