অপরাধের পরিসর ছোট নয় মোটেই। ছুরি বা বন্দুক রাখা, মাদক সেবন, খুনের হুমকি দেওয়া, জাতিবিদ্বেষ থেকে মায় ধর্ষণ পর্যন্ত। কিন্তু কেবল একটা ছোট্ট দুঃখপ্রকাশ। তা হলেই মিলবে যাবতীয় অভিযোগ থেকে মুক্তি। অপরাধ জগতে সদ্য হাতেখড়ি হয়েছে, এমন তরুণ অপরাধীরা এক বার ক্ষমা চাইলে সঙ্গে সঙ্গেই ছেড়ে দিচ্ছে ব্রিটিশ পুলিশ। ব্রিটেনের এক দৈনিকের হিসেব মতো, গত এক বছরে এই করে পার পেয়ে গিয়েছে প্রায় তিরিশ হাজার যুবক-যুবতী।
আদালতে মামলা ওঠার হ্যাপা নেই। জেল বা জরিমানার ভয় তো নেইই। কারণ পুলিশের খাতায় তেমন অভিযোগই যে লেখা হবে না। প্রথম বার কোনও ভুলচুক হয়ে গেলে গায়ে দাগি তকমা যাতে না পরে তাই এমন দাওয়াই চালু হয়েছে ইংল্যান্ডে।
এক বার মাদক সমেত ধরা পড়লে বা কটূক্তি করলে কোনও সদ্য যুবক বা যুবতীকে গারদে পোরার পক্ষপাতী নন অনেকেই। তাঁদের মতে, এতে ভিড়ে হাঁফদশা করা জেলগুলি একটু স্বস্তি পাবে। তা ছাড়া এক বার ছোটখাটো অন্যায়ের পরই যদি কোমরে দড়ি পরিয়ে পুলিশ টেনে নিয়ে যায় তা হলে অপরাধ প্রবণতা আরও বাড়বে। বরং ক্ষমা চেয়ে ভুল শোধরানোর আশ্বাসেই কাজ হবে বেশি।
বিপক্ষের যুক্তিও অবশ্য কম নয়। ব্রিটেনের অনেক বাসিন্দারই আশঙ্কা, দেশ জুড়ে অপরাধের সংখ্যা এতে আরও বাড়বে। আর ছোটখাটো অপরাধের তকমা যাকে দেওয়া হচ্ছে, তার মধ্যে তো ধর্ষণও আছে। মুখে এক বার ‘দুঃখিত’ বললেই কি ধর্ষিতা তাকে ক্ষমা করে দিতে পারবে! একুশের তরুণী ক্রিস্টি মিলসের বাড়িতে ডিম ছুড়েছিল এক জন। ক্রিস্টির কথায়, “ছেলেটি যখন ভুল হয়ে গিয়েছে বলতে আসে, তখন দেখি মুখে মিচকি হাসি।”
হোম অফিসের তলব পেয়ে গত এপ্রিল থেকে এ বছর জানুয়ারি পর্যন্ত রিপোর্ট জমা দিয়েছিল পুলিশ বাহিনী। তাতে দেখা যাচ্ছে, আঠারো বছর বয়স হয়নি এমন ৩৭,১৬৮ জনকে সামান্য বকেঝকেই ছেড়ে দিয়েছিল তারা। এর মধ্যে যৌন নিগ্রহের ঘটনাই ২২২টা। অস্ত্র নিয়ে ঘোরা সত্ত্বেও মামলা রুজু হয়নি প্রায় দেড়শো জনের বিরুদ্ধে। এক বার ক্যানসার আক্রান্ত এক ব্যক্তির বাইক খোয়া যায়। ধরা পড়ে নাবালক অপরাধীরা। তাদের বলা হয়েছে সমাজসেবার কাজে হাত লাগাতে।
ভুল শোধরানোর সুযোগ দিলেই বদল আসবে, এখন এই আশাতেই বুক বাঁধছেন ব্রিটেনবাসী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy