Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪
Afghanistan

NSA-level Meet: তালিবান-পাকিস্তান নেই, সফল হবে কি আফগানিস্তান বৈঠক

১০ তারিখ নয়াদিল্লিতে আফগানিস্তান সংক্রান্ত জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা পর্যায়ের বৈঠক হওয়ার কথা।

জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল।

জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল। ছবি: সংগৃহীত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০২১ ০৬:১৬
Share: Save:

তালিবান সরকারের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ছে নয়াদিল্লির। আফগানিস্তান ক্রমশ ভারতীয় বিদেশনীতির আয়ত্তের বাইরে চলে যাচ্ছে বলে আশঙ্কা ঘন হচ্ছে সাউথ ব্লকে। এই পরিস্থিতিতে তালিবানের সঙ্গে যোগাযোগে থাকা দুই রাষ্ট্র— ইরান এবং রাশিয়াকে কাবুল প্রশ্নে নাগালের মধ্যে রাখতে চাইছে ভারত। কূটনৈতিক শিবিরের খবর, ১০ তারিখ নয়াদিল্লিতে আফগানিস্তান সংক্রান্ত জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা পর্যায়ের বৈঠকের মূল লক্ষ্য সেটাই।

তালিবান সরকারে হক্কানি নেটওয়ার্কের প্রাধান্য যে বাড়ছে, ক্রমশই স্পষ্ট হচ্ছিল। কিন্তু এত দ্রুত যে হক্কানিরা ভারতের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার শুরু করবে, এটা ভাবেননি বিদেশ মন্ত্রকের কর্তারা। সুলতান মামুদ গজনভির হাতে সোমনাথ মন্দির ও দেবমূর্তি ধ্বংসের কথা গত মাসে গৌরবের সঙ্গে তুলে ধরেছেন তালিবানের শীর্ষ পর্যায়ের নেতা তথা হক্কানি নেটওয়ার্কের অন্যতম মুখ আনাস হক্কানি। মামুদের সমাধিস্থল পরিদর্শনের পরে পাকিস্তান-ঘনিষ্ঠ ওই তালিবান নেতার টুইট, ‘আজ, আমরা সুলতান মামুদ গজনভির মাজার পরিদর্শন করেছি। তিনি এক জন বিখ্যাত মুসলিম যোদ্ধা এবং দশম শতাব্দীর মুজাহিদ। তিনি গজনি থেকে এই অঞ্চলে শক্তিশালী মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠা করেন এবং সোমনাথের দেবমূর্তি ধ্বংস করেন।’ সুলতান মামুদকে ‘দশম শতাব্দীর মুজাহিদ (ধর্মযোদ্ধা)’-ও বলেন হক্কানি নেতা।বিষয়টি হজম করা মোদী সরকারে পক্ষে কঠিন। যে জাতীয়তাবাদের রাজনীতি তাঁর উত্তরপ্রদেশ ভোটের আগে অন্যতম অস্ত্র, সেটিকেই উস্কে দিচ্ছে তালিবান। ফলে ঘরোয়া রাজনীতিতে বিষয়টি বিজেপির পক্ষে লাভজনক হলেও, জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্নে ততটাই আশঙ্কার।

মাত্র এক পক্ষ কাল আগে মস্কোতে তালিবান সরকারের উপপ্রধানমন্ত্রী আব্দুল সালাম হানাফির সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন পাকিস্তান-আফগানিস্তান-ইরান বিষয়ক যুগ্ম সচিব জে পি সিংহ। বৈঠকের পরে তালিবান মুখপাত্র জ়বিউল্লা মুজাহিদ একটি বিবৃতি দিয়ে বলেছিলেন, ‘দু’পক্ষই মনে করছে একে অন্যের উদ্বেগের দিকটিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে। কূটনৈতিক এবং অর্থনৈতিক সম্পর্কের উন্নতি ঘটানো প্রয়োজন।’ অন্য দিকে ভারতীয় প্রতিনি‌ধিরা ওই বৈঠকে তালিবান সরকারকে জানিয়েছেন, সে দেশের মানুষের জন্য ত্রাণ এবং মানবিক সাহায্য পাঠাতে প্রস্তুত দিল্লি। কিন্তু সেই ত্রাণ কী ভাবে এবং কোন পথে কাবুলে পাঠানো হবে, সে ব্যাপারে স্পষ্ট দিশা দেখায়নি তালিবান। বরং হক্কানি নেটওয়ার্ক স্পষ্ট ইঙ্গিত দিচ্ছে, ভারতীয় দৌত্যের পরোয়া না করে তারা পাকিস্তানের কথাতেই চলবে।

কূটনীতিকদের বক্তব্য, ভারত ১০ তারিখের বৈঠক করছে ঠিকই, কিন্তু তাতে তালিবান সরকারের প্রতিনিধিত্ব নেই। ফলে শেষ পর্যন্ত গোটা অঞ্চলের নিরাপত্তার প্রশ্নে বৈঠক কতদূর ফলপ্রসূ হবে, তা নিয়ে সন্দেহ থাকছে। তালিবানকে না ডাকায় পাকিস্তানের পক্ষ থেকে চূড়ান্ত নেতিবাচক মন্তব্য করা হয়েছে। পশ্চিম ও দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়ায় ভারতের সর্বাধিক দুশ্চিন্তা যে দু’টি দেশকে নিয়ে, সেই আফগানিস্তান এবং পাকিস্তানের প্রতিনিধিরাই গরহাজির থাকছেন। এ ক্ষেত্রে তাদের বার্তা পাঠানোর জন্য ইরান এবং রাশিয়ার উপস্থিতি ভারতের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। আফগানিস্তানে জঙ্গি গোষ্ঠীর সক্রিয়তা, আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাস এবং মৌলবাদী চরমপন্থী ভাবধারার প্রসার রোখার পাশাপাশি আফগান অর্থনৈতিক সঙ্কটের বিষয়ে বৈঠকটিতে জোর দিতে চাইছে সাউথ ব্লক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Afghanistan taliban pakistan Foreign Policy
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE