Advertisement
E-Paper

সেনসেক্স পড়ল ৫৬১, মার্কিন ঝড়ে বেসামাল বিশ্ব বাজার

অর্থনীতি যখন পুরোদস্তুর মুখ তোলার ইঙ্গিত দিতে শুরু করেছে, ঠিক তখনই আমেরিকায় মুখ থুবড়ে পড়ল শেয়ার বাজার। আর তার ধাক্কায় টালমাটাল সারা বিশ্বের বাজারই। ব্যতিক্রম নয় ভারতও।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৩:৩১
সোমবার গভীর রাতে (ভারতীয় সময় অনুযায়ী) মার্কিন মুলুকে ডাও সূচকের রেকর্ড পতন। সাক্ষী অসহায় ব্রোকার। নিউ ইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জে

সোমবার গভীর রাতে (ভারতীয় সময় অনুযায়ী) মার্কিন মুলুকে ডাও সূচকের রেকর্ড পতন। সাক্ষী অসহায় ব্রোকার। নিউ ইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জে

অর্থনীতি যখন পুরোদস্তুর মুখ তোলার ইঙ্গিত দিতে শুরু করেছে, ঠিক তখনই আমেরিকায় মুখ থুবড়ে পড়ল শেয়ার বাজার। আর তার ধাক্কায় টালমাটাল সারা বিশ্বের বাজারই। ব্যতিক্রম নয় ভারতও।

সোমবার ভারতীয় সময় অনুযায়ী গভীর রাতে রেকর্ড পতনের সাক্ষী থেকেছে আমেরিকার শেয়ার সূচক ডাও-জোন্স। এক সময় তা ১,৮০০ পয়েন্ট পড়ে কিছুটা সামলেছে ঠিকই। কিন্তু তাতেও দিনের শেষে খুইয়েছে ১,১৭৫ অঙ্ক। মঙ্গলবার ভারতে সেনসেক্সও যেন তারই প্রতিচ্ছবি। দিনের শুরুতে তা পড়ে গিয়েছিল ১,২৭৫ পয়েন্ট। কিন্তু পরে কিছুটা সামলে সেই পতন আটকানো গিয়েছে ৫৬১.২২ অঙ্কে। বাজার বন্ধের সময়ে সেনসেক্স ছিল ৩৪,১৯৫.৯৪ অঙ্কে। নিফ্‌টি থামে ১০,৪৯৮.৩০ পয়েন্টে।

সুখবরেই বিপত্তি

• মুখ তুলছে মার্কিন অর্থনীতি। কর্মসংস্থান বাড়ছে। চাঙ্গা হচ্ছে বৃদ্ধি। এই সুখবরই টেনে নামিয়েছে আমেরিকার শেয়ার বাজারকে!

• এত দিন অর্থনীতি চাঙ্গা করতে প্রথমে সুদ কম রাখা হয়েছিল। তার পরেও ঢিমে তালে তা বাড়াচ্ছিল মার্কিন শীর্ষ ব্যাঙ্ক ফেডারেল রিজার্ভ। লগ্নিকারীদের আশঙ্কা, এ বার সেই গতি বাড়বে

• ট্রাম্পের দেশে মূল্যবৃদ্ধির হার চড়ারও সম্ভাবনা দেখছেন অনেকে। আশঙ্কা, তা সামাল দিতে সুদ বাড়ানোয় আরও কড়া হবে ফেড রিজার্ভ

• সুদ বৃদ্ধির সম্ভাবনার এই সময়ে বাড়ছে বন্ডের চাহিদা। তাই চড়া বাজারে শেয়ার বেচে পাওয়া মুনাফার একাংশ সেখানে নিয়ে যাচ্ছেন লগ্নিকারীরা

• অস্থির বাজারে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে লগ্নি বাড়ছে সোনা ও জাপানি মুদ্রা ইয়েনে

• এই ঘটনা ঘটছে সারা বিশ্বে। ভারতে গত দু’দিনে বিদেশি আর্থিক সংস্থাগুলির ৩,৫২৬ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রির মূল কারণও এটি

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু দুই সূচকে নয়, বাজারের পতনে বিস্তর মিল ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমেরিকা ও নরেন্দ্র মোদীর ভারতে। কারণ হিসেবে তাঁদের ব্যাখ্যা, দু’দেশেই অর্থনীতির ইঞ্জিন যখন সে ভাবে দৌড়চ্ছিল না, তখন শেয়ার বাজার উঠছিল রকেট গতিতে। একে দু’দেশেই অর্থনীতির দ্রুত ঘুরে দাঁড়ানো নিয়ে আশাবাদী ছিলেন লগ্নিকারীরা। তার উপরে মার্কিন মুলুকে সেই উত্থানে ইন্ধন জুগিয়েছিল কম সুদের জমানা। তাঁদের মতে, এ ভাবে দৌড়ে বাজার এমন উচ্চতায় পৌঁছেছিল যে, অবধারিত ছিল সংশোধন।

আরও পড়ুন: বাজেটে বাংলার রেলভাগ্য তলানিতে

আর সেই কারণেই এখন আমেরিকায় সামান্য কিছুতেই ভয়ের কারণ দেখছেন লগ্নিকারীরা। মুনাফা বাড়ানোর লোভের জায়গা নিয়েছে তা খোয়ানোর ভয়। তাই তাঁরা টাকা সরিয়ে নিচ্ছেন সোনা, ইয়েনের মতো অন্যখানে। আর মার্কিন মুলুকে এই ধসের প্রভাব পড়ছে ভারত, ইউরোপ, এশিয়া সমেত প্রায় সর্বত্র। বিশ্বায়নের জমানায় যা স্বাভাবিক।

চোখ আটকে কম্পিউটারের পর্দায়। কিন্তু মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে এক রাশ দুশ্চিন্তা। মঙ্গলবার মুম্বইয়ে।

তা-ও এ দিন ভারতের বাজারকে আরও বড় পতনের হাত থেকে বাঁচিয়েছে দেশীয় আর্থিক সংস্থাগুলির শেয়ার কেনা। বিদেশি আর্থিক সংস্থাগুলি গত দু’দিনে যেখানে ৩,৫২৬ কোটির শেয়ার বেচেছে, সেখানে ভারতীয় আর্থিক সংস্থাগুলি কিনেছে ১,৬৯৯ কোটি টাকার।

ভারতে কেন?

• বিশ্ব বাজারে পতনের ধাক্কা

• লাফিয়ে বেড়ে চুড়োয় পৌঁছনো বাজারে কিছুটা সংশোধন প্রত্যাশিতই ছিল

• এ বার বাজেটে কর বসেছে দীর্ঘ মেয়াদি মূলধনী লাভে। কর চেপেছে ইকুইটি ফান্ডের ডিভিডেন্ড বণ্টনেও। এতে খুশি নন অনেক লগ্নিকারী

• রাজকোষ ঘাটতিকে লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে বাঁধতে পারেনি কেন্দ্র। আশঙ্কা, তার জেরে মূল্যবৃদ্ধির মাথাচাড়া দেওয়া সামাল দিতে এখন আর সুদ কমানোর সম্ভাবনা কম রিজার্ভ ব্যাঙ্কেরও

বিশেষজ্ঞ অজিত দে বলেন, ‘‘বাজার তেজি থাকায় হাতের শেয়ার বেচে মুনাফার টাকা তুলে তা বন্ডে ঢালছেন বিনিয়োগকারীরা। বাজারে মন্দা থাকলে সেই সুযোগ তাঁরা পেতেন না।’’ স্টুয়ার্ট সিকিউরিটিজের চেয়ারম্যান কমল পারেখ অবশ্য মনে করেন, ‘‘বাজারের ঝুঁকি কমাতে এই পতন অত্যন্ত জরুরি ছিল।’’ তাঁর বিশ্বাস, ‘‘বাজার ফের বাড়বে। তবে তা স্বাভাবিক গতিতে হলেই মঙ্গল।’’

Sensex Low Global Sell-off US Nifty Share Market সেনসেক্স
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy