পাক সেনাবাহিনীর জঙ্গি-দমন অভিযানে এ বার খতম পেশোয়ারের সেনা স্কুলে হামলার অন্যতম চক্রী সাদ্দাম। বৃহস্পতিবার রাতে সেনার সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে প্রাণ হারায় পাক তালিবানের এই কম্যান্ডার। প্রাথমিক ভাবে ধারণা, গত সপ্তাহে স্কুলে যে সাত জঙ্গি তাণ্ডব চালিয়েছিল, তাদের পেশোয়ারে নিয়ে আসার দায়িত্বে ছিল এই সাদ্দামই।
স্থানীয় প্রশাসনের কর্তা শাহাব আলি শাহ আরও জানান, এই অভিযানে সাদ্দামের ছ’জন সঙ্গীও জখম হয়েছে। এর পাশাপাশি মার্কিন ড্রোন হানাতেও শুক্রবার আরও চার জঙ্গির মৃত্যু হয় বলে খবর। কিন্তু ঘটনা হল, যে এলাকায় এ সব অভিযান চলছে সেখানে সংবাদমাধ্যম পৌঁছতে পারে না। ফলে সরকারি সূত্রে মেলা এই নিহতের সংখ্যা আদৌ কতটা বিশ্বাসযোগ্য, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।
পাক প্রশাসন অবশ্য এ সব নিয়ে উদ্বিগ্ন নয়। বরং তাদের নজর জঙ্গি-খতম অভিযানে। সাদ্দাম-হত্যার পর করাচিতে এ দিনই দু’টি আলাদা ঘটনায় সন্দেহভাজন আরও সাত জঙ্গিকে শেষ করেছে পাক রেঞ্জার্স। এতেই থামছে না তালিবান-বিরোধী অভিযান। জঙ্গি-কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত থাকার অপরাধে দোষী সাব্যস্ত দুই জঙ্গিকে আগামী ১৪ জানুয়ারি ফাঁসিতে ঝোলানোর নির্দেশ দিয়েছে লাহৌরের এক আদালত।
এই তৎপরতার পাল্টা দিতে তালিবান যে কোনও না কোনও ছক কষবেই, তা আঁচ করেছিল পাক নিরাপত্তাবাহিনী। হলও তাই। এ দিন লাহৌরের কোট লাখপত জেলে হামলা চালিয়ে ৫০ জন মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত অপরাধীকে ছাড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার ষড়যন্ত্র করেছিল তালিবান। যা বানচাল করেছে পাক নিরাপত্তাবাহিনী। সূত্রের খবর, ওই ৫০ জন জেলবন্দির মধ্যে অন্তত পাঁচ জনের মৃত্যুদণ্ডের উপর বেশ কিছু দিন ধরে স্থগিতাদেশ বলবৎ ছিল। গত কালই সেই স্থগিতাদেশ তুলে দেওয়ার নির্দেশ দেয় লাহৌর হাইকোর্ট। তার ফলে উমর নাদিম, এহসান আজিম, আমির ইউসুফ, আসিফ ইদ্রিস ও কামরান নামের ওই পাঁচ জঙ্গির যে কোনও সময় ফাঁসি হতে পারে বলে জানান জেল সুপার আসাদ ওয়ারিয়াক। এ দিনের জেলে হামলার ষড়যন্ত্রে যুক্ত সন্দেহে কোট লাখপত জেলের লাগোয়া এলাকা থেকে দুই মহিলা-সহ তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। উদ্ধার হয়েছে রকেট লঞ্চার, সেনা উর্দি, আগ্নেয়াস্ত্র।
এ সবের পর তাই আরও সতর্ক প্রশাসন। শতাধিক সন্দেহভাজন জঙ্গিকে গ্রেফতার করেছে তারা। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ১০টি অ-নথিভুক্ত ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানও। সব মিলিয়ে ৭০০০ সন্দেহভাজন জঙ্গিকে দ্রুত হেফাজতে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে পাক অভ্যন্তরীণ মন্ত্রক। এর পাশাপাশি লাল মসজিদের মৌলবি মৌলানা আব্দুল আজিজের বিরুদ্ধে জামিন-অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে ইসলামাবাদের এক আদালত। পেশোয়ারের সেনা স্কুলে হামলার সমালোচনা করতে রাজি ছিলেন না আব্দুল। সে নিয়ে লাল মসজিদের বাইরে বিক্ষোভ জানাচ্ছিলেন মানবাধিকার সংগঠনের কর্মীরা। বিষয়টি নিয়ে এফআইআরও করা হয়। সেই অভিযোগের তদন্তকারী অফিসারের আর্জির ভিত্তিতেই এ দিন আব্দুলের গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন সাকিব।
এ দিন ইসলামাবাদের হাইকোর্টে মুক্তির আবেদন জানিয়েছে জাকিউর রহমান লকভি। তার আইনজীবীর যুক্তি, যে ভাবে লকভিকে আটকে রাখা হয়েছে তা বেআইনি। বার বার অনুরোধ করা সত্ত্বেও তাকে ছাড়তে নারাজ পাক-প্রশাসন। তাই হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy