একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়া মুক্তিযোদ্ধাকে স্বীকৃতি দিয়ে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বহাল রাখল আপিল বিভাগ। মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এস কে) সিনহার নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন। মুক্তিযুদ্ধে ন্যাশনাল আওয়ামি পার্টি (ন্যাপ), কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) ও ছাত্র ইউনিয়নের দুই হাজার ৩৬৭ গেরিলা যোদ্ধাকে স্বীকৃতি দেওয়া হল। আদালত ওই মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সরকারের বরাদ্দ সব সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
১৯৭১ সালে ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা একটি গেরিলা বাহিনী গঠন করে মুক্তিসংগ্রামে অংশ নেয়। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালের ৩০ জানুয়ারি ঢাকা জাতীয় স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিক ভাবে বঙ্গবন্ধুর কাছে অস্ত্রও সমর্পণ করেছিলেন এই গেরিলারা।
বেঞ্চের অপর সদস্যরা হলেন বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার। আর রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা। মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধরী। তাঁর সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার ঊর্মি রহমান।
আরও পড়ুন
গড় আয়ুতেও বাংলাদেশের চেয়ে পিছিয়ে গেছে পাকিস্তান
গত ৯ অক্টোবর রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত রায় স্থগিত করে শুনানির জন্য পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন। বিচারপতি গোবিন্দচন্দ্র ঠাকুর ও আবু তাহের মো. সাইফুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ গত ৮ সেপ্টেম্বর এ বিষয়ে একটি রুলের নিষ্পত্তি করে দুই হাজার ৩৬৭ জন গেরিলা মুক্তিযোদ্ধার সনদ প্রদান বিষয়ে গেজেট বাতিলকে অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন। এ রায় স্থগিত চেয়ে গত ২৫ সেপ্টেম্বর আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালের ২৪ জুলাই মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় গেরিলা বাহিনীর সদস্য কমরেড মণি সিংহ, অধ্যাপক মোজাফ্ফর আহমদ, পঙ্কজ ভট্টাচার্য-সহ দুই হাজার ৩৬৭ জনকে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দিয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে। কিন্তু, ২০১৪ সালের ২৯ অক্টোবর ওই বিজ্ঞপ্তি বাতিল করে সরকার। এ সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে আদালতে একটি রিট আবেদন করেছিলেন ঐক্য-ন্যাপের সভাপতি পঙ্কজ ভট্টচার্য।
পরের বছরের ১৯ জানুয়ারি ওই আবেদনের প্রাথমিক শুনানি করে বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও বিচারপতি মো. খসরুজ্জামানের বেঞ্চ গেজেট বাতিলের বিজ্ঞপ্তির কার্যকারিতা তিন মাসের জন্য স্থগিত করেন। সেই সঙ্গে দেওয়া রুলে ওই বিজ্ঞপ্তি কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিজ্ঞপ্তিতে স্বাক্ষরকারী উপ সচিব ও জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের মহাপরিচালকের কাছে জানতে চাওয়া হয়।
ওই গেরিলা মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে আবেদনকারী পঙ্কজ ভট্টাচার্য বলেন, মুক্তিযুদ্ধকালীন অস্থায়ী সরকার এবং স্বাধীনতা-উত্তর বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বাধীন সরকার-সহ প্রতিটি সরকার এ বিশেষ গেরিলা বাহিনীকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy