Advertisement
২৫ মার্চ ২০২৩
Amazon

অ্যামাজ়নের লগ্নি, ক্ষোভ ব্যবসায়ীদের

সংস্থা জানিয়েছে, এ দেশে ১০০ শহরে ডিজিটাল কেন্দ্র খুলবে তারা।

দুই ছবি: নয়াদিল্লিতে বুধবার অ্যামাজ়ন কর্ণধার জেফ বেজোস। রাজধানীতে তাঁরই সফরের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ব্যবসায়ীদের। রয়টার্স

দুই ছবি: নয়াদিল্লিতে বুধবার অ্যামাজ়ন কর্ণধার জেফ বেজোস। রাজধানীতে তাঁরই সফরের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ব্যবসায়ীদের। রয়টার্স

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০২০ ০৪:৪৫
Share: Save:

বিক্ষোভে বাঁধ দিতেই কি আরও ১০০ কোটি ডলার (প্রায় ৭১ হাজার কোটি টাকা) লগ্নির প্রতিশ্রুতি? ই-কমার্স দৈত্য অ্যামাজ়নের কর্ণধার জেফ বেজোসের লগ্নি পরিকল্পনা ঘোষণার পরে এই প্রশ্ন দিনভর ঘুরপাক খেল দেশে। এর আগে ভারতে এসে পাঁচ বছরে ২০০ কোটি ডলার লগ্নির কথা বলেছিলেন তিনি।

Advertisement

অ্যামাজ়নের নেট-বাজারের দরজা ছোট-মাঝারি ব্যবসায়ীদের সামনে কী ভাবে আরও খুলে দেওয়া যায়, তার রাস্তা খুঁজতে বুধবার দিল্লিতে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল মার্কিন ই-কমার্স বহুজাতিকটি। সেখানে তার প্রতিষ্ঠাতা বেজোস বলেন, ‘‘ব্যবসায়ীদের উন্নত প্রযুক্তির সুবিধা দিতে পাঁচ বছরে ভারতে আরও ১০০ কোটি ডলার লগ্নি করবে অ্যামাজ়ন।’’ সংস্থা জানিয়েছে, এ দেশে ১০০ শহরে ডিজিটাল কেন্দ্র খুলবে তারা। তাদের বিশ্বাস, ওই বাড়তি লগ্নির দৌলতে এক কোটি নতুন ব্যবসা পা রাখতে পারবে নেট-বাজারে। ২০২৫ সালের মধ্যে ভারত থেকে রফতানি হবে অন্তত ১০০০ কোটি ডলারের পণ্য।

যদিও বেজোসের ভারত সফরের পুরো সময়েই বিক্ষোভ বহাল রেখেছে ব্যবসায়ী সংগঠন সিএআইটি। তাদের দাবি, সারা দেশের ৩০০ শহরে সফরের বিরোধিতা করছেন অন্তত ৫ লক্ষ ব্যবসায়ী। প্রতিবাদে শামিল প্রায় ৫০০০ ব্যবসায়ী সংগঠন। ইট-কাঠ-পাথরের দোকান চালিয়ে সংসারের জোয়াল টানা ব্যবসায়ীদের বড় অংশের অভিযোগ, অ্যামাজ়ন যে ভাবে বাজার ধরতে নিয়মের তোয়াক্কা না-করে বিপুল ছাড় দেয়, তাতে তাঁদের ব্যবসা লাটে ওঠার জোগাড়। এঁদের প্রশ্ন, বিদেশি লগ্নির নিয়মে এ দেশে অ্যামাজ়নের থাকার কথা নেট বাজার হিসেবে। কাজ দরদাম, বেচা-কেনার জন্য ক্রেতা-বিক্রেতার ‘দেখা করানো।’ কিন্তু বিপুল ছাড় দিয়ে বাজার দখলের চেষ্টা কার্যত নিয়ম ভাঙা, অভিযোগ তাঁদের। তাই সিএআইটি-র সাধারণ সম্পাদক প্রবীণ খান্ডেলওয়ালের দাবি, এই ১০০ কোটি ডলারও আসলে খরচ হবে ছাড় দিতেই।

বিক্ষোভের আশঙ্কা ছিল বলেই, বেজোসের সফরকে লুকিয়ে রেখেছিল অ্যামজ়ন। বেজোস নিজে ঘোষণা না-করা পর্যন্ত সংস্থা টুঁ শব্দটি করেনি। আমন্ত্রণপত্রে নাম ছাপানো দূর, বিশ্বের ধনীতম মানুষটি মঞ্চে ওঠার আগের মুহূর্ত পর্যন্ত বলা হয়নি তিনি আসছেন। অনুষ্ঠানস্থলের চারপাশে নিরাপত্তাও ছিল আটোসাঁটো।

Advertisement

মঞ্চে অবশ্য ভারত এবং তার ছোট-মাঝারি ব্যবসায়ীদের অনন্ত সম্ভাবনার কথা ফলাও করে বলেছেন বেজোস। জানিয়েছেন, এ দেশে ছোট ব্যবসায়ীরা যে ভাবে প্রযুক্তিকে আঁকড়ে ধরতে পারেন, তাতে তিনি মুগ্ধ। ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন, আরও বহু কারণের পাশাপাশি এই গুণের জন্যও ভারতের শতক হিসেবেই চিহ্নিত হবে একবিংশ শতাব্দী। সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ জোট হবে ভারত ও আমেরিকার হাত-ধরাধরি। মন জয়ের চেষ্টায় মহাত্মা গাঁধীর সমাধিতে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। আকাশি জামার উপরে পরেছেন খাঁটি ভারতীয় গাঢ় নীল হাফ হাতা জ্যাকেট। ছোটবেলার গল্প থেকে ব্যবসা বড় করার চাবিকাঠি— সব কথার পরে মঞ্চ ছেড়েছেনও জোড় হাতে নমস্কারের পরে। পৃথিবীকে দূষণ থেকে বাঁচাতে শুনিয়েছেন বহু দূরের সেই পরিকল্পনার কথা, যখন বড় শিল্পের অধিকাংশই হবে মহাশূন্যে! বলেছেন, তার খরচ কমানোই এই মুহূর্তে তাঁর পাখির চোখ।

তবে অনুষ্ঠানের তাল সামান্য কেটেছে, যখন বেজোসের পরে মঞ্চে উঠেই ইনফোসিসের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা এন আর নারায়ণমূর্তি বলেছেন, দেড় ঘণ্টা দেরিতে অনুষ্ঠান শুরুর কারণে ২০ মিনিটের বদলে স্রেফ পাঁচ মিনিট বলবেন তিনি। কারণ, দেরিতে তিনি অভ্যস্তই নন!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.