ছবি: প্রতীকী।
আত্মসমর্পণ করে বিস্ফোরক স্বীকারোক্তি নব্য জেএমবি-র দুই জঙ্গির।
বুধবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের (নব্য জেএমবি) দুই সদস্য আব্দুল হাকিম ও মাহমুদুল হাসান বিজয়। তারা জেএমবি-র আত্মঘাতী স্কোয়াডের শেষ ধাপ ‘হিযরত’ করার জন্য মনোনীত হয়েছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে আত্মসমর্পণ করে তারা।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, এদের মধ্যে হাকিম ঢাকার গুলশনে হোলি আর্টিজান বেকারি রেস্তোরাঁয় হামলার ঘটনায় নিহত জঙ্গি খায়রুলের ঘনিষ্ঠ সহচর ছিল।
ওই জঙ্গিদের এক জন বগুড়ার আবুল হাকিম এ দিন প্রকাশ্য সমাবেশে নিজের দোষ স্বীকার করে বলে, “আমি জেএমবি-র কয়েকটি সভায় যাই। এ সব সভায় আমাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, হিন্দু পুরোহিত, খ্রিস্টান এবং শিয়া সম্প্রদায়কে টার্গেট করে তাদের হত্যা করা কিংবা কী ভাবে হত্যা করা যায় তাতে সহযোগিতা করার জন্য।”
হাকিমের সঙ্গে আত্মসমর্পণ করে গাইবান্ধার মাহমুদুল হাসান বিজয়ও। বগুড়ার শহিদ টিটু মিলনায়তনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের উপস্থিতিতে তারা আত্মসমর্পণ করে।
অনুষ্ঠানে কলেজ শিক্ষার্থী হাকিম ও বিজয়ের দাবি, আলোকিত মানুষ হওয়ার স্বপ্ন ছিল তাঁদের। সে পথে দেওয়াল হয়ে দাঁড়িয়েছিল অন্ধকার জগতের কিছু মানুষ। প্রথমে তারা ইসলামি ছাত্র শিবিরে যোগ দেন। পরে সেখান থেকে নব্য জেএমবি-র ব্যানারে তাঁদের নাশকতা চালানোর প্রশিক্ষণ দেয় জঙ্গিরা। তবে ঢাকার হোলি আর্টিজান রেস্তোরাঁ ও কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার পর নিজেরাই অনুধাবন করেছে তারা কতটা ভুল পথে ছিল। অনুষ্ঠানে মাহমুদুল হাসান বিজয় বলে, “আমি যে পথে ছিলাম তা আসলেই একটি অন্ধকারের পথ। এখানে বাঁচার কোনও ইচ্ছে মানুষের থাকে না। আত্মসমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার আহ্বানে আমি উদ্বুদ্ধ হই।”
আরও পড়ুন
বাংলাদেশে আবারও জঙ্গি হামলার পরিকল্পনা?
হাকিম ও বিজয়ের মতো বাকি জঙ্গিরা আত্মসমর্পণ করে যদি সুস্থ জীবনে ফিরে আসতে চায়, তা হলে তাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সহায়তা করবে বলে জানান র্যাবের মহাপরিচালক বেনজির আহমেদ। তিনি বলেন, “র্যাবের তত্ত্বাবধানে আমরা এদের পুনর্বাসন করব, যাতে তারা সমাজের মূলধারায় ফিরে আসতে পারে।”
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানান, আত্মসমর্পণ করা হাকিম ও বিজয়কে নাশকতার জন্য প্রশিক্ষণ দেয় জামাত শিবির। স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসা জঙ্গিদের সরকার পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করবে বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন, “দুই জঙ্গি সদস্য অকপটে স্বীকার করেছেন, কারা তাদের বড় ভাই। সে-ই জামাতে ইসলামির সদস্য, শিবিরের সদস্য। তারাই আত্মসমর্পণকারী জঙ্গিদের বিপদগ্রস্ত করেছে।” স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, “জঙ্গি কার্যকলাপের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, আত্মসমর্পণ করুন। অন্যথায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের খুঁজে বের করে আনবে।”
আরও পড়ুন
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy