মোদী সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনকে চিঠি দিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং অর্থ দফতরের মুখ্য উপদেষ্টা অমিত মিত্র। ফাইল ছবি।
চলতি বছরে জি২০ সম্মেলনের পৌরোহিত্য করছে ভারত। দেশের বিভিন্ন শহরেই বসছে তার বৈঠক। কলকাতায় যা শুরু হয়েছে সোমবার। সম্মেলনের মূল বিষয়, সমাজের সব স্তরের মানুষকে আর্থিক পরিষেবা দিয়ে উন্নয়নে শামিল করা। কিন্তু মোদী সরকার সেই লক্ষ্যের উল্টো দিকে হাঁটছে বলে অভিযোগ তুলে এ দিনই অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনকে চিঠি দিলেন রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী এবং অর্থ দফতরের মুখ্য উপদেষ্টা অমিত মিত্র। বললেন, গত এপ্রিল-সেপ্টেম্বরে শুধু পশ্চিমবঙ্গেই অন্তত ৪০,০০০ তাঁতি ও কারিগরের ঋণের আবেদন খারিজ করেছে ব্যাঙ্কগুলি। দেশে সংখ্যাটা হতে পারে পাঁচ-দশ লক্ষ। এই ঘটনা জি২০ বৈঠকের মূল উদ্দেশ্যের পরিপন্থী বলেও দাবি রাজ্যের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রীর।
ক্ষুব্ধ অমিত নির্মলাকে লিখেছেন, ‘‘আপনার সরকারের সব শ্রেণির মানুষের দরজায় আর্থিক পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া নিয়ে বড় বড় ঘোষণা সত্ত্বেও আমাদের রাজ্যে হাজার হাজার দক্ষ এবং উদ্ভাবনী ক্ষমতাসম্পন্ন তাঁতি এবং কারিগরকে ব্যাঙ্ক ঋণ দিতে অস্বীকার করেছে। ভারতের পৌরোহিত্যে যখন জি২০ সম্মেলন হচ্ছে, তখন এই বিষয়টি আরও বেশি প্রাসঙ্গিক। কারণ, জি২০ দেশগুলির বিশ্ব জোড়া কর্মসূচির মূল লক্ষ্য ক্ষুদ্র-ছোট-মাঝারি সংস্থাগুলির দরজায় আর্থিক পরিষেবা পৌঁছনো।’’
চিঠিতে তাঁর দাবি, এপ্রিল-সেপ্টেম্বরে রাজ্যের ১৫,২৯৮ জন তাঁতি ঋণ চেয়েছিলেন। কিন্তু ১০,১০৮টি আবেদনই (৬৬%) খারিজ হয়। কারিগরদের ৪৮,১৫৩টি আবেদনের মধ্যে প্রত্যাখ্যাত ২৯,৬৫৬টি (৬২%)। অথচ ব্যাঙ্কের নির্দেশ মতো সবগুলিই জেলা শিল্প কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে পরীক্ষিত। আবেদনকারীদের তাঁতি বা কারিগরের ক্রেডিট কার্ডও রয়েছে। অমিত জানিয়েছেন, সম্প্রতি রাজ্য স্তরের ব্যাঙ্কার কমিটির বৈঠকে জানা গিয়েছে ঋণ বণ্টনে কেন্দ্র নথির নিয়মে কড়াকড়ি এনে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। ফলে তাঁতি, কারিগরদের মতো ক্ষুদ্র শিল্পীদের জন্যও প্যান-সহ বিভিন্ন নথি বাধ্যতামূলক হয়েছে। একই ধরনের বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। তাই ধার দেওয়া যাচ্ছে না তাঁদের। এমন কড়া বিধি আর্থিক উন্নয়নে শামিল হতে চাওয়া ক্ষুদ্র উদ্যোগীদের জীবন ও জীবিকার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয় বলে দাবি করে পুরনো নিয়ম ফিরিয়ে আনার আর্জি জানিয়েছেন তিনি।
অমিত বলেছেন, সম্প্রতি দিল্লিতে এক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর সামনে বিষয়টি তুলে ধরেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যসচিব। নির্মলার উদ্দেশে তাঁর বক্তব্য, ‘‘একান্ত আর্জি, আপনি শীর্ষ ব্যাঙ্ক এবং ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্প দফতরের সঙ্গে কথা বলে বিজ্ঞপ্তি সংশোধনের ব্যবস্থা করুন। যাতে তাঁতিও কারিগরেরা আগের মতোই নিজস্ব হলফনামা দিয়ে ঋণ চাইতে পারেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy