ব্র্যাড পিটকে ঘুষি, খলনায়ক সেই ভিতালি

অসংখ্য ভক্ত সার দিয়ে দাঁড়িয়ে। আর মাঝখানে লাল কার্পেটের উপর ব্র্যাড পিট। দেদার অটোগ্রাফ বিলোচ্ছেন। ঠোঁটে সেই ভুবনভোলানো হাসি। এ পর্যন্ত ঠিকই ছিল সব। হঠাৎই কোথা থেকে চলে এলেন খলনায়ক। কিছু ঠাউর করে ওঠার আগেই ব্র্যাডের মুখে কষিয়ে দিলেন প্রচণ্ড ঘুষি। আরও হয়তো কিছু করতেন। কিন্তু তার আগেই তাঁকে ধরে ফেলেছেন নিরাপত্তারক্ষীরা। তাঁদের মধ্যেই কেউ বলে উঠলেন, “আরে এ তো সেই ভিতালি সেডিউক!”

কে ইনি? কোনও বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব? না কি দাগি অপরাধী?

সঠিক উত্তর, কোনওটাই নয়। পঁচিশ বছরের এই ইউক্রেনীয় চিত্রসাংবাদিকের একমাত্র কাজ, যে কোনও অনুষ্ঠানে জোর করে ঢুকে পড়ে আজব কাণ্ডকারখানা ঘটানো। ঠিক যেমন করেছিলেন কান চলচ্চিত্র উৎসবে। চলতি মাসের গোড়ার দিকে ওই উৎসবে সহ-অভিনতা ও অভিনেত্রীদের সঙ্গে নিয়ে রেড কার্পেটের উপর হাঁটছিলেন হলিউড অভিনেত্রী আমেরিকা ফেরারা। হঠাৎই সেখানে ঢুকে পড়েন ভিতালি। সটান সিঁধিয়ে যান ফেরারার গাউনের তলায়। নিরাপত্তারক্ষীরা তড়িঘড়ি তাঁকে ধরে ফেলেন। সে ঘটনার পর এক মাসও পেরোল না। বুধবার তিনি ‘হামলা’ চালালেন ব্র্যাড পিটের উপর।

ঠিক কী হয়েছিল গত কাল? পুলিশ জানিয়েছে, নিজের নতুন ছবির প্রিমিয়ার উপলক্ষে বুধবার হলিউডের এল ক্যাপিটান প্রেক্ষাগৃহে হাজির হয়েছিলেন অ্যাঞ্জেলিনা। সঙ্গে পাঁচ ছেলেমেয়ে। লাল কার্পেটের উপর দিয়ে কিছু ক্ষণ একসঙ্গে হাঁটেন তাঁরা। তার পর ভক্তদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে কিছুটা এগিয়ে যান অ্যাঞ্জেলিনা। পিছনে ব্র্যাড তখন অটোগ্রাফ দিচ্ছেন। কখনও বা মুচকি হেসে দু’একটা কথাও বলছেন। সকলেরই নজর রেড কার্পেটের দিকে। এমন সময় হঠাৎই নিরাপত্তার বেড়া টপকে কার্পেটের উপর চলে আসেন ভিতালি। প্রথমে ব্র্যাডকে জড়িয়ে ধরেন। তার পরই সজোরে ঘুষি ব্র্যাডের মুখে...

তবে আহত হননি ‘মিস্টার স্মিথ।’ টাল সামলে নেন কয়েক মুহূর্তেই। ততক্ষণে নিরাপত্তারক্ষীরা রে রে করে তেড়ে এসেছেন। ধরে ফেলেছেন ভিতালিকে। তখনও পালানোর চেষ্টা করছিলেন তিনি। কিন্তু পুলিশ তাঁকে ধরে ফেলে। গ্রেফতার হন ‘রেড কার্পেটের কীট’।

হ্যাঁ, এই তকমাই পেয়েছেন ভিতালি। ইতিহাস বলছে, আমেরিকা ফেরারা এবং ব্র্যাড পিট ছাড়াও একাধিক তারকা ভিতালির আচমকা হামলার শিকার হয়েছেন। কখনও উইল স্মিথকে চুমু খেতে গিয়েছেন তিনি, কখনও বা জড়িয়ে ধরেছেন ব্র্যাডলি কুপারের পা। বাদ যাননি লিওনার্দো ডি ক্যাপ্রিও-ও। এবং সব হামলাই হয়েছে রেড কার্পেটের উপর।

ব্র্যাড পিটের ক্ষেত্রেও সে নিয়মের কোনও ব্যতিক্রম হল না। কিন্তু কেন এমন কাণ্ড বার বার করছেন ভিতালি?

কারও কারও ব্যাখ্যা, হয়তো খবরের শিরোনামে থাকার আকুলতা থেকেই এ সব করেন তিনি। কারও আবার ধারণা, মানসিক ভাবে সম্পূর্ণ সুস্থ নন চিত্রসাংবাদিক। তবে বুধবারের ঘটনার পর পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবেই এমন করেছেন ভিতালি।

অ্যাঞ্জেলিনার মুখে অবশ্য অন্য কথা। এমনিতে সন্তানদের নিজের ছবির প্রিমিয়ারে আনেন না তিনি। কিন্তু এ ছবিতে তাঁর পাঁচ বছরের মেয়ে ভিভিয়েনও অভিনয় করেছে। তাই বোধহয় বুধবার সন্ধেটাকে একটু অন্য রকম করতে চেয়েছিলেন হলিউডের বিখ্যাত তারকা-দম্পতি।

অন্য রকম তো হলই। তবে চিত্রনাট্যে ঘুষির ক্লাইম্যাক্সটা না থাকলেও চলতো!