Advertisement
E-Paper

আশ্বাসে ভরসা রাখতে পারছেন না পর্যটকেরা

প্রশাসন আশ্বাস দিয়েছিল, কোনও অবস্থাতেই পর্যটন-ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। কিন্তু তাতে ভরসা রাখতে পারছেন না ভ্রমণার্থীরা। শুরু হয়ে গিয়েছে সফর কাটছাটের পরিকল্পনা। যাঁরা ইতিমধ্যে তাইল্যান্ডে পৌঁছে গিয়েছেন, তাঁদের অনেকে বুকিংয়ের মেয়াদ শেষের আগেই হোটেল খালি করে দিচ্ছেন। সময়ের আগেই ফিরে আসছেন দেশে। সবের নেপথ্যেই তাইল্যান্ডের রাজনৈতিক অস্থিরতা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০১৪ ০২:১৮
প্রতিবাদী মেজাজে। সেনা অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে ব্যাঙ্ককের রাস্তায়। ছবি: এপি

প্রতিবাদী মেজাজে। সেনা অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে ব্যাঙ্ককের রাস্তায়। ছবি: এপি

প্রশাসন আশ্বাস দিয়েছিল, কোনও অবস্থাতেই পর্যটন-ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। কিন্তু তাতে ভরসা রাখতে পারছেন না ভ্রমণার্থীরা। শুরু হয়ে গিয়েছে সফর কাটছাটের পরিকল্পনা। যাঁরা ইতিমধ্যে তাইল্যান্ডে পৌঁছে গিয়েছেন, তাঁদের অনেকে বুকিংয়ের মেয়াদ শেষের আগেই হোটেল খালি করে দিচ্ছেন। সময়ের আগেই ফিরে আসছেন দেশে। সবের নেপথ্যেই তাইল্যান্ডের রাজনৈতিক অস্থিরতা। যা থামানোর লক্ষ্যে মাত্র দিন তিনেক আগেই সেনা অভ্যুত্থান হয়েছে সে দেশে।

ইতিহাস অবশ্য বলছে, এর আগেও ১১ বার সেনা অভ্যুত্থান হয়েছে তাইল্যান্ডে। কিন্তু তখনও পর্যটকদের অসুবিধা হয়নি। আর এ বার তো সমস্যার সম্ভাবনা আরও কম। কারণ অন্য বারের তুলনায় এ বার তাইল্যান্ডের রাস্তায় সেনাবাহিনীর জোরদার উপস্থিতি নেই বললেই চলে। কলকাতা থেকে ব্যাঙ্ককে নিয়মিত যাতায়াত করে এমন একটি বিমান সংস্থার ‘কান্ট্রি ম্যানেজার’ অরিন্দম চৌধুরী বললেন, “২০০৬-এ রাজনৈতিক অস্থিরতার জন্য এক বার ব্যাঙ্কক বিমানবন্দর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এ বার সে রকম নয়। রাজনৈতিক নেতা ও সেনাকর্তারা আশ্বাস দিয়েছেন, কোনও ভাবেই বিমানবন্দর বন্ধ হবে না।” তিনি আরও জানালেন, ৯০ শতাংশ বিমানের আসন ভর্তি হয়ে গিয়েছে। কেউ টিকিটও বাতিল করেননি।

কিন্তু পর্যটকরা যে পুরোপুরি ভরসা পাচ্ছেন না, তার ইঙ্গিত মিলেছে ‘ট্র্যাভেল এজেন্ট ফেডারেশনের’ ‘ইস্টার্ন জোন’-এর চেয়ারম্যান অনিল পঞ্জাবীর কথায়। তিনি বলেন, “ব্যাঙ্কক যেতে যাঁদের ১৫-২০ দিন বাকি, তাঁরা টিকিট বাতিল করছেন না। কিন্তু দু-তিন দিনের মধ্যেই যাঁদের রওনা হওয়ার কথা ছিল, তাঁরা টিকিট বাতিল করে দিয়েছেন।”

এ তো গেল যাঁরা ব্যাঙ্ককে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছেন, তাঁদের কথা। কিন্তু ইতিমধ্যেই যাঁরা ব্যাঙ্কক-ভ্রমণ সেরে এসেছেন, তাঁদের অভিজ্ঞতা কেমন? লিলুয়ার বাসিন্দা পুষ্পিত রায়চৌধুরী শনিবার সকালেই কলকাতা বিমানবন্দরে নেমেছেন। তিনি বললেন, “দিনের বেলায় ঘোরাঘুরি করতে পারলেও রাত ১০টার পরে হোটেল থেকে বেরোতে পারিনি। ফলে রাতের শহরটা দেখাই হল না। তেমন ভাবে শপিংও করতে পারলাম না।’’ পুস্পিতবাবুর কলকাতায় ফেরার কথা ছিল ২৭ মে। কিন্তু ওখানকার পরিস্থিতি দেখে দু’দিন আগেই ব্যাঙ্কক থেকে উড়ান ধরেছেন তিনি। কিছুটা একই মত খিদিরপুরের বাসিন্দা শেখ ইস্তেহারের। ব্যাঙ্কক থেকে জামাকাপড় আমদানির ব্যবসা করেন তিনি। এ দিন কলকাতায় নেমে তাঁর বক্তব্য, “ও দেশে দিনে কোনও সমস্যা নেই।” কারণ অবশ্য একটাই। পর্যটন ব্যাঙ্ককের আয়ের অন্যতম উৎস। তাই শত আন্দোলনের মধ্যেও ওই ব্যবসাকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করে প্রশাসন।

সে কথা অবশ্য ইস্তেহারও জানিয়েছেন। তাঁর মতে, বেশি রাতেও বিমানবন্দরে যেতে চাইলে কোনও অসুবিধা নেই। হাতে বোর্ডিং পাস থাকলেই সেনা ছাড় দিচ্ছে। আর ব্যাঙ্ককের বিমানবন্দর যে বন্ধ হওয়ার সম্ভাবনা নেই, সে আশ্বাসের কথাও বলছে প্রশাসন।

তবুও আরও কিছু দিন দেখে নিতে চাইছেন কলকাতার ভ্রমণপিপাসুরা। যেমন তেঘরিয়ার রাঘব সামন্ত। গরমের ছুটিতে পরিবারকে নিয়ে ব্যাঙ্ককে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাঁর। রাঘববাবু বলেন, “ব্যাঙ্কক শহর ছেড়ে কাছাকাছি কয়েকটি জায়গায় যাব ভেবেছিলাম। কিন্তু ওখানকার যা পরিস্থিতি তাতে সাহস পাচ্ছি না। ভাবছি সিঙ্গাপুরই ঘুরে আসব।” রাঘববাবুর মতো মত বদলাচ্ছেন আরও অনেকেই।

bangkok tourism tourist
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy