হুথি কিংবা হামাস যদি ‘ইরানের মদতপুষ্ট’ হয়, তা হলে গাজ়ায় ৫০ হাজারেরও বেশি প্রাণহানির পরে ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু কেন ‘যুদ্ধাপরাধী’ হবেন না? কেন গাজ়ায় লাগাতার হামলা, একের পর এক নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পরেও ইজ়রায়েলি সেনাবাহিনীকে ‘আমেরিকার মদতপুষ্ট’ বলা হবে না? এমনই প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন নিউ ইয়র্কের আসন্ন মেয়র নির্বাচনের ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জ়োহরান মামদানি।
নিজের এক্স হ্যান্ডলে ব্রিটেনের সরকারি সংবাদমাধ্যম বিবিসি-র উদ্দেশে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন মামদানি। ইজ়রায়েলের যুদ্ধে আমেরিকার ভূমিকা নিয়েও একাধিক প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। সরাসরি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমটিকে নিশানা করে তিনি এক্স-এ লিখেছেন, ‘‘আপনারা বিভিন্ন প্রসঙ্গে লেখেন, বলেনও ‘ইরানের সমর্থনপ্রাপ্ত হুথি গোষ্ঠী’ কিংবা ‘হামাস-পরিচালিত হাসপাতাল’। কিন্তু কখনও বলেন না ‘আমেরিকার মদতপুষ্ট’ ইজ়রায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) বা ‘যুদ্ধাপরাধী’ বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু?’’
ডেমোক্র্যাট মামদানি বরাবরই ইজ়রায়েল-বিরোধী বলে পরিচিত। গাজ়ার যুদ্ধে ‘গণহত্যা’ চালাচ্ছে ইজ়রায়েল, এই অভিযোগে বারবার সরব হয়েছেন তিনি। আন্তর্জাতিক আইনে নেতানিয়াহুর গ্রেফতারির দাবিও তিনি বারবার তুলেছেন। এমনকি এ-ও বলেছেন, তিনি নিউ ইয়র্কের মেয়র নির্বাচিত হলে, নেতানিয়াহু এই শহরে এলে ততক্ষণাৎ গ্রেফতার হবেন।
তবে ইজ়রায়েলের সমালোচনা করলেও তাদের সঙ্গে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস যা করেছে, তার নিন্দা করতে ছাড়েননি মামদানি। বলেছেন, ‘ভয়াবহ যুদ্ধাপরাধ’। প্যালেস্টাইন-সমর্থকদের অনেকে যেমন ইজ়রায়েলের অস্তিত্ব মানতেই নারাজ, মামদানি তেমনটাও নন। তিনি দ্বিরাষ্ট্র-নীতিতে বিশ্বাসী। আমেরিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কথায় অবশ্য, মামদানি এক জন ‘কমিউনিস্ট পাগল’। ব্যঙ্গ করে তিনি বলেছেন, ‘‘মামদানির হাতে নিউ ইয়র্ক তুলে দিয়ে কিছুতেই এই শহরকে ধ্বংস হতে দেব না।’’
মামদানির জন্ম উগান্ডায়। বাবা-মা ভারতীয়। বাবা মাহমুদ মামদানি একজন শিক্ষাবিদ, মা মীরা নায়ার এক জন চলচ্চিত্র পরিচালক। ১৯৯৮ সালে সাত বছর বয়সে মা-বাবার সঙ্গে আমেরিকা চলে আসেন মামদানি। ২০১৮ সালে আমেরিকার নাগরিকত্ব পান তিনি। তাঁর কাছে বৈধ নাগরিকত্ব থাকলেও, নিউ ইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলির সদস্য হিসেবে তাঁর পরিশ্রম সত্ত্বেও, মাত্র সাত বছরের নাগরিকত্ব নিয়ে বারবার প্রশ্নের মুখে পড়ছেন মামদানি। তাঁর উদার রাজনৈতিক অবস্থান, সাম্যের দাবি, প্যালেস্টাইনের অধিকার নিয়ে ভাবনা জনমানসে সমর্থন জোগালেও চাপ কমাচ্ছে না।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)