সে সমস্ত মুহূর্তগুলো ছিল খুব সুন্দর। যখন রাজবীর ছোট ছিল, কাজের শেষে বাবা বাড়িতে এলেই সে দৌড়ে গিয়ে উঠে পড়ত বাবার কাঁধে। রাজবীরের বাবা, সুব্রত ছিলেন একজন ডেলিভারি ম্যান। সংসার চালানোর জন্য প্রতি দিন বিপুল পরিশ্রম করতেন তিনি। তাঁর প্রতিজ্ঞা ছিল যে, তিনি তাঁর ছেলেকে সেই সমস্ত কিছু দেবেন যা তিনি নিজে কখনও পাননি কিংবা পাওয়ার সুযোগ হয়ে ওঠেনি।
রাজবীবের বয়স যখন তিন, তখন সব কিছু হঠাৎই বদলে গেল। হঠাৎ করেই তীব্র জ্বরে আক্রান্ত হয়ে পড়ে ছোট্ট রাজবীর। চিকিৎসক প্রথমে জানান, এটি সাধারণ জ্বর। সঙ্গে কিছু ওষুধও দেন। কিন্তু অবস্থা আরও খারাপ হতে থাকে।
ক্রমাগত রাজবীরের ওজন কমে যাচ্ছিল। ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়ছিল সে। একসময় অবস্থা এতটাই খারাপ হয়ে পড়ে যে, নাক থেকে রক্ত পড়তে শুরু করে। আতঙ্কিত হয়ে পড়েন রাজবীরের বাবা সুব্রত এবং মা নন্দিনী। তাঁরা বুঝতে পারছিলেন না যে, তাঁদের ছেলের কী হয়েছে। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে বেশ কয়েকটি পরীক্ষা করান। রিপোর্টে জানা যায়, রাজবীরের হোডকিনস লিম্ফোমা হয়েছে। অর্থাৎ শরীরের শ্বেত কণিকাতে ক্যানসার বাসা বেঁধেছে।
রাজবীরকে সাহায্য করতে ক্লিক করুন
ছেলের ক্যানসার হয়েছে শুনে কান্নায় ভেঙে পড়েন সুব্রত-নন্দিনী। তাঁদের কাছে ক্যানসার মানেই মৃত্যু। ছেলেকে যত বার তাঁরা দেখছিলেন, তত বার তাঁদের চোখ থেকে জল বেরিয়ে আসছিল। ছেলেকে হারিয়ে ফেলার ভয়ে আতঙ্কিত ছিলেন তাঁরা।
চিকিৎসকরা তাঁদের আশ্বাস দিয়েছিলেন, ঠিকমতো চিকিৎসা করালে তাঁদের ছেলের জীবন বাঁচানো যেতে পারে। নন্দিনী এবং সুব্রত আলোর মুখ দেখতে পেলেন। ভাগ্যই যেন তাঁদের এই সুযোগ করে দিয়েছে। তাঁরা তাঁদের অল্প যা সঞ্চয় ছিল, তা একত্রিত করে এবং আত্মীয়দের থেকে ধার নিয়ে ছেলের কেমোথেরাপি শুরু করলেন।
রাজবীরকে সাহায্য করতে ক্লিক করুন
নন্দিনী কাঁদতে কাঁদতে বললেন, “কেমোর প্রত্যেকটা সেশনের পরে যখন আমি ছেলেকে দেখতাম, কান্নায় বুকটা ফেটে যেত। বাচ্চা ছেলে, কেমো নেওয়ার মতো শরীর ওর নয়। যন্ত্রণায় ও ছটফট করত। এতটুকু ছেলেকে এমন শাস্তি দেওয়ার মানে কী, কেনই বা এমন হচ্ছে, সেটা ওর বোঝার বয়সটুকুও হয়নি।"
কয়েক বছরের এই যন্ত্রণাদায়ক চিকিসার পরে, রাজবীর ক্যানসারকে হারিয়ে দিয়েছিল। তাঁর বাবা-মাও নিশ্চিন্ত ছিলেন কারণ তাঁদের ছেলে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছে। যখন সমস্ত কিছু ঠিক হয়ে যাচ্ছে বলে তাঁরা আশা করেছিলেন, তখনই আর এক দুশ্চিন্তার কালো মেঘ ঘনিয়ে এল তাঁদের জীবনে। পাঁচ মাস আগে, রাজবীরের ফের ক্যানসার ধরা পড়ে।
রাজবীরকে নিজের সাধ্য মতো সাহায্য করুন
এ বার যখন তাঁরা হাসপাতালে গেলেন, চিকিৎসকেরা তাঁদের জানালেন অটোলগাম স্টেম সেল প্রতিস্থাপন করে কেমোথেরাপি করাই এই ক্যানসার থেকে মুক্তির একমাত্র পথ। যার জন্য খরচ হবে ১৫ হাজার ৪২৪ ডলার যা ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ১১ লক্ষ টাকা।
রাজবীরকে সাহায্য করতে ক্লিক করুন
সুব্রত যেন নিজের কানকে বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না। টাকার এই বিপুল অঙ্ক কালো মেঘের মতো তাঁর মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিল। তা হলে ছেলেকে বাঁচানোর সমস্ত চেষ্টাই কি বৃথা যাবে! ছেলেকে যত বার দেখছিলেন, তিনি কান্নায় ফেটে পড়ছিলেন।
বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে, তিনি তাঁর ছেলেকে এই অমানুষিক যন্ত্রণা থেকে মুক্ত করতে যথাসম্ভব চেষ্টা করে গিয়েছেন। কিন্তু আবারও ছেলের সেই একই কষ্ট দেখে নিজেকে ঠিক রাখতে পারছিলেন না তিনি। সেই সঙ্গে চিকিৎসা না করাতে পারা, তাঁকে যেন আরও কষ্ট দিচ্ছিল।
রাজবীরকে সাহায্য করতে ক্লিক করুন
ঘর থেকে বেরিয়ে জীবনে এই প্রথমবার নিজের দারিদ্রকে বার বার অভিশাপ দিচ্ছিলেন সুব্রত। যদি তাঁর ভাল একটা চাকরি থাকত, তিনি তাঁর ছেলের ভাল ভাবে চিকিৎসা করাতে পারতেন। ছেলের চিকিৎসার জন্য তিনি তো সর্বস্বান্ত হয়েই গিয়েছেন। এ বার সমস্ত আশাও শেষ।
কাঁদতে কাঁদতে সুব্রত বলছিলেন, "আমার ছেলে যন্ত্রণা ছাড়া কিচ্ছু জানে না। ক্যানসার আমার ছেলের জীবনকে নরক বানিয়ে দিয়েছে। এখন আমি যে ভাবেই ছেলেকে বাঁচানোর চেষ্টা করি না কেন, আমার কাছে কোনও উপায় নেই। সব কিছু কেমন যেন গুলিয়ে যাচ্ছে। জানি না কোথা থেকে এই বিপুল অঙ্কের টাকা আসবে। দয়া করে আমায় সাহায্য করুন।"
Ketto is a leading crowdfunding platform that supports crowdfunding for cancer, heart and many other treatments.
এটি একটি বিজ্ঞাপন প্রতিবেদন। স্পনসরের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে প্রকাশিত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy