প্রতীকী চিত্র।
দুই পাশে এক শহরের দুই অংশ, মাঝখানে নদী! দুই দিকের সঙ্গে সংযোগ সড়ক নদীর তলা দিয়ে! চিনের ওয়াংপু নদীর দুই তীরে দাঁড়িয়ে আছে এশিয়ার বিখ্যাত সাংহাই নগরী। এক তীরে পুডং, অপর তীরে পুশি।
এ বার বাংলাদেশের পালা..! ঠিক ‘সাংহাই সিটি’র আদলে বাংলাদেশে গড়ে উঠতে যাচ্ছে স্বপ্নের শহর। বেছে নেয়া হয়েছে চট্টগ্রামকে। ‘সাংহাই সিটি’র আদলে চট্টগ্রামও হবে দুই পাড়ের নগরী। মাঝখান চিরে বেরিয়ে যাবে কর্ণফুলি নদী। এক পাশের তীর ঘেঁষে এখনকার চট্টগ্রামের মূল শহর। অপর পাড়ের কয়েকটি উপজেলা নিয়ে গড়ে উঠবে শহরের বর্ধিত অংশ। পুরোন, নতুন দুই চট্টগ্রাম শহরকে এক করে দেবে সড়ক পথ। সংহাই-এর মতো এ পথও যাবে নদীর নীচ দিয়ে।
স্বপ্নই পূরণ করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। কর্ণফুলি নদীর তলা দিয়ে দীর্ঘ সাড়ে তিন কিলোমিটার বহু লেনের টানেল নির্মাণের পরিকল্পনা পাকা হয়েছিল আগেই। আর্থিক অনুদান এবং ঋণ দিয়ে এই প্রকল্পে সাহায্য করছে চিন।
শুক্রবার চিনের সঙ্গে হয়ে গেল এই ঋণ চুক্তি। চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর উপস্থিতিতে প্রকল্পের অর্থযোগানদাতা চিনের এক্সিম ব্যাঙ্ক এবং বাংলাদেশ সরকারের সেতুবিভাগের মধ্যে চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং যৌথভাবে কর্ণফুলি নদীর তলদেশে বহু লেনের সড়ক টানেল নির্মাণ প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনও করেন। এই প্রকল্পের আনুমানিক ব্যয় সাড়ে পাঁচ হাজার থেকে ছয় হাজার কোটি বাংলাদেশি টাকা।
বাংলাদেশের সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের কথায়, “শেখ হাসিনার নেতৃত্বে একটা যুগান্তকারী পদক্ষেপ।” তিনি জানান, “চট্রগ্রাম নগরীর নেভাল একাডেমি থেকে কাফকো (কর্ণফুলি ফার্টিলাইজার) পর্যন্ত সাড়ে তিন কিলোমিটার দীর্ঘ হবে এই টানেল। দুই কিলোমিটার নিম্ন স্রোত থেকে প্রকল্পের কাজ শুরু হবে। টানেলটি একই সঙ্গে ন্যাশনাল হাইওয়ে ও এশিয়ান হাইওয়ের সঙ্গে যুক্ত থাকবে।”
ওবায়দুল কাদের বলেন, “কর্ণফুলি নদীর ওপর বর্তমানে দুটি ব্রিজ রয়েছে। ব্রিজের কারণে নদীতে প্রতিনিয়ত সিলটেশন (পলি জমা) হচ্ছে। নদীর নাব্যতা রক্ষার স্বার্থে আরেকটি ব্রিজ নির্মাণ সম্ভব নয়। আরেকটি ব্রিজ নির্মাণ করলে বন্দর ধ্বংস হয়ে যাবে। টানেল নির্মাণের মাধ্যমেই বন্দরের স্বাভাবিক কাযক্রম ঠিক রাখা হবে। টানেল হলে বন্দরের কাজে গতিশীলতা বাড়বে।” এই টানেল নির্মাণের কাজ শুরু হবে আগামী ডিসেম্বর থেকে।
এদিকে প্রকল্প পরিচালক ইফতিখার কবীর জানিয়েছেন, “কমার্শিয়াল এগ্রিমেন্টে প্রকল্প মেয়াদ পাঁচ বছর। চুক্তি মতো ইতিমধ্যে এক বছর পার হয়ে গেছে। বাকি চার বছরের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ করতে হবে। আশা করি সম্ভব হবে।” নদীর তলা দিয়ে টানেল বাংলাদেশে এই প্রথম।
আরও পড়ুন:
পদ্মা-মেঘনায় ইলিশের অভয়াশ্রম বেড়ে ৪২০ বর্গকিলোমিটার হচ্ছে
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy