চিন, জাপান-সহ বিভিন্ন দেশ থেকে সস্তার ইস্পাত আমদানি ঠেকাতে পাঁচ শ্রেণির ইস্পাত পণ্যের উপরে ১২% সুরক্ষা শুল্ক চাপিয়েছে ভারত। তবে বাণিজ্য উপদেষ্টা সংস্থা জিটিআরআই মনে করছে, এর ফলে আমদানি কমলেও দেশের বাজারে ইস্পাতের দাম বাড়বে। লাভ হবে ইস্পাত উৎপাদনকারী বড় সংস্থাগুলির। চাপে পড়বে ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি সংস্থা (এমএসএমই)।
গত কয়েক বছর ধরেই বিভিন্ন দেশ থেকে ইস্পাতের চাদর, পাত-সহ বিভিন্ন পণ্যের আমদানি বাড়ছে ভারতে। তার উপর সম্প্রতি আমেরিকা ইস্পাত-অ্যালুমিনিয়াম ২৫% আমদানি শুল্ক চাপানোয় বহু ভারতের বাজারে সেগুলি রফতানির পরিমাণ দ্রুত বাড়াবে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, এটা হলে দেশীয় শিল্প মার খাবে। তাদের মতে, সেই কারণেই তড়িঘড়ি গতকাল এক সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি করে কেন্দ্র জানিয়েছে, টন প্রতি ৬৭৫ থেকে ৯৬৪ ডলার দামের ইস্পাত পণ্যের আমদানিতে সম্মতি দেওয়া হয়েছে। দাম তার চেয়ে কম হলেই শুল্ক চাপানো হবে। দেশীয় শিল্পকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য এই পদক্ষেপ। কেন্দ্রের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন জেএসডব্লিউ গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান সজ্জন জিন্দল এবং জিন্দল স্টিল অ্যান্ড পাওয়ারের কর্ণধার নবীন জিন্দল।
জিটিআরআই-এর অবশ্য ব্যাখ্যা, কেন্দ্রের শর্তের জেরে ইস্পাত পণ্যের আমদানি অনেকটাই কমবে। এমনকি, কমতে পারে কাঁচামালের আমদানিও। দেশীয় সংস্থাগুলি এই সুবিধাকে কাজে লাগাতে পারে। বাড়াতে পারে দাম। কেন্দ্রের এই ধরনের পদক্ষেপের ইঙ্গিতে গত কয়েক মাস ধরে এমনিতেই ধাতুটির দাম বাড়ছে। জিটিআরআই-এর প্রতিষ্ঠাতা অজয় শ্রীবাস্তব বলেন, ‘‘এই নীতি মেক ইন ইন্ডিয়ার মূল ভাবনার বিরোধী। দেশে ইস্পাতের পণ্য উৎপাদনের ৩৩% করে ছোট সংস্থাগুলি। কিন্তু আমদানি কমার ফলে কাঁচামালের জোগান কমলে এবং খরচ বাড়লে তারা বিপাকে পড়বে। অনেক সংস্থা ঝাঁপ বন্ধ করতেও বাধ্য হতে পারে।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)