Advertisement
E-Paper

ইউটিউবের সদরে মেয়ে বন্দুকবাজ

ক্যালিফোর্নিয়ার ইউটিউবের সদর দফতরের বেশির ভাগ কর্মী মধ্যাহ্নভোজ সারতে ব্যস্ত। কিন্তু কাল দুপুরে ঠিক ওই সময়টায় খাওয়ার জায়গার সামনে থেকে আচমকা ভেসে আসে গুলির শব্দ।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০১৮ ০৪:১৭
প্রহরা: ইউটিউবের সদর দফতরে মোতায়েন পুলিশ। বুধবার ক্যালিফোর্নিয়ার সান ব্রুনোয়। ছবি: এএফপি

প্রহরা: ইউটিউবের সদর দফতরে মোতায়েন পুলিশ। বুধবার ক্যালিফোর্নিয়ার সান ব্রুনোয়। ছবি: এএফপি

দুপুর একটা বাজতে তখনও মিনিট কুড়ি বাকি। ক্যালিফোর্নিয়ার ইউটিউবের সদর দফতরের বেশির ভাগ কর্মী মধ্যাহ্নভোজ সারতে ব্যস্ত। কিন্তু কাল দুপুরে ঠিক ওই সময়টায় খাওয়ার জায়গার সামনে থেকে আচমকা ভেসে আসে গুলির শব্দ। পর পর বেশ কয়েক বার। তত ক্ষণে পিস্তল হাতে দফতর চত্বরে ঢুকে পড়েছে এক মহিলা বন্দুকবাজ। এলোপাথাড়ি গুলি চালিয়ে তিন জনকে জখম করে সে। পরে নিজের গুলিতেই আত্মঘাতী হয় ওই মহিলা। নাম নাসিম নাজাফি আগদাম। বয়স ৩৯।

ফ্লরিডার পার্কল্যান্ডের মারজরি স্টোনম্যান ডগলাস হাইস্কুলের আতঙ্ক আবারও ফিরে এল আমেরিকায়। মাস দেড়েক আগেই ওই স্কুলে গুলি চালিয়ে ১৫ জনকে মেরে ফেলেছিল স্কুলেরই প্রাক্তন ছাত্র নিকোলাস ক্রুজ। কাল ইউটিউবের সদর দফতরে হাতে একটি নাইন এমএম পিস্তল নিয়ে ঢুকে প্রায় একই কায়দায় গুলি চালাতে শুরু করেছিল নাসিম। তবে তিন জনকে গুলি করে কেন সে আত্মঘাতী হল, তা স্পষ্ট নয় পুলিশের কাছে। ৯১১-এ ফোন পেয়ে প্রায় সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বিশাল পুলিশ বাহিনী। তারাই এসে উদ্ধার করে নাসিমের মৃতদেহ।

পুলিশ জানায়, জুকেরবার্গ সান ফ্রান্সিসকো হাসপাতালে চার জন ভর্তি রয়েছেন। যাঁদের মধ্যে বছর ছত্রিশের এক ব্যক্তির অবস্থা সঙ্কটজনক। ৩২ বছরের এক মহিলার অবস্থাও গুরুতর। তবে বছর সাতাশের এক তরুণীর অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানান চিকিৎসকেরা। চতুর্থ এক ব্যক্তিও হাসপাতালে ভর্তি। তবে তাঁর গোড়ালির আঘাত বুলেটের নয় বলেই জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা। জখম চার জনের মধ্যে কারও নাম-পরিচয় প্রকাশ করেনি পুলিশ।

ধোঁয়াশা রয়েছে কালকের হামলার উদ্দেশ্য নিয়েও। প্রথমে পুলিশের এক মুখপাত্রই সংবাদমাধ্যমকে জানান, নিহত বন্দুকবাজ নাসিম এক আহতকে চিনত। সম্ভবত ৩৬ বছরের যুবকটি তার প্রেমিক, তাঁকে মারতেই কাল দফতরে ঢুকেছিল সে। কিন্তু পরে পুলিশের তরফে সরকারি বিবৃতিতে জানানো হয়, বন্দুকবাজ আগে থেকে কাউকে চিনত কি না, তা স্পষ্ট নয়। তবে কালকের হামলার সঙ্গে সন্ত্রাসবাদের কোনও যোগ নেই বলেই প্রাথমিক ভাবে জানিয়েছে পুলিশ।

গুলির শব্দ শোনার সঙ্গে সঙ্গে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটগুলো ছেয়ে যায় হামলার খবরে। অফিসে বসেই টুইট করতে থাকেন কর্মীরা।

আমেরিকায় আকছার বন্দুকবাজের হামলা হলেও মহিলা বন্দুকবাজের ইতিহাস দেশে বিরল। কী ভাবে নাসিমের হাতে ওই আগ্নেয়াস্ত্র এল, তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নাসিমের এক ভাই পুলিশকে জানিয়েছেন, তাঁদের জানা ছিল না যে নাসিমের কাছে পিস্তল রয়েছে।

এক মার্কিন দৈনিক জানাচ্ছে, দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ায় লস অ্যাঞ্জেলেস আর সান দিয়েগোর মাঝে এক ছোট শহর মেনিফি-তে থাকত নাসিম। বিভিন্ন সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে ভীষণ ভাবে সক্রিয়ও ছিল। ইউ টিউব এক বার তাঁর কিছু শারীরিক কসরতের ভিডিও ব্লক করে দেওয়ায় ওই সোশ্যাল সাইটটির প্রবল সমালোচনা করেছিল সে। সেই রাগ থেকেই এই হামলা কি না, তা নিয়ে অবশ্য মুখ খুলতে রাজি নয় পুলিশ।

হামলার পরে পুলিশের ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে অস্ত্র আইনে রাশ টানা নিয়ে কোনও শব্দ খরচ করেননি তিনি। ঘটনার পরে সংস্থার কর্মীদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন গুগলের সিইও সুন্দর পিচাই। একটি টুইট বার্তায় তিনি লিখেছেন, ‘‘আমি জানি এই মুহূর্তে আপনাদের অনেকেই আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। আমরা গোটা ঘটনার দিকে নজর রাখছি। এই বিপদ থেকে সকলকে বার করে আনতে গুগল তার সব কর্মীর পাশে আছে।’’

ইউটিউব গুগলের অধীনে হলেও ক্যালিফোর্নিয়ার মাউন্টেন ভিউয়ের গুগলের মূল দফতর থেকে ইউটিউবের সান ব্রুনোর এই সদর দফতরের দূরত্ব প্রায় কুড়ি মাইল। সিলিকন ভ্যালির অন্য তথ্য প্রযুক্তির দফতরের মতোই সান ব্রুনোর দফতরেও নিরাপত্তার কড়াকড়ি নেই তেমন। সেই সুযোগেই কাল নাসিম সেখানে ঢুকে পড়ে বলে অনুমান পুলিশের।

YouTube California San Bruno shooting ইউটিউব
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy