Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

নারাজ কিশোরীকে কেমো দিতে নির্দেশ আদালতের

সঠিক ভাবে চিকিৎসা হলে বেঁচে থাকবার সুযোগ আছে তার। সে সুযোগ ৮৫ শতাংশ। আর তা না হলে, দু’বছরের মধ্যেই মৃত্যু। ১৭ বছরের নাবালিকা কাসান্দ্রাকে এমনই আশা দিচ্ছেন তার চিকিৎসকেরা। কিন্তু তা সত্ত্বেও কেমোথেরাপি নিতে রাজি নয় কাসান্দ্রা। তাই অবশেষে কানেক্টিকাট সুপ্রিম কোর্ট এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য হল। প্রয়োজন হলে যাতে কাসান্দ্রাকে কেমো নেওয়ার জন্য রাজ্য প্রশাসন বাধ্য করতে পিছপা না হয়, বৃহস্পতিবার সেই রায়ও দিল সুপ্রিম কোর্ট।

সংবাদ সংস্থা
কানেক্টিকাট শেষ আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০১৫ ০২:৪৬
Share: Save:

সঠিক ভাবে চিকিৎসা হলে বেঁচে থাকবার সুযোগ আছে তার। সে সুযোগ ৮৫ শতাংশ। আর তা না হলে, দু’বছরের মধ্যেই মৃত্যু। ১৭ বছরের নাবালিকা কাসান্দ্রাকে এমনই আশা দিচ্ছেন তার চিকিৎসকেরা। কিন্তু তা সত্ত্বেও কেমোথেরাপি নিতে রাজি নয় কাসান্দ্রা। তাই অবশেষে কানেক্টিকাট সুপ্রিম কোর্ট এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য হল। প্রয়োজন হলে যাতে কাসান্দ্রাকে কেমো নেওয়ার জন্য রাজ্য প্রশাসন বাধ্য করতে পিছপা না হয়, বৃহস্পতিবার সেই রায়ও দিল সুপ্রিম কোর্ট।

সেপ্টেম্বর মাসে ‘হজকিনস্ লিম্ফোমিয়া’ ধরা পড়ে কাসান্দ্রার। আমেরিকান ক্যানসার সোসাইটি জানিয়েছে, চিকিৎসা করালে সহজেই সেরে যেতে পারে এই রোগ। রাজি নয় কাসান্দ্রা। ‘ইচ্ছের বিরুদ্ধে’ তিন সপ্তাহ কেমো নিতে হয়েছে তাকে। তার পরই বেঁকে বসে সে। যেতে চায় না হাসপাতালে। অগত্যা চিন্তায় পড়েন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কী করবেন ভেবে না পেয়ে তাঁরা দ্বারস্থ হন কানেক্টিকাটের শিশুকল্যাণ দফতরের। ওই দফতরের নির্দেশেই মাকে ছেড়ে অন্য এক আত্মীয়ের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয় কাসান্দ্রাকে। সেখান থেকেই চলতে থাকে তার চিকিৎসা।

ঘটনা এখানেই শেষ নয়। মায়ের থেকে দূরে থাকতে আর পারছিল না এই নাবালিকা। তাই চিকিৎসায় আর কোনও ব্যাঘাত ঘটাবে না এই শর্তে মায়ের কাছে ফিরে যাবার অনুমতি পায় কাসান্দ্রা। কিন্তু, ১৭ নভেম্বরের পর দু’দিন কেমো নিলেও তার পরের সপ্তাহ থেকেই আবার হাসপাতালে যেতে অস্বীকার করে কাসান্দ্রা।

তখনই এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে কোর্ট। আদালত জানায়, কাসান্দ্রা এখনও নাবালিকা। নিজের ভাল-মন্দ বোঝা, গুরুত্বর্পূণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার বোধটাই এখনও তৈরি হয়নি তার। তাই প্রয়োজনে কেমো নিতে বাধ্য করা হোক তাকে। কিন্তু আদালতের এই রায়কে ঘিরে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কাসান্দ্রার আইনজীবী বলেছেন, কানেক্টিকাট এবং আরও অন্যান্য জায়গায় ১৭ বছরেই একটি মেয়ে তার গর্ভপাত, রক্তদান, বা মানসিক সমস্যায় সাহায্য চাওয়ার মতো বিষয়ে নিজেই সিদ্ধান্ত নিতে পারে। তা হলে, এই ক্ষেত্রে কেন কাসান্দ্রাকে নিজে সিদ্ধান্ত নিতে দেবে না আদালত?

কী কারণে কাসান্দ্রার এই সিদ্ধান্ত সে বিষয়ে অবশ্য নিজের মক্কেলের গোপনীয়তা বজায় রাখার জন্য মুখে কুলুপ এঁটেছেন কাসান্দ্রার আইনজীবী। তবে তিনি বলেছেন, “সে (কাসান্দ্রা) হাসপাতালের একটি ঘরে থাকতে থাকতে হতাশ হয়ে পড়ছে।... আর থাকতে পারছে না।” কাসান্দ্রার মা বলেছেন নিজের শরীরে ‘বিষ’ ঢোকাতে মোটেই রাজি নয় কাসান্দ্রা।

‘কারণ’ যা-ই হোক, আদালত মোটেও এই সব যুক্তি-তর্কে বাঁধা পড়তে চায় না। চিকিৎসকেরা বলেছেন, কাসান্দ্রার চিকিৎসা এখন মাঝপথে। আর এখন তা থামিয়ে দিলে মারাত্মক হতে পারে। তাই তর্ক নয়, একটি মেয়ের প্রাণ বাঁচানোই আদালতের এখন একমাত্র লক্ষ্য।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Connecticut
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE