Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Adani Group

মন্ত্রকের কমিটিতে আদানির উপদেষ্টা, খোঁচা বিরোধীদের

আদানি গ্রিনের অন্যতম উপদেষ্টা জনার্দন চৌধরিকে নিয়ে বিতর্কের সূত্রপাত। গত সেপ্টেম্বরে পরিবেশ মন্ত্রকের জল বিদ্যুৎ ও নদী উপত্যকা প্রকল্পের মূল্যায়ন কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন তিনি।

An image of Gautam Adani and Narendra Modi

(বাঁ দিকে) গৌতম আদানি এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০২৩ ০৭:৫২
Share: Save:

হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের রিপোর্ট প্রকাশ হওয়ার পর থেকেই আদানি গোষ্ঠীর সঙ্গে মোদী সরকারের ‘সুসম্পর্ক’ নিয়ে ক্রমাগত তোপ দেগে চলেছে বিরোধী দলগুলি। এ বার কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রকের বিশেষজ্ঞ কমিটিতে আদানি গ্রিন এনার্জির এক উপদেষ্টার অন্তর্ভুক্তি নিয়ে রাজনৈতিক তরজা শুরু হল। আদানিদের প্রকল্পে সবুজ সঙ্কেত দেওয়ার প্রেক্ষিতে ‘স্বার্থের সংঘাতের’ অভিযোগ তুললেন বিরোধীরা। এমনকী, উঠল তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের প্রসঙ্গও। কটাক্ষ করেছেন মহুয়া নিজেও।

আদানি গ্রিনের অন্যতম উপদেষ্টা জনার্দন চৌধরিকে নিয়ে বিতর্কের সূত্রপাত। গত সেপ্টেম্বরে পরিবেশ মন্ত্রকের জল বিদ্যুৎ ও নদী উপত্যকা প্রকল্পের মূল্যায়ন কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন তিনি। এই কমিটির সাত অ-প্রাতিষ্ঠানিক সদস্যের মধ্যে তিনি অন্যতম। গত ১৭-১৮ অক্টোবর পুনর্গঠিত সেই কমিটির প্রথম বৈঠকেই মহারাষ্ট্রের সাতারায় আদানি গ্রিনের ১৫০০ মেগাওয়াটের প্রস্তাবিত পাম্পিং স্টোরেজ প্রকল্প নিয়ে আলোচনা হয়। মন্ত্রকের ‘পরিবেশ’ পোর্টালে বৈঠকের কার্যবিবরণীতে এই সংক্রান্ত তথ্য রয়েছে।

চৌধরি অবশ্য বিষয়টির ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। সংবাদ মাধ্যমের কাছে তাঁর দাবি, ১৭ অক্টোবর বৈঠকে যোগ দিলেও আদানিদের প্রকল্প সংক্রান্ত আলোচনা থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন তিনি। তাঁর আরও দাবি, তিনি আদানি গ্রিনের উপদেষ্টা হলেও স্থায়ী কর্মী নন। মন্ত্রকের কমিটিতে নিযুক্ত হওয়ার আগে বেসরকারি সংস্থাটিতে নিজের ভূমিকার কথাও সরকারকে জানিয়েছিলেন। চৌধরি ৩৬ বছর এনএইচপিসিতে বিভিন্ন পদে দায়িত্ব সামলেছেন। ২০২০ সালের মার্চে অবসর গ্রহণের সময়ে তিনি সংস্থাটির ডিরেক্টর (টেকনিক্যাল) পদে ছিলেন। ২০২২ সালের এপ্রিলে আদানি গ্রিনের উপদেষ্টার ভূমিকায় যোগ দেন চৌধরি।

সংশ্লিষ্ট মহলের ব্যাখ্যা, পরিবেশ মন্ত্রকের বিশেষজ্ঞ কমিটি পরিবেশের উপরে বিভিন্ন প্রস্তাবিত প্রকল্পের সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে আলোচনা করে। তাদের সুপারিশের ভিত্তিতে মন্ত্রক প্রস্তাবে সম্মতি অথবা খারিজ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেয়। চাপায় প্রয়োজনীয় শর্ত। ফলে সেই কমিটিতেই ‘সম্ভাব্য সুবিধাভোগী’ সংস্থার উপদেষ্টার অন্তর্ভুক্তি নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক।

এই নিয়ে নাম না করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে কটাক্ষ করেছে কংগ্রেস। কেরল কংগ্রেস তাদের এক্স অ্যাকাউন্টে লিখেছে, ‘‘আদানির প্রধান সেবক আদানি গোষ্ঠীর কর্মীকে পরিবেশ মন্ত্রকের বিশেষজ্ঞ কমিটিতে নিয়োগ করেছেন। যে কমিটি আদানিদের ১০,৩০০ মেগাওয়াটের ছ’টি প্রকল্প নিয়ে আলোচনা করছে।’’ তৃণমূল সাংসদ মহুয়ার প্রসঙ্গ ইঙ্গিত করে শিবসেনা (উদ্ধব) নেত্রী তথা রাজ্যসভার সদস্য প্রিয়ঙ্কা চতুর্বেদীর মন্তব্য, ‘‘দয়া করে স্বার্থের সংঘাতের প্রসঙ্গ তুলবেন না। সেটা সুবিধাভোগী বন্ধুকে বাদ দিয়ে অন্যান্যদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।... কোনও সংসদ সদস্য তাঁর ই-মেল অন্যকে দিলে যদি জাতীয় নিরাপত্তা ভঙ্গ এবং স্বার্থের সংঘাতের প্রশ্নে এথিক্স কমিটি তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করে, তা হলে একটি বেসরকারি সংস্থার উপদেষ্টাকে কী ভাবে পরিবেশ মন্ত্রকের বিশেষজ্ঞ কমিটিতে নিয়োগ করা যায়? তখন কি স্বার্থের সংঘাতের প্রশ্ন আসে না?’’ মুখ খুলেছেন মহুয়া নিজেও। তাঁর কথায়, ‘‘মোদীজির পরিবেশ মন্ত্রক আদানিদের কর্মী জনার্দন চৌধরিকে তাদের উপদেষ্টা কমিটিতে নিয়োগ করেছে। সেই কমিটি আদানিদের ছ’টি প্রকল্প নিয়ে আলোচনা চালাচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE