জসীম উদ্দিন মণ্ডল।
প্রয়াত কমরেড জসীম উদ্দিন মণ্ডল (৯৫)। বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন তিনি। গত ২৮ সেপ্টেম্বর তাঁর গ্রামের বাড়ি ঈশ্বরদীতে থাকার সময় শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে আসা হয়। এর আগেও দীর্ঘ দিন তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সোমবার সকাল ৬টা নাগাদ ঢাকার হেলথ অ্যান্ড হোপ হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। মঙ্গলবার সকালে জসীম মণ্ডলের মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সবার শ্রদ্ধা জানানোর জন্য রাখা হবে।
বাংলাদেশে অগ্নিযুগের শেষ বেঁচে থাকা বিপ্লবী- বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির উপদেষ্টা এবং ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা জসীম উদ্দিন মণ্ডল। জসিম মন্ডল তাঁর বাবার সঙ্গে কোলকাতায় নারকেলডাঙা রেল কলোনিতে থাকতেন। সে সময়ে মাত্র ১৪ বছর বয়সে ব্রিটিশবিরোধী মিছিলে যোগ দিয়ে রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৪০-এ শিয়ালদহে ১৫ টাকা বেতনে রেলের চাকরি শুরু করেন। সে বছরেই ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির সদস্যপদ পান। রেলের শ্রমিক আন্দোলনে তিনি জ্যোতি বসুর সহকর্মী ছিলেন। ১৯৪৬-এর নির্বাচনে জ্যোতি বসুর হয়ে প্রচারে সক্রিয় অংশ নেন। ১৩ বছর বয়সে কলকাতায় ট্রাম শ্রমিকদের আন্দোলনে শরীক হয়ে তার রাজনীতিতে হাতেখড়ি। নিজের বামপন্থী হওয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলতেন, “কিশোরকালে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে মুসলিম লিগের মিছিল ভাল না লাগায় কমিউনিস্টদের লাল ঝান্ডার মিছিলে ভিড়ে গিয়েছিলাম।”
আরও পড়ুন: সীমান্তে আটকে কয়েক হাজার রোহিঙ্গা
রিভলভার হাতে নিয়ে ব্রিটিশ রাজের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করেছিলেন তিনি। পরে কমিউনিস্ট হিসাবে দীক্ষা। কলকাতায় মনুমেন্টের নীচে স্লোগান তুলেছিলেন— ‘ইয়ে আজাদি ঝুটা হ্যায়’। তার পর পার্টির নির্দেশেই চলে এসেছিলেন সে সময়ের পাকিস্তানে। পাবনাতে অমূল্য লাহিড়ি, প্রসাদ রায় সহ কয়েকজন মিলে পার্টি গড়ে তোলার কাজে হাত দেন।
১৯২০ সালে কুষ্টিয়া জেলা কালীদাশপুর গ্রামে জসিম মণ্ডলের জন্ম। বাবা হাউসউদ্দীন মণ্ডল রেলে কর্মরত থাকার সুবাদে সিরাজগঞ্জে, রানাঘাটে, পার্বতীপুর, ঈশ্বরদী, কলকাতায় তাঁর সময় কেটেছে। অনলবর্ষী বক্তা হিসেবে দেশজুড়ে জনপ্রিয় ছিলেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy