জীবনযাত্রা যত উন্নত হচ্ছে, তার সঙ্গে সঙ্গে ক্যানসারে আক্রান্তের সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। পরিসংখ্যান বলছে সাম্প্রতিক সময়ে পেটের ক্যানসারে আক্রান্তের সংখ্যা এক ধাক্কায় অনেকটা বেড়ে গিয়েছে। কিন্তু কী এই পেটের ক্যানসার?
সম্প্রতি ‘মণিপাল হাসপাতাল’, ঢাকুরিয়ার জেনারেল এবং ল্যাপারোস্কোপিক জিআই এবং অনকোলজি সার্জন, চিকিৎসক শুভায়ু বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মেডিকেল অনকোলজিস্ট, চিকিৎসক আশুতোষ দাগা ক্যানসারের চিকিৎসা নিয়ে একটি আলোচনায় বসেন।
পেটের কোন কোন অংশে ক্যানসার হতে পারে?
চিকিৎসক আশুতোষ দাগা বলেন, “পেটের মধ্যে যে যে অঙ্গ রয়েছে, সেখানে যে ক্যানসারে হয় তাকে পেটের ক্যান্সার বলে। পাকস্থলি, লিভার, গলব্লাডারে যে ক্যানসারে হয় তা কিন্তু পেটের ক্যানসারের মধ্যেই পরে। কিন্তু সব থেকে খারাপ হল অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসার। আবার পেটের ভেতরের বেশিরভাগ জায়গা নিয়ে থাকে অন্ত্র। ছোট বড় দু’রকম অন্ত্রের ক্যানসারই পেটের ক্যানসারের মধ্যে পরে।”
বিশদে জানতে নীচের লিঙ্কে ক্লিক করুন:
‘মণিপাল হাসপাতাল’, ঢাকুরিয়ার জেনারেল এবং ল্যাপারোস্কোপিক জিআই এবং অনকোলজি সার্জন, চিকিৎসক শুভায়ু বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মেডিকেল অনকোলজিস্ট, চিকিৎসক আশুতোষ দাগা ক্যানসারের চিকিৎসা নিয়ে একটি আলোচনায় বসেন
কিন্তু ক্যানসারের সংখ্যা দিন দিন এত বাড়ছে কেন?
এর একটি কারণ যেমন স্থূলতা বৃদ্ধি, ঠিক তেমনই ধূমপান, মদ্যপান বেড়ে যাওয়ার ফলে ক্যানসারের সংখ্যাও বাড়ছে। তা ছাড়াও কিছু সংক্রমণ যেমন, এইচ. পাইলোরি, হেপাটাইটিস বি ও সি-এর কারণে লিভার ক্যানসার হচ্ছে।
চিকিৎসক শুভায়ু বন্দোপাধ্যায়ের কথায়, “ধূমপান, মদ্যপানের প্রবণতা বাড়ছে। শরীরচর্চা মানুষ কম করছে। জাঙ্ক ফুড বেশি খাচ্ছে এবং রিফাইন্ড ওয়েস্টার্ন ডায়েটের দিকে এখন মানুষ বেশি ঝুঁকছে। তার সঙ্গে নানারকম সংক্রমণ তো আছেই।”
তিনি আরও বলেন, “ভারতবর্ষে সাধারণত দেরিতে অর্থাৎ যখন স্টেজ ৩ এবং স্টেজ ৪ পর্যায়ে ক্যানসার পৌঁছে যায়, তখন আমাদের কাছে রোগীরা আসেন। তার একটা কারণ আমার মনে হয় প্রাথমিক উপসর্গ যেমন, গ্যাস, অম্বল বা মলদ্বার দিয়ে রক্ত পড়ছে, ওজন কমছে অথবা পেটে ব্যথা হচ্ছে, লোকেরা বেশি নিজে নিজে কিনেই ওষুধ খাচ্ছে। এই উপসর্গগুলি থেকেও ক্যানসার হতে পারে। আমাদের মধ্যে এখনও এই সচেতনতা আসেনি যে এই সব সমস্যার জন্য কোনও বিশেষজ্ঞকে দেখাতে হবে।”
কিন্তু ক্যানসার আক্রান্ত রোগীকে কেমো না রেডিয়েশন দেওয়া হবে, না অস্ত্রোপচার করা হবে, তা কী ভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়?
চিকিৎসক দাগা জানান, “এর জন্য দক্ষতা লাগে। জ্ঞান প্রয়োজন, কারণ প্রত্যেকটি ক্যানসারের ধরন আলাদা। এর জন্য সেরা পদ্ধতি হল ‘মাল্টিডিসিপ্লিনারি টিউমার বোর্ড মিটিং’। সকল চিকিৎসকরা সেখানে বসেন, রোগীর রিপোর্ট দেখেন, তার পর ডাক্তাররা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে চিকিৎসার পরিকল্পনা ঠিক করেন।”
ক্যান্সার হওয়া মানেই জীবনের শেষ নয়। এই মারণ রোগেরও চিকিৎসা আছে। শুরু থেকেই যদি বিভিন্ন উপসর্গ যেমন পেট ব্যথা, অম্বল, ওজন কমে যাচ্ছে, ঘুম হচ্ছে না, খিদে পাচ্ছে না, মল থেকে রক্ত পড়ছে, এইগুলি উপেক্ষা না করে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেন, সঠিকভাবে চিকিৎসা করান তা হলে ক্যানসারকে হারিয়ে সুস্থ জীবন যাপন সম্ভব।
এই প্রতিবেদনটি ‘মণিপাল হাসপাতাল’-এর সঙ্গে আনন্দবাজার ব্র্যান্ড স্টুডিয়ো দ্বারা যৌথ উদ্যোগে প্রকাশিত।